প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
ঝর্ণা মনি : ঢেলে সাজানো হচ্ছে আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে। ত্যাগী, পীক্ষিত, দুঃসময়ের নেতাকর্মীদের প্রাধান্য দিয়ে সাজানো হবে তৃণমূলের কমিটিগুলো। নৌকায় যেন মাইম্যান, বিতর্কিত, হাইব্রিডরা ঠাঁই না পায় সেজন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছেন হাইকমান্ড। টার্গেট আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ। এর মধ্যেই তৃণমূলের ৮০ শতাংশ কমিটির সম্মেলন শেষ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
দলটির একাধিক শীর্ষ নেতা ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন, টানা তিনবারের মতো ক্ষমতায় থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই সরকারের মধ্যে হারিয়ে গেছে দল। মাইম্যানদের দৌরাত্ম্য বাড়ছেই। হাইব্রিডদের জয়জয়কারে বঞ্চিত হচ্ছেন ত্যাগীরা। কোথাও কোথাও অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। তৃণমূলের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ডে বিব্রত হচ্ছে সরকার। এসব থেকে পরিত্রাণের জন্য সারাদেশের তৃণমূলের সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ইউনিয়ন, ওয়ার্ড থেকে জেলা পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কোথাও কোনো পুরনো কমিটি থাকবে না। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জেলা-উপজেলার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন শিগগিরই শুরু হবে। যেসব সাংগঠনিক শাখার সম্মেলন হয়েছে, নিয়মিত কমিটি রয়েছে সেগুলোতে সদস্য সংগ্রহ বই দেয়া শুরু করব।
আওয়ামী লীগের ৭৮ সাংগঠনিক জেলা কমিটির মধ্যে সম্মেলন হয়েছে ৩৮টির। মেয়াদোত্তীর্ণ ৪০টি। ৬৫০টি সাংগঠনিক উপজেলা-থানা কমিটির দুই তৃতীয়াংশের মেয়াদ শেষ হয়েছে এক দেড় যুগ আগেই। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা কমিটি ছাড়া এ বিভাগের ১৫টি জেলা কমিটির মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৮টির সম্মেলন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে আট জেলা ও এক মহানগরীর মধ্যে চার জেলা এখনো মেয়াদোত্তীর্ণ। রংপুর বিভাগে আট জেলা ও এক মহানগরীর মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ তিন জেলা। ময়মনসিংহ বিভাগে আওয়ামী লীগের চার জেলা ও এক মহানগরীর
সবই বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ। খুলনা বিভাগে ১১ সাংগঠনিক জেলার মধ্যে সম্মেলন হয়েছে আট জেলার। বরিশাল বিভাগে সাত সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন হয়েছে তিন জেলার। বাকি চার জেলা এখনো মেয়াদোত্তীর্ণ। সিলেট বিভাগে পাঁচ সাংগঠনিক জেলার মধ্যে সুনামগঞ্জের সম্মেলন এখনো বাকি।
জানতে চাইলে সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, তৃণমূল গোছানোর উদ্যোগ আমরা আগেই নিয়েছি। দলীয়প্রধান প্রধানমন্ত্রী আগেই নির্দেশ দিয়েছেন। কোভিড-১৯ বিপর্যয়ে সব উদ্যোগ থমকে যায়। তবে বর্তমানে ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এখন আবার দল গোছানোর কাজ শুরু হবে। যেসব কমিটি হয়নি, পর্যায়ক্রমে সবগুলো সম্মেলন ও কমিটি গঠন হবে।
সূত্রমতে, দল গোছানোর কাজ আর ঝুলিয়ে রাখতে চাচ্ছেন না নীতিনির্ধারকরা। শিগগিরই এই কাজ শুরু করার নির্দেশনা এসেছে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। করোনার কারণে পুরোদমে না হলেও সীমিত পরিসরে জেলা-উপজেলা সম্মেলন এবং সভা-সমাবেশ করার কথা ভাবা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ভোরের কাগজকে বলেন, রুটিনওয়ার্ক অনুযায়ী মিটিং চলছে, সভা হচ্ছে। তৃণমূলের ওয়ার্ড, ইউনিয়নের সম্মেলন করা হবে। আশা করছি ইউনিয়ন নির্বাচনের আগেই ৭/৮টি সম্মেলন করতে পারব। আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের মধ্যে ৮০ শতাংশ সম্মেলন ও কমিটি গঠন সম্ভব।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।