ম্যান ইউতে ফিরলেন রোনালদো

আগের সংবাদ

চেনা উইকেটে অচেনা নিউজিল্যান্ড

পরের সংবাদ

স্বপ্ন হারিয়েছে গহিন জলে : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রলারডুবি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : আরিফ বিল্লাহ (২০) পরিবারের বড় ছেলে ছিলেন। স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। পরিবারের স্বপ্নও ছিল আরিফকে ঘিরে। তাই এ বছর ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ট্রলার ডুবির ঘটনা আরিফের পরিবারের স্বপ্নকেও ডুবিয়ে দিল। প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, আরিফকে জাপটে ধরে অনেকেই বাঁচতে চেয়েছিলেন। শেষে তার জীবনই যায় সবার আগে। আরিফের বাড়ি উপজেলার চম্পকনগর গ্রামে। বাবা জহিরুল হক ভূঁইয়া আর মা পারভীন ভূঁইয়া সৌদি আরবপ্রবাসী। ছেলের মৃত্যুর খবরে দেশে ফিরে আসছেন তারা। আজ রবিবার চম্পকনগর নৌকাঘাটসংলগ্ন স্থানীয় মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আরিফের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
স্ত্রী ফরিদা আক্তার (৪০) ও মেয়ে মুন্নিকে (৮) বাড়ির পাশের খেয়াঘাট থেকে বিকালে ট্রলারে তুলে দিয়েছিলেন স্বামী জজ মিয়া। রাতে আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে শনিবার সকালে ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল তাদের। কিন্তু সেই সুযোগ আর আসেনি। নিথর দেহে বাড়ি ফিরেছেন মা ও মেয়ে। বাড়ির পাশে কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে তাদের। স্ত্রী আর মেয়েকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন জজ মিয়া।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ট্রলারে প্রায় প্রতিদিন ৭০-৮০ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। শুক্রবার ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে অনেক চিকিৎসক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসেন। ফলে এ দিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষও চিকিৎসা নিতে আসেন। যে কারণে ট্রলারের ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী নেয়া হয়েছিল। যে কারণে কয়েকটি মরদেহের সঙ্গে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনও আটকে ছিল। কারো কারো সঙ্গে থাকা ব্যাগে ওষুধপত্রও ছিল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শুক্রবারের ট্রলারডুবির ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত ২২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেনসের কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, সর্বশেষ ২২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জানান, নিখোঁজ থাকার তথ্য থাকলে তাদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে। ডুবে যাওয়া ট্রলারের ভেতরে কোনো মরদেহ নেই বলেও তিনি জানান।
তবে স্থানীয়দের দাবি, এখনো

অন্তত ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাদের স্বজনরা দাবি করেছেন। তারা জানান, ট্রলারটি গভীর খালে ডুবলেও বর্ষাকালে সেখানকার বিল ও নদী মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। ফলে মরদেহ ভেসে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন স্বজনরা।
দিনভর খোঁজাখুঁজির পর গতকাল বিকালে জেলা প্রশাসন উদ্ধার কাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয় যদি কারো স্বজন নিখোঁজ থাকে তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। কিন্তু এ আবেদনে কোনো সাড়া না দেয়ায় প্রশাসন ধরে নেয় আর কোনো ব্যক্তি নিখোঁজ তালিকায় নেই।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান। কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। দুর্ঘটনায় সাতজনকে আসামি করে বিজয়নগর থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি মীর্জা মো. হাসান। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়