ওবায়দুল কাদের : ২১ আগস্ট মামলার আপিল শুনানি শুরু শিগগিরই

আগের সংবাদ

মহামারিতে মেগা প্রকল্পে স্থবিরতা

পরের সংবাদ

জাসদের পাল্টা প্রশ্ন : ১৫ আগস্ট সেলিম মার্কিন দূতাবাসে কী করছিলেন

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জাসদকে জড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে এবার হাটে হাঁড়ি ভাঙল জাসদ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে দলটির দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবাদ বিবৃতিতে শেখ সেলিম সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে বলা হয়েছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ ফজলুল করিম সেলিম তার আপন মামা বঙ্গবন্ধু ও আপন ভাই শেখ মনির লাশ ফেলে রেখে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সঙ্গে যুক্ত তৎকালীন আমেরিকান দূতাবাসে গিয়ে কী করছিলেন তা জাতি জানতে চায়।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জাসদকে যুক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিমের বক্তব্য রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের এই শরিক দলের বিবৃতিতে বলা হয়, শেখ সেলিম বঙ্গবন্ধুর খুনিগোষ্ঠী এবং খুনিগোষ্ঠীর পাকিস্তানপন্থার রাজনীতির ধারকদের আড়াল করার উদ্দেশ্যেই মিথ্যাচার করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপপ্রয়াস পেয়েছেন। জাসদ কখনোই ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করেনি।
বিবৃতিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী গোষ্ঠীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর কর্নেল তাহের বা হাসানুল হক ইনু বা জাসদের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। জাসদ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সুফলভোগীও নয়। কারা খন্দকার মোশতাকসহ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, কারা খুনিদের রক্ষা করেছে, কারা খুনিদের পুরস্কৃত করেছে তা প্রকাশিত। খন্দকার মোশতাকের ৮৩ দিনের অবৈধ শাসনকালে কারাবন্দি জাসদ নেতাকর্মীদের মুক্তি দেয়া হয়নি, বরং ওই ৮৩ দিনেও জাসদের নেতাকর্মীদের ওপর চরম রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হয়েছে।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার এজাহার, এফআইআর, তদন্ত, চার্জশিট, সাক্ষীদের জেরা ও সওয়াল জওয়াব, চার্জের ওপর আদালতে যুক্তিতর্ক, আদালতের রায় ও রায়ের পর্যবেক্ষণের কোথাও জাসদ বা জাসদের কোনো নেতার নাম পর্যন্ত উচ্চারিত হয়নি। এটাই স্বাভাবিক ও সত্য। কারণ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর জাসদের কোনো ধরনের যোগাযোগ ছিল না। শেখ সেলিম বা কেউই মিথ্যাচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ইতিহাসের এই সত্য আড়াল করতে পারবে না।
জাসদ গঠন ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিভক্তি বঙ্গবন্ধুকে দুর্বল করে দিয়েছিল, একা করে দিয়েছিল, অসহায় করে দিয়েছিল, বিষয়টি স্বীকার করে দলটির বিবৃতির বলা হয়, কিন্তু যারা জাসদ গঠন করেছিলেন তারা জাসদ গঠনের আগে বঙ্গবন্ধুকে তার নেতৃত্বে বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে চেয়েছিলেন। এমনকি ছাত্রলীগের বিভক্তি, একই দিনে দুই জায়গায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সম্মেলনের একটিতে বঙ্গবন্ধুর যোগদানের পরও জাসদ গঠনের আগ পর্যন্ত কয়েক মাস তারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন। কাদের চাপে বঙ্গবন্ধু বিভক্তির পথে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনকেও বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে দূরে ঠেলে দেয়া হয়েছিল, তাও আজ জাতির সামনে প্রকাশিত।
প্রসঙ্গত, বুধবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন আয়োজিত বিএমএ ভবনে এক আলোচনা সভায় ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের কুশীলবদের প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, তৎকালীন সেনাপ্রধান কে এম শফিউল্লাহ, উপ-সেনাপ্রধান জেনারেল জিয়া, জাসদ নেতা ইনু, কর্নেল তাহেরসহ সেদিন রেডিও স্টেশনে আনুগত্য প্রকাশ করতে যাওয়া সবাই ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এদের চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠনের দাবিও জানান শেখ সেলিম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়