যুক্তরাষ্ট্রে অগ্নিকাণ্ডে এক বাংলাদেশি কিশোরীর মৃত্যু

আগের সংবাদ

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা : সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে মেরিনা ১০ পৌরসভায়ও প্রার্থী চূড়ান্ত

পরের সংবাদ

জাতিসংঘ-বাংলাদেশ চুক্তি শনিবার : ভাসানচরের বিশ্ব স্বীকৃতি মিলছে

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় যুক্ত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘ। এলক্ষ্যে আগামী শনিবার চূড়ান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হবে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহসীন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে আমি এবং জাতিসংঘের শরণার্থী-বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) হেড এমওইউতে স্বাক্ষর করবেন। শনিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে এ চুক্তি করা হবে।
এই চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ভাসানচরে মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে যাচ্ছে জাতিসংঘ। নাম না প্রকাশ করার শর্তে জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেন, মঙ্গলবার এ বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য সব বিষয়ে সমঝোতায় এসেছে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ভাসানচর নিয়ে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের দূরত্ব মিটে গেছে, তা বলা যাবে না। বিষয়টিতে অনেক কিছুতে আপস করা হয়েছে। বিষয়টি ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তারাই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে পারবেন। কী ধরনের আপস হয়েছে জানতে চাইলে উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, যেমন- রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতা চেয়েছে জাতিসংঘ। এখানে শুধু জরুরি ক্ষেত্রে, অর্থাৎ কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ল, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলোতে বাংলাদেশ ছাড় দেবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ভাসানচরে যাওয়া নিয়ে কিছু দিন ধরে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছিল জাতিসংঘের। এ আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতা, শিক্ষা, কর্মসংস্থানের সুযোগ, নির্বাচনের সুযোগসহ বিভিন্ন শর্ত দিয়েছে জাতিসংঘ। সেই সঙ্গে ভাসানচরের মতো কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরেরও আবদার জুড়ে দিয়েছে তারা। কিন্তু এসব শর্তের মধ্যে কিছু শর্ত রয়েছে, যেগুলো আংশিক মেনেছে বাংলাদেশ। আর কিছু শর্ত রয়েছে, যা কোনোভাবেই মানেনি।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষের দিকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জাতিসংঘের সঙ্গে একটি খসড়া চুক্তি করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রত্যাশা ছিল, আগস্টের শুরুতে চুক্তি চূড়ান্ত হলে সেপ্টেম্বর থেকে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করবে জাতিসংঘ। তবে কিছুটা বিলম্ব হলেও অবশেষে ভাসানচরে যুক্ত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘ।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো থেকে শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তর নিয়ে জাতিসংঘের আপত্তি ছিল। তবে গত ১৭ মার্চ তিন দিনের সফরে ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের দেখতে যান জাতিসংঘের ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। ভাসানচর ঘুরে আসা জাতিসংঘের কর্মকর্তারা প্রায় মাসখানেক পর ভাসানচর নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানের কথা জানান। অর্থাৎ ভাসানচরে মানবিক সহায়তায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে সায় দেয় সংস্থাটি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের প্রথম দেখতে যায় ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) একটি প্রতিনিধিদল। সর্বশেষ চলতি মাসের শুরুর দিকে ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের দেখতে যান ঢাকায় নিযুক্ত ১০ বিদেশি রাষ্ট্রদূত। সফর শেষে দাতা গোষ্ঠীদের এসব কূটনীতিকরাও ভাসানচর নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানের কথা জানান।
কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে অধিকতর নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয় করে ভাসানচর প্রস্তুত করে বাংলাদেশ সরকার। বছর দুয়েক আগেও ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা সম্ভব ছিল না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষেধাজ্ঞার কারণে। তবে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে জাতিসংঘের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। এ পর্যন্ত ছয় দফায় ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হয়েছে।

//////////////////////////////////////////////////////////

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়