ডুপ্লেক্স বাসায় অগ্নিকাণ্ডে দুই গৃহকর্মীর মৃত্যু

আগের সংবাদ

খোঁড়াখুঁড়িতে জনদুর্ভোগ : লকডাউনে কাজ করলে এখন ভোগান্তি হতো না > জমানো পানিতে বাড়ছে এডিস মশা

পরের সংবাদ

মেহেরপুরের বিএন কলেজে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মেহেরপুর প্রতিনিধি : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটপাড়ায় ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিএন কলেজটি এমপিও না হলেও নিয়োগ বাণিজ্য চলছেই। আর্থিক সুবিধা নিয়ে নিয়োগের কয়েক মাস যেতেই শিক্ষকদের কাছে এমপিও করার নামে টাকা দাবি করা হয়। এমপিও করার নামে আর্থিক সুবিধা ভোগের পর চাকরিতে তাদের অনুৎসাহিত করা হয় এমপিও হতে বিলম্ব হবে বলে। মোটা অঙ্কের ডোনেশন দিয়ে শিক্ষকতার চাকরিতে ঢুকে বেতন না হওয়ায় ইতোমধ্যে ১২ জন চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। সেসব শূন্য পদে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকেও নেয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা। বেতন না হওয়াতে তারাও চাকরি ছাড়ার পর্যায়ে।
কলেজটিতে স্টাফ আছেন ২৬ জন। কলেজের অধ্যক্ষ অকপটে স্বীকারও করছেন নিয়োগ বাণিজ্যের কথা। কলেজ অধ্যক্ষের নামে এন্তার অভিযোগের কারণে চাকরিচ্যুত করার জন্য আরবিটেশন বোর্ডে মামলাও আছে।
নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হলেও সব কর্তৃত্ব ছিল কলেজের অধ্যক্ষ আলিমুজ্জামান জুয়েলের হাতে। এমনই অভিযোগ করেছে চাকরি ছেড়ে যায় যায় অবস্থার শিক্ষকরা। শুধু নিয়োগ বাণিজ্যই না অধ্যক্ষ্যের বিরুদ্ধে রয়েছে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অধ্যক্ষ আলিমুজ্জামান জুয়েলকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়। চাকরিচ্যুত করার জন্য আরবিটেশন বোর্ডে মামলাও করা হয়েছে।
নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, পৌরনীতি বিভাগের আব্দুল জাব্বার চলে যাওয়ার পর ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হয় জিয়াউর রহমান নামের একজনকে, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের আবুল কালামের স্থলাভিষিক্ত হন ২ লাখ টাকার বিনিময়ে মনিরুজ্জামান মিল্টন, কম্পিউটার প্রদর্শক আব্দুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হন ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে মনিরা বেগম, ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুল হালিমের স্থলাভিষিক্ত হন ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে জাকির হোসেন, বাংলা বিভাগে মাহমুদা আক্তারের স্থলাভিষিক্ত হন ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে নার্গিস খানম, ইংরেজি বিভাগে আসিফ আহম্মেদের স্থলাভিষিক্ত হন ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে জুলহাস হোসেন, সাচিবিক বিদ্যা বিভাগে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পেয়েছেন ইজারুল ইসলাম নামের একজন। এছাড়া সৃষ্ট কম্পিউটার অপারেটর পদে ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম নামের একজন, এমএলএসএস পদে আমজাদ হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মাসুদ রানা। তাকেও দিতে হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা।
টাকার বিনিময়ে নিয়োগের সত্যতা স্বীকার করে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইজারুল ইসলাম বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ আলিমুজ্জামান জুয়েলের একক কর্তৃত্বে নিয়োগ বোর্ডকে সন্তুষ্ট করে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমি নিজেই দিয়েছি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়াও কলেজের এফডিআরের টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করা হয়েছে অধ্যক্ষের যোগসাজশে। এ কারণে আমাদের কলেজের একাডেমিক স্বীকৃতির মেয়াদ শেষ হলেও নবায়ন করতে পারছি না।
অধ্যক্ষ আলিমুজ্জামান জুয়েলের অকপটে উচ্চারণ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এভাবেই নিয়োগ হয়। এখানে প্রিন্সিপালের একার কোনো ভূমিকা থাকে না। আমার ভাবমূর্তি নষ্টে একটি পক্ষ মিথ্যা অপপ্রচার করছে।
বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি গোলাম ফারুক জানান, নিয়োগে টাকা নেয়ার বিষয়টি জানা নেই। তবে যিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন, তাকে আমি বারবার কাগজপত্র দেখানোর জন্য বলেছি কিন্তু তিনি আমাকে দেখাননি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়