কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল দুই নারীর

আগের সংবাদ

শাড়িতেই এবার পকেট

পরের সংবাদ

কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণে নিহত ১০০ পার : হামলার পূর্বাভাস থাকলেও ঠেকানো যায়নি যে কারণে

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কাবুল বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আরো কয়েকশ মানুষ। গভীর রাতে হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। কয়েক দিন ধরেই পেন্টাগন বারবার বলছিল, যে কোনো মুহূর্তে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জঙ্গি হামলা হতে পারে। তাই ৩১ আগস্টের পরে আর সে দেশে

মার্কিন সেনা রাখা নিরাপদ নয় বলে প্রেসিডেন্টকে তাগিদ দিচ্ছিল তারা। ভারতেও শীর্ষ পর্যায়ের এক সর্বদলীয় বৈঠকেও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন, কাবুল বিমানবন্দরে আইএস হামলার আশঙ্কা রয়েছে এবং এজন্য শঙ্কায় রয়েছে তালেবানরাও। এদিন সকালে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস হিপিও এক মার্কিন চ্যানেলে বলেন, হামলার আশঙ্কা আদতেই উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। পরে মন্ত্রীর কাছে সরাসরি জানতে চাওয়া হয়, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কি কাবুলে কোনো হামলা হতে পারে? হিপি উত্তর দেন, হ্যাঁ, আমাদের গোয়েন্দা-তথ্য অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। মন্ত্রী আরো জানান, হামলাটি বড় আয়তনের ও ধ্বংসাত্মক প্রকৃতির হতে পারে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এত সতর্কবার্তা থাকলেও কেন হামলাটি এড়ানো গেল না? এর উত্তর লুকিয়ে রয়েছে মাঠপর্যায়ের বাস্তব অবস্থার মধ্যে। কয়েক দিন ধরে এ বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ছাড়ছেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু বিমানে যারা ওঠার সুযোগ পাচ্ছেন, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি মানুষ রয়ে যাচ্ছেন পেছনে। বিমানবন্দরের ভেতরে অবস্থান করছেন সাত হাজার মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী সদস্য। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তারা বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামাল দেবেন। কিন্তু বিমানবন্দরের বাইরে বিরাজ করছে চরম অরাজকতা। তালেবান রক্ষীরা ভিড় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালালেও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। মাঝে মাঝে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে গুলি চালান তারা। তাতে বরং হুড়োহুড়ি আরো বেড়ে যায়। গত কয়েক দিনে এ বিমানবন্দরের বাইরে জনতার ভিড়েই পদপিষ্ট হয়ে মারা গেছেন অন্তত এক কুড়ি আফগান।
পরিস্থিতিদৃষ্টে অনুমান, মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাওয়া আফগানিস্তান নিয়ে শুরু হয়ে গেছে বিশ্বশক্তিগুলোর ভয়ঙ্কর ভূরাজনীতি। হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেও মার্কিন গোয়েন্দারা এ হামলার পূর্বাভাস জানান। তালেবানরাও হামলার পরপরই এক বিবৃতি দিয়ে জানায়, এ হামলা আইএসেরই কাজ। এদিকে নিহতদের মধ্যে মার্কিন সেনাও রয়েছে ১৩ জন। বিস্ফোরণের পরে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রাস্তায় স্তূপ হয়ে আছে মরদেহ। বিমানবন্দরের বাইরের পরিখায় অসংখ্য দেহ ভাসছে। অন্তত ছয়টি বিস্ফোরণের ঘটনা এদিন ঘটেছে বলে দাবি করছে বিভিন্ন সূত্র।
প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‘অ্যাবি গেটের’ সামনে। দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে বিমানবন্দরের খুব কাছে ব্যারন হোটেলের সামনে। বিমানবন্দরের সামনে বিস্ফোরণের পরে একাধিক দুষ্কৃতিকারী সেখানে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। তাতেও অনেকে হতাহত হন। হামলায় ২৮ জন তালেবান নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল প্রথমে, কিন্তু তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ পরে জানান, বিস্ফোরণে তালেবান কেউ হতাহত হননি। কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর থেকেই বিমাবন্দরের সামনে প্রতিদিন জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার আফগান। থিকথিকে সেই ভিড়ের মধ্যেই এ আত্মঘাতী হামলা চালায় আইএস জঙ্গিরা। এরপরই শুরু হয় নির্বিচার গুলি। প্রথমে মনে হচ্ছিল জঙ্গিরাই গুলি চালাচ্ছে। পরে দেখা যায়, বিশৃঙ্খল জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালাচ্ছে বিমাবন্দরের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তালেবান রক্ষীরা। তবে জাবিউল্লাহ বলেন, কাবুল বিমানবন্দরের ভেতরে নিজেদের জিনিসপত্র নষ্ট করে দিতে মার্কিন বাহিনী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ও গুলি চালিয়েছে। কাবুলের বাসিন্দারা তা নিয়ে ভাবিত নন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়