শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি : চলতি সপ্তাহেই শতভাগ শিক্ষক টিকার আওতায়

আগের সংবাদ

উৎসবের গণটিকায় বিশৃঙ্খলা

পরের সংবাদ

কাউনিয়ায় দুগ্ধ খামারি নজরুলের সাফল্য

প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গৌতম সরকার, কাউনিয়া (রংপুর) থেকে : যুবক-যুবতিদের চাকরি নামক সোনার হরিণের পিছে না ছুটে খামার করে নিজের এবং অন্যের কর্মসংস্থান সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন নজরুল ইসলাম। কাউনিয়ায় গরুর দুগ্ধ উৎপাদন খামার করে সফলতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন খামারি নজরুল ইসলাম।
সরেজমিন উপজেলার কুর্শা শিবু মালিপাড়া গ্রামে প্রচেষ্টা খামারে গিয়ে কথা হয় খামারি নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, গ্রামীণ ব্যাংকের চাকরি শেষে কিছুটা হতাশায় পড়েন তিনি। তার স্ত্রীর পরামর্শে ৩টি গরু দিয়ে ২০১৪ সালে প্রথম খামার শুরু করেন। প্রথমদিকে তেমন লাভ না হলেও ধীরে ধীরে তার খামারে লাভ বাড়াতে থাকেন। বর্তমানে তার খামারে ২৪টি দুধের গরু রয়েছে। এর মধ্যে বাহাদুর তার নিজের একটি গরুর বাছুর। বাছুরটি যখন জন্মায় তিনি স্বপ্ন দেখেন বাছুরটিকে কোনো মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে দেশীয় পদ্ধতিতে বড় করবেন। যেই কথা সেই কাজ। শুরু করেন তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে পরিশ্রম।
স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাকে সহযোগিতা করেছে তার স্ত্রী ও তার ছোট ভাই। নিজস্ব পদ্ধতিতে তিনি আলাদা একটি শেডে রেখে বাহাদুরকে বড় করতে থাকেন। বাহাদুরের এখন বয়স ৩৩ মাস। তার ওজন হয়েছে প্রায় ৪০ মণ। ২৫ লাখ টাকা বিক্রির আশা। বাহাদুরকে এক নজর দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে।
নজরুল ইসলাম জানান, দেশীয় খাবার দিয়ে এবং ইনজেকশন না দিয়ে গরু বড় করা সম্ভব সেটি আমি প্রমাণ করতে চেয়েছি। সেই সঙ্গে বেকার যুবকদের বুঝাতে চেয়েছি চাকরির পেছনে না ছুটে একাগ্রতার সঙ্গে খামার করলে সে অন্যকে চাকরি দিতে পারবে। তিনি বর্তমানে প্রতিদিন ১২০ লিটার দুধ বিক্রি করেন। তার খামারে প্রতি মাসে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা আয় হয়। এর মধ্যে ৪ জন কর্মচারীর বেতন, গরুর খাবার, বিদ্যুৎ বিল বাবদ খরচ হয় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতি মাসে আয় হয় ৫০ হাজার টাকা। ৩ লাখ টাকা দিয়ে খামার শুরু করে এখন তার খামারে প্রায় ৬০ লাখ টাকার গরু আছে। তিনি ১ একর ২০ শতক জমিতে গরুর খাদ্যের জন্য পাকচং ঘাস চাষ করেছেন।
বর্তমানে ঘাসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, যাদের জমি আছে তারা ঘাস চাষ করেও আয় করতে পারেন। কৃষি বিভাগের সহায়তায় তিনি গরুর গোবর দিয়ে নতুন করে কেঁচো সার তৈরির শেড করেছেন। তিনি আশা করছেন এখান থেকে তার বাড়তি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হবে। তিনি বায়োগ্যাস করেছেন ফলে তার বাড়িতে রান্না করার জন্য কোনো খড়ি কিনতে হয় না। তিনি জানান, একগ্রতার সঙ্গে ধৈর্য নিয়ে খামার করলে সফলতা অবশ্যই আসবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনোজিৎ কুমার সরকার জানান, নজরুল একজন সফল খামারি। পুষ্টির চাহিদা পূরণে তিনি এলাকায় অবদান রাখছেন। সেই সঙ্গে নিজের ও অন্যের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সিরাজুল হক জানান, রংপুর জেলায় সবচেয়ে বড়মাপের ষাঁড় গরু নজরুলের খামারে। দেশীয় পদ্ধতিতে তিনি বাহাদুরকে এত বড় করেছেন। তিনি একজন সফল খামারি। নজরুল ইসলাম কাউনিয়ায় একজন সফল দুগ্ধ উৎপাদন খামারি হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়