জাসদের পাল্টা প্রশ্ন : ১৫ আগস্ট সেলিম মার্কিন দূতাবাসে কী করছিলেন

আগের সংবাদ

কারা এই আইএস-কে? আফগানিস্তানে সক্রিয় নৃশংসতম জঙ্গিগোষ্ঠীর কাবুলে হামলার দায় স্বীকার

পরের সংবাদ

‘মিনি কক্সবাজারে’ পর্যটকদের ঢল : নাটোরের সিংড়া

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কে এম শারফুল ইসলাম খোকন, সিংড়া (নাটোর) থেকে : সিংড়ার চলনবিল এখন ভ্রমণপিপাসুদের কাছে ‘মিনি কক্সবাজার’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। সিংড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে পূর্ব দিকে একটু হাঁটা দিয়েই চলনবিল গেটে শোনা যাবে সিএনজিচালিত, অটোরিকশা চালকদের হাঁকডাক ঘুরে আসি কক্সবাজার! বর্ষায় বিস্তৃত জলরাশি আর অজ¯্র পাখ-পাখালির সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি নৌকা ভ্রমণের আনন্দ পেতে প্রতিদিন হাজার হাজার ভ্রমণপিপাসু মানুষের উপস্থিতি মুখরিত হয়ে উঠে চলনবিল।
আর বিলের মাঝখানে ভাসমান বিলসা দ্বীপে যেন তিলঠাঁই জায়গা নেই। এছাড়া সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পীর ঘাসি দেওয়ানের মাজারে বাউল গানের আসর ও দূর-দূরান্তের ভক্তদের আড্ডা জমে। সেখানে গাঁজা সেবনও চোখে পড়ে।
নাটোর শহর থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার উত্তরে সিংড়া-বারুহাস-তাড়াশ ডুবন্ত সড়ক (কবিরগঞ্জ পার্ক) এলাকার একটি অংশ চলনবিলের ডুবন্ত সড়ক নামে পরিচিত।
বিলের মধ্যে রয়েছে কংক্রিটের তৈরি সমতল সড়ক। ভারি বৃষ্টি ও বন্যায় সড়ক দুটিই তলিয়ে যায়। তখন চারদিকে শুধু পানি আর পানি। মাঝে দ্বীপের মতো বেশ কিছু গ্রামও চোখে পড়ে। ওই সময় ডিঙি নৌকায় বিলে ভেসে বেড়াতে গেলে মন ভরে যায়।
চলনবিলের এই আনন্দ উপভোগ করতে আসেন অনেকেই। কেউবা এসেছেন ব্যক্তিগত গাড়িতে, কেউ অটোরিকশা, ট্যাক্সি, নছিমন বা ভটভটি ভাড়া করে। সড়ক ধরে মাইলের পর মাইল হাঁটছেন। দুই পাশ থেকে ঢেউ আছড়ে পড়ছে পথিকের পায়ে। যেন যতœ করে পা ধুয়ে দিচ্ছে। চারদিকে ¯্রােতের কলকল শব্দ আর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিদের ডাক।
স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪০ বছর পর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও নাটোর-৩ আসনের সাংসদ এড. জুনাইদ আহমেদ পলক চলনবিলবাসীকে উপহার দেন সিংড়া-বারুহাস-তাড়াশ এই ডুবন্ত সড়কটি। ইতোমধ্যে চলনবিলবাসীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসহ চলনবিলে পর্যটকদের সুবিধা বাড়াতে তিনি নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
নন্দীগ্রাম থেকে সপরিবারে এসেছেন রাশেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘লোকমুখে প্রশংসা শুনে এখানে এসেছি। আসার পর এখানকার সৌন্দর্য দেখে অবাক লাগছে।
মনে হচ্ছে, সত্যিই যেন কক্সবাজার এসেছি। পরিবারের লোকজন প্রতিনিয়তই আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।’ স্বল্প আয়ের মানুষেরাই বেশি আসেন এখানে। সাধ্যের মধ্যে খুঁজে পেতে চান স্বস্তি ও সুখ। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আসেন।
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, চলনবিলের সৌন্দর্যটা অন্য রকম। এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অল্প খরচে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঘোরা যায়। তবে এখানকার বড় সমস্যা, এখানে থাকা ও খাওয়ার ভালো হোটেল নেই। আর কিছু এলাকায় সোঁতিজাল ও বানার বাঁধের কারণে চলনবিলে বাঁধাহীনভাবে ঘুরতে পর্যটকদের সমস্যা হয়। তবে যথাযথ তত্ত্বাবধান ও পরিকল্পিত উদ্যোগ নিলে উত্তর জনপদের ঐতিহ্যবাহী এই চলনবিল একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে বলে জানান তিনি।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর-এ-আলম সিদ্দিকী জানান, চলনবিলে স্বাচ্ছন্দ্যে বেড়ানোর জন্য নিরাপত্তার দিকে নজর রাখা হয়েছে। সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্য রাখা হয়েছে।
সিংড়ার ইউএনও এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, চলনবিলে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তারপরও অনেকেই বিধিনিষেধ মানছেন না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়