সম্প্রীতির জমিনে শকুনের চোখ

আগের সংবাদ

ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান এখন ‘মেটা’

পরের সংবাদ

জেতা ম্যাচ হাতছাড়া করে বিশ্বকাপ শেষ’ টাইগারদের

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিশ্বকাপের মূল পর্বে গত চৌদ্দ বছরে কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। আর তাই একটি জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে পুরো জাতি। সেই না পাওয়া জয়ের লক্ষ্যে গতকাল সুপার টুয়েলভে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলতে নামে টাইগাররা। তবে জয়ের খুব কাছে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের।
ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৪২ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই রান তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রানে থামে বাংলাদেশ। ফলে দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র ৩ রানের জয় তুলে নিতে সমর্থ হয়। অথচ বেশির ভাগ সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশের হাতে। সেখানে শেষ মুহূর্তে গিয়ে হারতে হয় তাদের। গতকাল বাংলাদেশের হয়ে জ্বলে ওঠেন লিটন দাস। তিনি ৪৩ বল খেলে ৪৪ রান করেন। তার ব্যাটিংয়ের কারণেই জয়ের স্বপ্ন দেখছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। কিন্তু তিনি শেষ মুহূর্তে আউট হলে ফের হারের তিক্ত স্বাদ পেতে হয় বাংলাদেশকে। এর মাধ্যমে সুপার টুয়েলভে টানা তিনটি ম্যাচে হারায় বাংলাদেশের সেমির স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। এর আগে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে মাত্র ১ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবারো ব্যাপারটি যেন অনেকটা সে রকমই হলো।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে বাংলাদেশ সর্বশেষ জয় পেয়েছিল ২০০৭ সালে এ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই। মাঝে চৌদ্দ বছর পার হয়ে গেলেও বিশ্বকাপের মূল পর্বে জয় পায়নি তারা। তবে ২০১৪ ও ২০১৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ও এবারের বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে জয় পেয়েছে টাইগাররা। কিন্তু মূল পর্বে আরেকটি জয় পাওয়ার যে আক্ষেপ রয়েছে, সেটি রয়েই গেল।
ম্যাচে টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এদিন দলে দুটি পরিবর্তন

আনেন তিনি। দলে ফেরেন সৌম্য সরকার ও তাসকিন আহমেদ।
বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ১৪২ রান করার মাধ্যমে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনি¤œ রান করেছে ক্যারিবিয়ানরা। বিশ্বকাপে এর আগে আরো দুবার মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমবার ২০০৭ সালে। সেবার টাইগারদের বিপক্ষে ১৬৪ রান করেছিল তারা। এই রান তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়বার দুই দল মুখোমুখি হয় ২০১৪ সালে। সেবার টাইগারদের বিপক্ষে ক্যারিবিয়ানরা করেছিল ১৭১ রান। জবাবে বাংলাদেশ ৯৮ রানে আউট হয়েছিল।
গতকালের ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে নাঈম শেখের সঙ্গে ওপেনিং করতে আসেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু তিনি তার ইনিংসটি লম্বা করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ১২ ও দলীয় ২১ রানের সময় রাসেলের বলে ক্যাচ আউট হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যান নাঈম। এই বলে তিনি সিঙ্গেল নিয়ে সাকিবকে স্ট্রাইকে পাঠান। কিন্তু পরের বলেই সাকিব সেই রাসেলের বলেই ক্যাচ আউট হন।
তবে গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দের ফিল্ডিং ছিল চোখে পড়ার মতো। পাওয়ার প্লেতে কমপক্ষে পাঁচটি নিশ্চিত চার আটকে দেন তারা। ফলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা দেখেশুনে ব্যাট চালালেও ক্যারিবিয়ানদের ফিল্ডিংয়ের কারণে পাওয়ার প্লেতে বড় সংগ্রহ তুলতে পারেননি। উল্টো ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারের সময় জেসন হোল্ডারের বলে ১৭ রান করে বোল্ড আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান নাঈম। তখন দলের রান ২৯। এরপর ব্যাটিংয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। তবে সৌম্যও ১৭ রান করে আকিল হোসেনের বলে দলীয় ৬০ রানের সময় আউট হন। এরপর ক্রিজে আসা মুশফিক মাত্র ৮ রান করে সুইপ শট খেলতে গিয়ে রবি রামপালের বলে বোল্ড হন। তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯০। এরপর ব্যাটিংয়ে নামেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি লিটনকে নিয়ে জয়ের জন্য লড়তে থাকেন। দলীয় ১৩০ রানের মাথায় আউট হন লিটন। মাহমুদউল্লাহ শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে ২৪ বল খেলে ৩১ রান করলেও দলকে জয় এনে দিতে ব্যর্থ হন।
এদিকে টসে জিতে বল হাতে বেশ দাপটের সঙ্গেই দলের শুরুটা করেন মেহেদি হাসান। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার গেইল ও লুইস বেশ সাবধানেই শুরুটা করেন। কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমানের প্রথম বলে ক্রিস গেইল রান আউট থেকে বেঁচে যান। ওই ওভারেই ভাঙে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১২ রানের উদ্বোধনী জুটি। ওভারের শেষ বলে স্কয়ার লেগে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন লুইস। তিনি ৯ বলে ১ চারে ৬ রান করেন। এরপর ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি গেইল। মাত্র ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। মেহেদী হাসান তার দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে পান সাফল্য। এরপর মেহেদী তার তৃতীয় ওভারে ফেরালেন শিমরন হেটমায়ারকে। সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে তাকে ৯ রানে লং অফে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানান এ স্পিনার।
এরপর আন্দ্রে রাসেলকে পা দিয়ে রান আউট করেন তাসকিন আহমেদ। নন স্ট্রাইকে কাইরন পোলার্ডের জায়গায় নেমেই আউট হন ক্যারিবিয়ান এ অলরাউন্ডার। চেজের স্ট্রেট ড্রাইভে বল তাসকিনের পায়ে লেগে স্টাম্পে আঘাত করে। তখন লাইনের বাইরে ছিলেন রাসেল। কোনো বল না খেলেই আউট হন তিনি। আর ১৬ বলে ৮ রান করে রিটায়ার্ড হার্ট নেন উইন্ডিজ অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। তাসকিন আহমেদের বলে সিঙ্গেল নিয়ে অসুস্থতায় মাঠ ছাড়েন তিনি। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালে বড় সংগ্রহ তুলতে ব্যর্থ হয় উইন্ডিজরা। টাইগারদের পক্ষে মেহেদী ও শরিফুল ২টি করে উইকেট শিকার করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়