জন্মদিন : প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যচিন্তা

আগের সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর চোখে বঙ্গমাতা

পরের সংবাদ

হোটেলে দুই ছাত্রী ধর্ষণের বিচার হয়নি ৪ বছরেও : আপন জুয়েলার্সের সাফাতসহ ৫ আসামিই জামিনে

প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার বিচার চার বছরেও শেষ হয়নি। এ ঘটনায় এক ভুক্তভোগী মামলা দায়েরের পর তদন্ত শেষে সাড়ে তিন বছর আগে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। এরপর দীর্ঘ সময় পার হলেও সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রমই শেষ হয়নি। অথচ পাঁচ আসামিই জামিনে মুক্ত হয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মূলত সাক্ষী হাজির না হওয়া ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বিভিন্ন অজুহাতেই বিচারকাজে বিলম্ব হচ্ছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। তবে শিগগিরই সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে পৌঁছবে বলেও আশা করছেন তারা। জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের পার্টির কথা বলে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ওই ঘটনার প্রায় ৪০ দিন পর ৬ মে সন্ধ্যায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে আসামি করে বনানী থানায় ধর্ষণের মামলা করেন এক ভুক্তভোগী। এরপর ১০ মে রাতে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মূল অভিযুক্ত

সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে। তদন্ত শেষে ৮ জুন সাফাতসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পরিদর্শক ইসমত আরা এমি। তারপর ওই বছরের ১৩ জুলাই ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (২)-এর বিচারক শফিউল আজম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। আসামি সাফাত ও নাঈমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯ (১) ধারা এবং অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ৯ (১) এর ৩০ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। চার্জশিটে ৪৭ জনকে সাক্ষী করা হলেও অদ্যাবধি ২১ জনের সাক্ষ্য নেয়া শেষ হয়েছে।
সাফাত আহমেদ ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাফাতের দুই বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিম ও সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলি। আসামিদের মধ্যে শুধু দেহরক্ষী রহমত আলি ছাড়া বাকি সবাই ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপরও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ না হতেই সব আসামি জামিনে মুক্ত হয়ে গেছেন।
জানতে চাইলে ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা আহমেদ (অরেঞ্জ) বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। সাক্ষী হাজির না হওয়া এবং করোনার জন্য আদালত সাধারণ ছুটিতে থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এছাড়া আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও বিভিন্ন অজুহাতে বিচারিক কার্যক্রম বিলম্বিত করছেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মামলাটি তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিলে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে। এরপর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করবেন। আশা করি, আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই এ মামলাটির রায় হবে। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজাও প্রত্যাশা করছি আমরা।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে আমরা যথেষ্ট সচেষ্ট রয়েছি। এ মামলার দ্রুত বিচার প্রত্যাশা করছি। আশা করছি, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন মোল্যা বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে মামলা হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্টেও আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়