মির্জা ফখরুল : করোনা নিয়ন্ত্রণে কারফিউ কোনো সমাধান নয়

আগের সংবাদ

করোনার দাপটে ডেঙ্গুর হানা : রাজধানীর হাসপাতালে দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা

পরের সংবাদ

ঈদ ঘিরে লকডাউন শিথিল : ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ৮ দিন সারাদেশে বিধিনিষেধ শিথিল, আজ প্রজ্ঞাপন

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কুরবানির ঈদের আগে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী ৮ দিনের জন্য চলমান কঠোর বিধিনিষেধের শর্ত শিথিলের পরিকল্পনা করছে সরকার। তবে এর আগে বিধিনিষেধের কোন কোন শর্ত শিথিল করা হবে তা নির্ধারণ করার জন্য গত রাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত কমিটি বৈঠক করে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত ও সরকার প্রধানের অনুমতি সাপেক্ষে আজ মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিথিল হওয়া শর্তগুলো জানিয়ে দেয়া হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, আসন্ন ঈদের কারণে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সুবিধার জন্য করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণের মধ্যেও এই ৮ দিন পর থেকে আবার ১৪ দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ শুরু করার আদেশ দিতে পারে সরকার। তবে লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত হলেও বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে। আর ভার্চুয়ালি সরকারি অফিসের কার্যক্রম চলবে। প্রসঙ্গত, আগামী ২১ জুলাই বাংলাদেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বলা হয়, করোনা মহামারি বিস্তার রোধকল্পে বিভিন্ন বিষয়ে সরকার আরোপিত বিধিনিষেধ আগামী ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত শিথিল করা হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মঙ্গলবার (আজ) প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। তবে আগামী ২৩ জুলাই থেকে আবার কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হবে।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনাসংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার গত ১ জুলাই থেকে সাত দিনের জন্য সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করে। পরে এটি ১৪ জুলাই পর্যন্ত আরো সাত দিন বাড়ানো হয়। বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে শিথিলতার ঘোষণা আসছে। তবে শিথিল হলেও কিছু বিধিনিষেধ চলবে। বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার ফলে খুলে দেয়া হতে পারে দোকানপাট, শপিং মল। শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেয়া হতে পারে গণপরিবহন চলাচলের। সবমিলিয়ে কুরবানির ঈদ সামনে রেখে সাধারণ মানুষের আর্থিক দিক বিবেচনায় নিয়ে সরকার এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, পবিত্র ঈদুল আজহায় গরু ব্যবসায়ী ও দোকান

মালিকদের কথা বিবেচনা করে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শর্ত শিথিলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। এজন্য ১৫ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত শিথিল হতে পারে। এর ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে গণপরিবহন। শর্ত মেনে খোলা যাবে দোকানপাটও।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার কারণে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে চালু হচ্ছে ট্রেন চলাচল। এর ফলে এক আসন ফাঁকা রেখে ট্রেন চলবে। প্রতিটি ট্রেনের মোট আসনের ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হবে, সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে। বন্ধ থাকবে কাউন্টার। কোন কোন রুটে কতটি ট্রেন চলবে সে ব্যাপারে আজ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পর বিকাল থেকে টিকেট বিক্রি শুরু হবে। তবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ট্রেনের সংখ্যা কম হবে বলে জানান তিনি। এছাড়াও এই আট দিনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন চলবে। একইসঙ্গে সীমিত পরিসরে খুলবে দোকানপাট ও শপিং মল। তবে বন্ধ থাকবে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সামনে কুরবানির ঈদ। বসবে পশুর হাট। মানুষ কুরবানির পশু কিনতে বাজারে যাবে। তাই এ সময়ে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক নিয়মেই এটি বড় ধরনের চাপ। কোন কৌশলে মানুষকে চলমান বিধিনিষেধের মধ্যে কুরবানির ঈদ উদযাপন করানো যায় এবং সামান্য কিছু মানুষকে দিয়ে কুরবানির পশু কেনানো যায় সে বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গত রবিবার ভোরের কাগজকে বলেছিলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বিধিনিষেধের তৃতীয় সপ্তাহ খুবই জরুরি। গত দুই সপ্তাহের বিধিনিষেধের অর্জন নির্ভর করছে তৃতীয় সপ্তাহের কার্যক্রমের ওপর। সব দিক দিয়েই ১৪ তারিখের পর থেকে পরবর্তী সাতদিন অর্থাৎ কুরবানির দিন ২১ জুলাই পর্যন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকার এবার আরো কঠিন বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে ভেবেচিন্তে পরবর্তী সিদ্ধান্ত দিতে চায়।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ১৭ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে কুরবানির পশুর হাট : ঢাকার দক্ষিণ এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় ১৭ জুলাই থেকে কুরবানির পশুর হাট শুরু হবে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনেই ১৭ থেকে ২১ জুলাই অর্থাৎ ঈদের দিন পর্যন্ত হাট চলবে। করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে কঠোর বিধিনিষেধ থাকায় গরুর হাট শুরু করা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা ছিল। এখন ঘোষণা দেয়ায়, হাটগুলো চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় একটি স্থায়ী ও ৮টি অস্থায়ীসহ মোট নয়টি পশুর হাট বসবে। দক্ষিণ সিটিতে ১০টি অস্থায়ীসহ একটি স্থায়ী হাট মিলিয়ে মোট ১১টি হাট বসবে। এই হাটগুলো ১৭ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধিগুলো যথাযথভাবে মেনে পরিচালিত হবে। এদিকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, সারাদেশের কুরবানির পশুর হাটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কাল বুধবার ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়