জাসদের পাল্টা প্রশ্ন : ১৫ আগস্ট সেলিম মার্কিন দূতাবাসে কী করছিলেন

আগের সংবাদ

কারা এই আইএস-কে? আফগানিস্তানে সক্রিয় নৃশংসতম জঙ্গিগোষ্ঠীর কাবুলে হামলার দায় স্বীকার

পরের সংবাদ

সুনামগঞ্জে বিপাকে শিক্ষা সামগ্রীর দোকানিরা

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : প্রায় ১৮ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছে এ খাতনির্ভর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো। স্কুল-কলেজের সামনের দোকান ও শিক্ষা সামগ্রীর দোকানগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি তাদের।
শিক্ষা সামগ্রী বিক্রেতারা জানান, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারা বেকায়দায় রয়েছেন। দোকানে আগের মতো বেচাকেনাও নেই। ধারকর্য করে সংসার চালাচ্ছেন। দোকান ভাড়া বাকি পড়ছে। অনেকে সে দোকান ভাড়া মেটাতে দোকানের আসবাবপত্র বিক্রি করে দিচ্ছেন।
সুনামগঞ্জ সরকারি সতীশ চন্দ্র (এসসি) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে কনফেকশনারি দোকানের মালিক মো. রবিউল হাসান। দোকানের নাম দিয়েছেন রাফি ভ্যারাইটিজ স্টোর। দোকানের সামনে এসসি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পদচারণা থাকলে তার দোকানও জমজমাট থাকে। কিন্তু ১৮ মাস ধরে বিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় কোনোমতে টিকে আছেন তিনি।
রবিউল বললেন, বিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর থেকে আগের মতো বেচাকেনা নেই দোকানে। দফায় দফায় লকডাউনে দোকান বন্ধ। এ সময় ধারদেনা করে পরিবার চালিয়েছি। ২ মাসের দোকান ভাড়া দেনা হয়েছিল। দোকানের ২টা সোকেস বিক্রি করে সে টাকা দিয়েছি। প্রতি মাসে দোকানবাবদ খরচ রয়েছে ৯ হাজার টাকা। মাস শেষে অর্ধেক ঘাটতি থেকে যায়। বিদ্যালয় না খুললে আর কয়েক মাস এভাবে টেনেটুনে দোকান খুলে রাখতে পারব। তারপর হয়তো বন্ধ করে দিতে হবে।
পৌর বিপণির অন্নপূর্ণা স্টেশনারির পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যবসায়ী মনোরঞ্জন পাল। খাতা, কলম, পেনসিল, স্কেল, জ্যামিতি বক্সসহ মনিহারি জিনিসপত্র বিক্রি করেন তিনি। বয়সের ভারের জন্য দোকানে ২ জন কর্মচারী রেখেছেন। মাস শেষে কর্মচারীদের বেতন দিয়ে মধ্যবিত্তের সংসার ভালোই চলে যাচ্ছিল। এর মাঝেই মহামারি করোনা ভাইরাসের হানা। লকডাউনে বন্ধ করতে হলো দোকান। ছাঁটাই করতে হলো কর্মচারী। এখন সবকিছু স্বাভাবিক হলেও মনোরঞ্জনের বেচাকেনা স্বাভাবিক হয়নি।
তিনি বলেন, সারাদিন দোকান খুলে বসে থাকি। কোনো বেচাকেনা নেই। এতে দোকান ভাড়া পরিবারের খরচ জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। ২ জন কর্মচারী ছিল ছাঁটাই করেছি। একজন যায়নি। তাই নামকাওয়াস্তে তাকে প্রতিদিন কিছু হাত খরচ দিয়ে চালাচ্ছি।
রিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক সাজু রহমান সাজু বলেন, আগের মতো বেচাকেনা নেই। শুধু অ্যাসাইনমেন্টের জন্য কিছু শিক্ষার্থী আসে। এতে কম্পিউটারের দোকানের ব্যবসা বেড়েছে। আমাদের বেচাকেনার কোনো পরিবর্তন নেই।
মা ডিজিটাল স্টুডিওর মালিক রাজিব তালুকদার বলেন, দোকান শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্টের প্রশ্ন ও কাগজ নিতে আসে। এতে এখন বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে।

তবে স্কুল খোলা থাকা সময় থেকে এই বেচাকেনা অনেক কম।
এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যবসায় মান্দাভাব লাইব্রেরিতেও। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বই বিক্রি করতে পারছেন না তারা। এতে লাইব্রেরি সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
আইডিয়াল লাইব্রেরির কর্মচারী সুজন কুমার দাস বলেন, গত বছর প্রকাশনীর কাছ থেকে যে বই আনা হয়েছে সেগুলো এখনো রয়েছে। বই বিক্রি খুবই কম। এমতাবস্থায় লাইব্রেরির মালিকের সঙ্গে আমরাও সমস্যায় আছি। যে বেচাকেনা হয় তা দিয়ে লাইব্রেরির ভাড়াই হয় না। মালিক নিজে ভর্তুকি দিয়ে লাইব্রেরির খরচ চালাচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়