সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে স্বেচ্ছাসেবক লীগের মানববন্ধন

আগের সংবাদ

ঝুঁকিতে উদারপন্থি ও নারীরা : শরিয়া আইনে দেশ চালানোর ঘোষণা তালেবান প্রশাসনের, তালেবানবিরোধী বিক্ষোভ বিভিন্ন শহরে

পরের সংবাদ

এবার লক্ষ্য কূটনৈতিক জয় : তালেবানের ওপর বাড়ছে আন্তর্জাতিক চাপ >> চ্যালেঞ্জের মুখে ভারত

প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্বকে চমকে দিয়ে ঝড়ের গতিতে কাবুলে সামরিক বিজয় নিশ্চিত করেছে তালেবান বাহিনী। এবার কূটনৈতিক বিজয় হাসিলে মনোযোগী হতে শুরু করেছে তারা। ইসলামী আফগান আমিরাত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে শুরুতেই। শরিয়া বিধি অনুসারে দেশ চলবে- তাও জানিয়ে দিয়েছে। কূটনৈতিক অঙ্গনে তাদের সাফল্যের খতিয়ান দীর্ঘ না হলেও চলতি দফায় এখন পর্যন্ত সাফল্যের পাল্লা ভারি রয়েছে তাদের দিকেই। বিশ্ব শক্তির ভারসাম্য নির্ধারণকারী নিরাপত্তা পরিষদের দুই শক্তিশালী সদস্য চীন ও রাশিয়ার সমর্থন নিশ্চিত করেছে আগেই। অদূরের তুরস্ক এবং নিকট প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গেও মিত্রতা স্থাপন করেছে। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে পাকিস্তান তাদের ‘বড় বন্ধু’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত থাকার পরও বিতর্কিত কাশ্মির প্রশ্নে তারা ভারতের অবস্থানের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে।
তালেবানদের নিয়ে কোনো ভয় নেই বলে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্দেশে অভয়বাণীও শোনাচ্ছেন মুখপাত্ররা। তারা বলছেন, ২০ বছর আগের তালেবান আর বর্তমান তালেবানের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। নারীর অধিকার নিয়ে বলা হচ্ছে, তারা লেখাপড়া ও অন্যান্য সব ধরনের কাজে অংশ নিতে পারবে। গণমাধ্যমের তৎপরতার ওপর কোনো বিধিনিষেধ থাকবে না, তবে সবই হতে হবে শরিয়াবিধির আওতায়।
এসবের মধ্যেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কাবুলে দ্রুত একটি সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। সে লক্ষ্যে তৎপর হয়েছে তালেবান নেতৃত্ব। দোহা থেকে দেশে ফিরেছেন আবদুল গনি বরদারসহ অন্য নেতারা।
পাকিস্তানের ডন লাইন জানায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গনি বরদার দোহা থেকে কান্দাহারে এসে পৌঁছান। বিমানবন্দরে উৎফুল্ল জনতা তাকে স্বাগত জানায়। তার সঙ্গে ফেরেন মুহাম্মদ ইয়াকুব, যিনি তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে। তিনি এ গোষ্ঠীর সামরিক কমান্ডার। ফিরেছেন গোষ্ঠীর জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোল্লা আবদুল হাকিমও।
তালেবানের সর্বোচ্চ মন্ত্রণা পরিষদ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ

হচ্ছে রাহবারি শুরা, এর সদস্য ২৬ জন। এর পাশাপাশি রাজনীতি, অর্থনীতি, সামরিক, গোয়েন্দা ও আরো ১৩টি বিষয় দেখভালের জন্য তালেবানের একটি মন্ত্রিপরিষদ রয়েছে।
এদিকে মার্কিন থিংক ট্যাংক উইলসন সেন্টারের মাইকেল কুগেলমেন বলেছেন, ইসলামাবাদ তাই পেয়েছে, যা সে অনেক দিন ধরে চাইছিল। চীনের সঙ্গে তাদের ‘সব ঋতুর’ বন্ধুত্ব এখন আরো ভালোভাবে কাজে লাগাবে তারা। চীনও এখন তার নিজস্ব নিয়মেই এই খেলা খেলতে পারবে।
গৌতম মুখোপাধ্যায় নামে আরেক বিশ্লেষক বলেন, চীন ও পাকিস্তান এখন আফগানিস্তানে একে অপরের পিঠে চড়ে এগিয়ে যেতে পারবে।
রাশিয়া ও ইরান তালেবানের পুনরুত্থানে লাভবান হবে। এ দুই দেশের কাউকেই কাবুলের দূতাবাস খালি করতে হয়নি, তাদের কূটনীতিকরা এখনো দেশটিতে নির্বিঘেœ কাজ করছেন।
অন্যদিকে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেবে কি দেবে না, তা নিয়েই ভারতকে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করছে পর্যবেক্ষকরা। তাদের মতে, ভারতের হাতে সেরা উপায়, তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগের পথ খোলা রাখা। পশ্চিমা বিশ্ব খুব সম্ভবত তালেবানকে চাপে রাখতে খুব শিগগিরই একটি ‘ইউনাইটেড ফ্রন্ট’ গঠন করতে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তালেবান সরকারের মোকাবিলায় যৌথ প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
কাবুলে আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন তালেবান কমান্ডার তথা দলের হাক্কানি নেটওয়ার্ক প্রধান আনাস হাক্কানি। বৈঠকে ছিলেন আশরাফ গনি সরকারের শান্তিদূত আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ। তালেবানের যুদ্ধের দিকটি দেখে মূলত এই হাক্কানি নেটওয়ার্ক। পাকিস্তান সীমান্তে তাদের প্রধান শিবিরগুলো অবস্থিত। আফগানিস্তানে তালেবানি শাসন প্রতিষ্ঠার পেছনেও মূল শক্তি তারা। ফলে আনাসের সঙ্গে কারজাইয়ের এ বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
এদিকে গতকাল বুধবার সরকারি দপ্তরের ছাদ থেকে আফগানি পতাকা সরিয়ে সেখানে তালেবানি পতাকা ওড়ানোয় জালালাবাদে বিক্ষোভ শুরু হলে এক পর্যায়ে তাদের ওপর গুলি চালায় তালেবান বাহিনী। সরকারি প্রতিষ্ঠানে কেন জাতীয় পতাকার পরিবর্তে তালেবানের পতাকা থাকবে, এই প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভে অংশ নেন স্থানীয়রা। তালেবান বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়