কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল দুই নারীর

আগের সংবাদ

শাড়িতেই এবার পকেট

পরের সংবাদ

কারা এই আইএস-কে? আফগানিস্তানে সক্রিয় নৃশংসতম জঙ্গিগোষ্ঠীর কাবুলে হামলার দায় স্বীকার

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আফগান রাজধানী কাবুলের বিমানবন্দরে শতাধিক মানুষের প্রাণঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শাখা সংগঠন আইএস-কে। ‘কে’ আদ্যাক্ষরটি এসেছে ‘খোরাসান’ থেকে। খোরাসান মূলত মধ্য এশিয়ার একটি ঐতিহাসিক স্থান- একদা যার অস্তিত্ব ছিল বর্তমান ইরান, তুর্কমেনিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যবর্তী একটি এলাকায়; তবে এখন সেটি বিলীন। প্রশ্ন উঠেছে কারা এই আইএস-কে? বিবিসি জানাচ্ছে, আইএস-কে এর পুরো নাম ইসলামিক স্টেট অব খোরাসান প্রভিন্স। এর সদস্যরা আফগানিস্তানের বাইরে পাকিস্তানেও সক্রিয়।
২০১৫ সালের জানুয়ারিতে আইএস-কে এর যাত্রা শুরু। তখন বিশ্বে রমরমা সময় চলছে আইএসের। এর আগে ২০১৪ সালেই সিরিয়া ও ইরাকের বিশাল এলাকা দখল করে ‘খেলাফত’ ঘোষণা করেছে আইএস। ফোর্বস-এর মতে, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের তালেবান সদস্যদের নিয়েই গড়ে ওঠে আইএস-কে। এরা মূলত তারাই, যারা মনে করছিল তালেবানরা যথেষ্ট জঙ্গি নয়, কিংবা তাদের আদর্শ বাস্তবায়নে তারা অতটা কঠোর নয়। সূত্র জানায়, আফগানিস্তানের নানগড় প্রদেশ আইএস-কে এর প্রধান বিচরণভূমি। এএফপির মতে, নানগড় ছাড়াও দলটির ঘাঁটি রয়েছে আফগানিস্তানের কুনার ও নুরিস্তান প্রদেশে। এছাড়া দেশটির উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায়ও ঘাঁটি রয়েছে তাদের। এসব এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে তালেবান ও মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বাহিনীর ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় তাদের। তবে সেসব লড়াইয়ে সফল হয় আইএস-কে। এর আগেও, ২০২০ সালের মে মাসে কাবুলের হাসপাতালে হামলা চালায় তারা। এছাড়া চলতি বছরের মে মাসেও ফের কাবুলের মেয়েদের একটি স্কুলে হামলা চালায় আইএস-কে। দুই হামলাতেই বেশ কয়েকজন নিহত হয়। আর সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার কাবুলের বিমানবন্দরে হামলা চালাল তারা।
বিবিসি বলছে, আফগানিস্তানে যেসব জঙ্গিগোষ্ঠী এখন সক্রিয় রয়েছে তাদের মধ্যে সবচেয়ে নৃশংস এই আইএস-কে। বিগত দিনেও তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি স্কুলগামী মেয়েশিশু এবং হাসপাতাল। এমনকি হাসপাতালের প্রসূতি ইউনিটে হামলা চালিয়ে

অন্তঃসত্ত্বা নারীদেরও হত্যা করেছে আইএস-কে জঙ্গিরা। তাদের প্রচুর স্লিপার সেল রয়েছে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে। মুসলমানদের মধ্যে যারা সুন্নি নয়, মূলত তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় এই সংগঠন।
বিবিসির মতে, যখন আইএস-কে দলটির রমরমা অবস্থা ছিল, তখন তাদের জঙ্গি সংখ্যা ছিল তিন হাজারের মতো। পরবর্তীতে আফগান সরকারি বাহিনী, মার্কিন বাহিনী ও তালেবান হামলায় তাদের অনেকে মারা যায়। তবে জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ মুহূর্তে শক্তিসঞ্চয় প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে তারা। গত মাসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রতিবেদন অনুসারে, দলটির সদস্য সংখ্যা এখন পাঁচশর কাছাকাছি। অন্যদিকে ফোর্বস বলছে, আইএস-কের সদস্য সংখ্যা দেড় থেকে দুই হাজারের কাছাকাছি। অন্যদিকে মার্কিন সূত্রমতে, তালেবান বাহিনীর বর্তমান সদস্য হবে ৭৫-৮০ হাজারের মতো। এদিকে সিএনএন মনে করে, তালেবানের জাত শত্রæ আইএস-কে। একইমত ফোর্বসেরও। কিন্তু বিবিসি মনে করে, তৃতীয় পক্ষ হাক্কানি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আইএস-কে। হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা সিরাজুদ্দিন হাক্কানি একজন গুরুত্বপূর্ণ তালেবান নেতা। এশিয়া প্যাসিফিক ফাউন্ডেশনের গবেষক সাজান গোহেল জানান, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বেশ কিছু হামলা যৌথভাবে চালিয়েছে তালেবানের হাক্কানি নেটওয়ার্ক ও আইএস-কে। তাছাড়া, গত ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর পুল-ই-চরকি কারাগারের তালা খুলে দেয় তারা। সেই কারাগারে বন্দি ছিলেন যারা, তাদের বেশিরভাগই আল কায়েদা ও আইএসের সদস্য। এ থেকে বিশ্লেষকদের অনুমান, তলেতলে তালোবানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে আইএস-কের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়