অশ্রুডানায় সূর্য খোঁজার পালা

আগের সংবাদ

শূন্য অর্থনীতি থেকে উন্নয়নের রোল মডেল

পরের সংবাদ

চলছে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া : রাণীনগরে আড়াই বছরেও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার খানাখন্দে ভরপুর বেহাল সড়কে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলাবাসী। দীর্ঘ আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে সড়কটির কার্পেটিং তুলে কোনো রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখায় রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর দিন দিন সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ফলে নিত্য দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার লাখ লাখ মানুষ।
জানা যায়, উপজেলার সদর রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর হয়ে কালীগঞ্জ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়কটি ছিল এলজিইডির আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং দীর্ঘ এলাকাজুড়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গত চার বছর আগে এলজিইডি থেকে সড়ক জনপদ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এই সড়কটি রাণীনগর সদর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্য দিয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। সড়কটি প্রশস্ত এবং মজবুত পাকাকরণের জন্য গত ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে টেন্ডার দেয়া হয়। দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার সড়ক, ২৩টি কালভার্ট ও চারটি সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ৯১ কোটি টাকা। ২২ কিলোমিটার সড়ক এবং ২৩টি কালভার্ট নির্মাণের জন্য কাজটি পান এক্সপেকট্রা ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট ভেনচার ঢাকা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আর সড়কের চারটি সেতু নির্মাণের কাজ পেয়েছেন মীর হাবিবুল আলম কনস্ট্রাকশন। সড়ক, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণে সময়সীমা দেয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এর মধ্যে সড়কটির কাজের ঠিকাদার কেবলমাত্র ২২ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং তুলে কোনো রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখেন এবং আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ রাস্তার মাঝে কিছু জায়গায় পাথর ফেলেন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন। তারপর দীর্ঘ আড়াই বছরেও সড়কটির কাজ শেষ করতে না পাড়ায় চলতি বছরের ৩ মে সড়কের কাজের চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিলসহ ওই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া দীর্ঘদিনেও কালভার্ট নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এদিকে মীর হাবিবুল আলম কনস্ট্রাকশন সড়কটির সেতু নির্মাণ কাজও এখনো শেষ করতে পারেনি। স্থানীয় উজ্জ্বল হোসেন, এরশাদ হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, মুন্টু জানান, উপজেলার সদর থেকে আবাদপুকুর পর্যন্ত সড়কের কেবল কার্পেটিং তুলে কোনো রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। আবাদপুকুর থেকে কালীগঞ্জ রাস্তার মাঝে কিছু জায়গায় পাথর ফেলা হয়েছে। আর বাকি রাস্তার কার্পেটিং তুলে রোলার দিয়ে ফেলে রাখেন ঠিকাদাররা। দীর্ঘ আড়াই বছরেও ঠিকাদার সড়কের কাজ সম্পন্ন না করার কারণে এবং দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পড়ে থাকায় রাস্তাজুড়ে বড় বড় গর্তে খানাখন্দে ভরপুর হয়ে গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে সাধারণ জনগণ। ফলে সড়কটির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলাবাসী।
রাস্তার যাত্রী মকলেছুর রহমান, বকুল, হাসান, হাবিব, রুবেলসহ আরো অনেকেই চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই সড়কে ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারি মালামাল পরিবহন, জরুরি রোগী নিয়ে রাস্তায় চলাচল করা অত্যন্ত কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। সড়কটির এমন বেহাল দশার অজুহাতে পরিবহন মালিকরা দফায় দফায় বৃদ্ধি করছেন ভাড়া। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ জনগণ। উপজেলার লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সড়কটির কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, সড়কটির নির্মাণকাজ দীর্ঘদিনেও শেষ করতে না পাড়ায় ঠিকাদারের গাফিতালির কারণে চলতি বছরের ৩ মে সড়কের কাজের চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিল করাসহ ওই প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সড়কটির কাজের জন্য নতুন ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান আছে। আর সড়কের সেতুর ও কালভার্ট নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়