শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি : চলতি সপ্তাহেই শতভাগ শিক্ষক টিকার আওতায়

আগের সংবাদ

উৎসবের গণটিকায় বিশৃঙ্খলা

পরের সংবাদ

চেকপোস্টে নেই পুলিশের তৎপরতা : বিধিনিষেধের ১৭তম দিনে মোবাইল কোর্টও নেই কোথাও

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১:০৯ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কঠোর বিধিনিষেধের ১৭তম দিনে গতকাল রবিবার সকাল থেকে ব্যস্ত রাজধানী। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই অফিসগামী মানুষ রাস্তায় বের হয়। ভোগান্তি নিয়েই সবাইকে কর্মস্থলে যেতে হয়। এদিকে বিধিনিষেধ কার্যকর করতে রাজধানীতে পুলিশের চেকপোস্টগুলোতে এখন একেবারেই ঢিলেঢালাভাব। পুলিশের তৎপরতা একেবারেই নেই। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে এবং বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে বিধিনিষেধের শুরু থেকে মোবাইল কোর্ট মাঠে থাকলেও গত চার দিন ধরে তাদের কোথাও দেখা যায়নি।
এদিকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরিঘাটে গতকাল রবিবারও ঢাকামুখী মানুষের প্রচণ্ড ভিড় হয়। কয়েকশ’ যানবাহন নদী পার হতে না পেরে ফেরিঘাটে আটকা পড়ে। বিধিনিষেধ কার্যকর করতে শুরু থেকেই একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি না মানা এবং সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় মোবাইল কোর্ট বহু মানুষকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসে। রাজধানীর উত্তরা থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বহু যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়। মোবাইল কোর্টের ভয়ে অকারণে ঘরের বাইরে বের হওয়া মানুষের চাপ রাস্তায় অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু গত চার দিন ধরে রাজধানীর কোথাও মোবাইল কোর্টের তৎপরতা দেখা যায়নি।
নগরীর বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় চেকপোস্টগুলোতে পুলিশের

ঢিলেঢালাভাব দেখা গেছে। অনেক সড়কে আগে চেকপোস্ট দেখা গেলেও গতকাল তা একেবারেই নজরে পড়েনি। মোবাইল কোর্ট না থাকার কারণে রাজধানীর সড়কে এখন প্রচুর সিএনজি অটোরিকশা যাত্রী পরিবহন করছে। গাবতলী ও আবদুল্লাহপুর সড়কে বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী মিনিবাস চলাচল করে। সড়কে শুধু অফিসগামী মানুষের চাপ বাড়েনি, গণটিকা কর্মসূচি শুরু হওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় মানুষের ভিড় হয়।
এদিকে গতকাল সকালে বৃষ্টি নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বাগড়া দেয় কিন্তু ঘরে বেঁধে রাখতে পারেনি। সবাই কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বের হয়। গণপরিবহন না চললেও দুর্ভোগ সঙ্গী করেই লোকজনকে অফিসে এবং জরুরি কাজে যেতে হয়। অফিসগামী লোকজনের পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় বের হয়েছে টিকা নেয়ার জন্য। গণটিকা কর্মসূচি চলমান থাকায় নগরীর স্থায়ী টিকাদানকেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় কমিউনিটি সেন্টার ও স্কুলে আরো টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। টিকা দেয়ার জন্য মানুষ সেখানে ছুটে যাচ্ছে- এতেও গতকাল রাস্তায় ভিড় বাড়ে। সব জায়গাতেই দেখা গেছে মানুষের দীর্ঘ লাইন। বৃষ্টিতে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা সব সড়কে অনেক বেশি চলাচল করে। রাজধানীর বনানী-কাকলি সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপ গতকাল বেশি ছিল। বিমানবন্দর সড়ক থেকে উত্তরা আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়কেও গণপরিবহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। আব্দুল্লাহপুর এলাকায় গতকালও ঢাকামুখী মানুষের ভিড় হয়। আব্দুল্লাহপুরে চেকপোস্টে পুলিশ গাড়ি থামিয়ে লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও চেকপোস্টে পুলিশের তৎপরতা তেমন দেখা যায়নি। নির্বিঘেœ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিপুলসংখ্যক সিএনজিচালিত অটোরিকশা গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। রিকশা ও প্রাইভেট কারের দাপট তো আছেই।
রাজধানীর গাবতলী এলাকায় মানুষ এবং যানবাহনের চাপ শনিবারের মতোই ছিল। হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে ঢাকায় প্রবেশ করছে। রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড় থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় পর্যন্ত মিরপুর রোডে স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চলাচল করে। সড়কের অনেক স্থানে যানবাহনের চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়। সায়েন্স ল্যাবরেটরি, কাটাবন, নীলক্ষেত, পান্থপথ মোড়, কারওয়ান বাজার মোড়ে যানবাহনের চাপে যানজটের সৃষ্টি হয়।
যাত্রাবাড়ী সাইনবোর্ড এলাকায় গতকাল কর্মব্যস্ত মানুষের ব্যাপক ভিড় ছিল। সড়কের সব দিকেই মানুষের ভিড়। ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি কেউ চলছেন রিকশা, মোটরসাইকেল আবার কেউ পায়ে হেঁটেই নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা দেয়।
১১ আগস্ট থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হলে আবার রাজধানী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে। সারাদেশে চলবে গণপরিবহন। তাই আবারো ঢাকামুখী মানুষের ঢল নেমেছে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ ঢাকায় ফিরছে।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষ মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনে বাংলাবাজার ফেরিঘাটে আসছে। ফেরির সংখ্যা কম থাকায় যাত্রীদের গাদাগাদি হয়ে পার হতে হচ্ছে। পণ্যবাহী ট্রাক-মিনি ট্রাক, ব্যক্তিগত শত শত যানবাহন ঢাকায় পারাপারের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে। ফেরিগুলো ঘাটে গিয়ে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে হুড়মুড় করে লোকজন ফেরিতে উঠে পড়ছে। এ কারণে যানবাহন স্বাভাবিকভাবে উঠতে পারছে না, তাই যানবাহনের ভিড় জমেছে।
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাট গত কয়েক দিনে ঢাকামুখী মানুষের ভিড় অনেক গুণ বেড়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়