ভূমিহীনদের ঘর পুনর্নির্মাণের দাবি বিএনপির

আগের সংবাদ

ঈদ ঘিরে লকডাউন শিথিল : ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ৮ দিন সারাদেশে বিধিনিষেধ শিথিল, আজ প্রজ্ঞাপন

পরের সংবাদ

টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ালেন মাহমুদউল্লাহ

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১২, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট ম্যাচ শেষেই লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দেবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এমন গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল রোডেশিয়ানদের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ চলার সময়ই। সেই গুঞ্জনই সত্য হয়েছে। অফিসিয়ালি লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন দেশের ক্রিকেটের অন্যতম ভরসার প্রতীক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর তার শেষ ম্যাচ উপলক্ষে সতীর্থরা একমাত্র টেস্টের পঞ্চম দিন তাকে গার্ড অব অনার দেয়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দীর্ঘ ১৬ মাস পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই ম্যাচের মাধ্যমে টেস্টে ফিরেন। আর এই প্রত্যাবর্তন টেস্টে তিনি খেলেন ১৫০ রানের অপরাজিত এক ইনিংস, যা টেস্টে তার এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। দলের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে আর ব্যাট হাতে নামার সুযোগ হয়নি তার। ফলে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারে শেষ ম্যাচটি তিনি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ রান করেই শেষ করলেন।
দীর্ঘদিন পর দলে জায়গা পাওয়ার পর ব্যাটে অসাধারণ পারফরম্যান্স করার পরপরই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর কথা শোনার পর সবাই বেশ অবাকই হয়েছিলেন। প্রথমে সবাই ভাবছিল হঠাৎ মাহমুদউল্লাহর কি এমন হলো যে তিনি টেস্ট ক্রিকেটকে ছাড়তে চাইছেন। পরবর্তীতে এটি পরিষ্কার হয়ে যায় সম্মানের সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে চান তিনি। মাহমুদউল্লাহর টেস্ট থেকে বিদায় নেয়ার কথা জানার পর বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন তিনি চান মাহমুদউল্লাহ আরো খেলুক। তবে সভাপতির কথাও রাখেননি পঞ্চপাণ্ডবের একজন মাহমুদউল্লাহ। তিনি সম্মানের সঙ্গে বিদায় নেয়ার বিষয়টিকেই স্বাগত জানিয়েছেন। খেলাধুলার ইতিহাসে কীর্তিমানদের বেশির ভাগই তাদের ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে অবসর নিয়েছেন। কারণ দীর্ঘদিন দলকে সেবা দেয়ার পর তারা সম্মানের সঙ্গে বিদায় নেয়ার বিষয়টিকেই এগিয়ে রাখেন।
যখন গুঞ্জন শোনা যায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অবসর নিতে চাচ্ছেন, তখন বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, তিনি মাহমুদউল্লাহকে বলেছেন দেশে এসে যেন এ সিদ্ধান্তটা নেন। কিন্তু বিসিবি সভাপতির কথা রাখেননি তিনি। গতকালই অবসর নিয়ে নেন। শোনা গেছে পরশু রাতে খুদে বার্তার মাধ্যমে মাহমুদউল্লাহ বিসিবি সভাপতির কাছে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। অবশ্য মাহমুদউল্লাহর এমন হঠাৎ সিদ্ধান্তে কিছুটা রেগেও গেছেন বিসিবি বস। পাপনের মতে সিনিয়র খেলোয়াড়রা এমন হুটহাট সিদ্ধান্ত নিলে অন্য সিনিয়র খেলোয়াড়রাও এমন করতে পারে। পাপন জানিয়েছেন, এজন্য তিনি খেলোয়াড়দের কাছে লিখিত নিয়েছিলেন কারা কোন ফরমেটে খেলবেন। মাহমুদউল্লাহও লিখিত দিয়েছিলেন তিনি টেস্ট খেলবেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে হঠাৎ অবসর নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় পাপন আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়েছেন। এজন্য সামনে থেকে এ বিষয়ে তিনি আরো কঠোর হবেন বলেও জানান। এ ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি বলেন, এ রকম আরো হতে পারে সামনে। অন্য সিনিয়র খেলোয়াড়রাও এ রকম করতে পারে। হঠাৎ একটা খেলার আগে বা খেলার মধ্যে বলে দিতে পারে, আমি খেলব না। এজন্যই আমরা ওদের কাছ থেকে লিখিত নিয়েছি কে কোন ফরমেটে খেলতে চায়। তবু তারা এ রকম করতে পারে। কিন্তু এভাবে চলতে পারে না। সিরিজটা শেষ হোক। এসব ব্যাপারে আমরা কঠিন পদক্ষেপ নেব।
মাহমুদউল্লাহর টেস্ট থেকে বিদায় নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় যখন দেখা যায় পঞ্চম দিনের শুরুতে তাকে সতীর্থরা গার্ড অব অনার দিচ্ছেন। এরপর টিভি ধারাভাষ্যকার শামীম চৌধুরী বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত করেন। শামিম চৌধুরী তার ধারাভাষ্যে বলছিলেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাংলাদেশ স্কোয়াডের সিনিয়র ক্রিকেটার প্রথম ইনিংসে ১৫০ রান করেছিলেন। তবে তিনি প্রত্যেককে জানিয়েছেন, টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছেন। এজন্য সতীর্থরা তাকে গার্ড অব অনার দিয়েছে। এই টেস্টের পর বাংলাদেশ দীর্ঘদিন টেস্ট ম্যাচ খেলবে না। তার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে সতীর্থরা গার্ড অব অনার দিয়েছে।
এদিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ টেস্টটি ছিল মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারের ৫০তম টেস্ট। এই ৫০টি ম্যাচের মধ্যে তিনি ৯৪টি ইনিংসে ব্যাট করে রান করেছেন ২ হাজার ৯১৪। সেঞ্চুরি করেছেন পাঁচটি। হাফসেঞ্চুরি ১৬টি। তার ব্যাটিং গড় হলো ৩৩.১১। এক ইনিংসে ১৫০ রান, তার সর্বোচ্চ। টেস্টে তিনি ৪৩টি উইকেট শিকার করেছেন।
মাহমুদউল্লাহ ওয়ানডে খেলেছেন ১৯৭টি। ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন ১৭১টি ম্যাচে। ওয়ানডেতে তিনি এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৪১০ রান করেছেন। একদিনের ক্রিকেটে তার সেঞ্চুরি তিনটি আর হাফসেঞ্চুরি ২৫টি। ব্যাটিং গড় ৩৫.০। ওয়ানডতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ১২৮ রান করেছেন। ওয়ানডেতে তিনি উইকেট শিকার করেছেন ৭৬টি।
অন্যদিকে টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ ম্যাচ খেলেছেন ৮৯টি। ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন ৮১টিতে। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত এ সংস্করণে ২৩.৯ গড়ে রান করেছেন ১ হাজার ৫০৬। টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেছেন তিনি। হাফসেঞ্চুরি করেছেন চারটি। কোনো সেঞ্চুরি নেই তার। চার-ছক্কার এই খেলায় তিনি উইকেট নিয়েছেন ৩১টি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়