ম্যান ইউতে ফিরলেন রোনালদো

আগের সংবাদ

চেনা উইকেটে অচেনা নিউজিল্যান্ড

পরের সংবাদ

আইনের ফেরে খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা : জেলে ঢুকে আবেদন করতে হবে : আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে হলে তাকে কারাগারে গিয়ে নতুন করে আবেদন করতে হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এমন বক্তব্যের পর বিএনপি নেত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে শুরু হয়েছে ফের আলোচনা। পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশ নেয়ার ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র ধরেই আইনমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য এসেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর লা ভিঞ্চি হোটেলে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম ও এমআরডিআইয়ের যৌথ আয়োজনে সাংবাদিকদের কর্মশালায় এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে আবারো তাকে জেলে যেতে হবে। তিনি বলেন, এরপর নতুন করে তাকে আবেদন করতে হবে। কারণ যে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি

দেয়া হয়েছে, তার আলোকে তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেই আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এর আগেও আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করলেই ৪০১ ধারায় খালেদা জিয়ার আবেদন বিবেচনা করার সুযোগ আছে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য দলীয় প্রধানের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আসা ভিন্ন বক্তব্যকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতারা। জানতে চাইলে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে আমরা নিঃসন্দেহে হতাশ ও ক্ষুব্ধ। এর উদ্দেশ্য ছিল তাকে রাজনীতি থেকে চিরতরে বিদায় করে দেয়া। স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্য তাকে (খালেদা জিয়াকে) তিলে তিলে মারার নতুন চক্রান্ত।
জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতির বাইরেও বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে। প্রথমত মামলা জটিলতা, এরপর যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের যাওয়ার ব্যাপারে নানা বিধিনিষেধ আছে। অন্যদিকে বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় দীর্ঘ যাত্রাপথে তার শারীরিক ঝুঁকি কতটা সে ব্যাপারে চিকিৎসকরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। যদিও তার চিকিৎসক তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, নানামুখী সমস্যা মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তারা এমন প্রস্তুতি নিচ্ছেন যাতে বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দেয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়া যায়। এক্ষেত্রে সরকারের অনুমতির বিষয়টিকে তার পরিবার এবং দল অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এর আগে কয়েকবার খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ৬ মে আবেদন করে পরিবার। সব প্রস্তুতি গুছিয়ে আনার পরও শেষ পর্যন্ত সরকারের গ্রিন সিগন্যাল মেলেনি।
সূত্র জানায়, বারবার আবেদন করে অনুমতি না মিললেও খালেদাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে হাল ছাড়েনি পরিবার। সমঝোতার তৎপরতাও থেমে নেই। সমঝোতার যে সূত্রে খালেদার প্যারোলে মুক্তি হয়েছিল, তাকে দেশের বাইরে নিতে সরকারের সেই সূত্রের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে। কয়েকবার বৈঠকও হয়েছে দুপক্ষের। কিন্তু কৌশলগত কারণে এসব নিয়ে মুখ খোলেন না কেউই। জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ার কারণে বিদেশ নেয়ার ব্যাপারে সরকারের কাছে নতুন করে আবারো আবেদন করার কথা ভাবছে খালেদা জিয়ার পরিবার।
সূত্র আরো জানায়, নতুন জামিনের জন্য জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে খালেদাকে বিদেশে নিতে লিখিত আবেদনে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি চাইবে পরিবার। সাক্ষাতে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি শুভেচ্ছা চিঠিও নিয়ে যাওয়া হবে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই এই আবেদন করা হবে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ ৪ জন আইনজীবী খালেদা জিয়ার পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় করে জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর একটি খসড়া আবেদন তৈরি করেছেন। এসব প্রক্রিয়াগুলো গুছিয়ে নিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন বলে জানা গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়