অমিত শাহের আশ্বাস : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত

আগের সংবাদ

বিশ্বকাপের বাঁশি বাজল কাতারে

পরের সংবাদ

রুমায় সুপেয় পানির লাইন স্থাপন প্রকল্প : ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রোয়াংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি : বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলা সীমান্তের এলাকার ও রুমা উপজেলাধীন ১নং পাইন্দু ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কানান পাড়া সুপেয় পানি লাইন স্থাপনের নামে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান উহ্লামংয়ের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বান্দরবান জেলার অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় পাইন্দু ইউনিয়নের ৪০ মেট্রিক টন চাল ও ১০ মেট্রিক টন গমসহ ৫০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয়। সরকারি মূল্য ৪ লক্ষাধিক টাকা। এতে পাঁচটি প্রকল্পে বণ্টন করে পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমাকে সভাপতি করে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়। তার মধ্যে ১০ মেট্রিক টন (চাল) বরাদ্দে একটি প্রকল্পের নাম কানান পাড়া পানি পাইপলাইন সরবরাহ।
সরকারি খাদ্যগুদাম সূত্র মতে, বর্তমান চালের মূল্য প্রতি কেজি ৪৭ টাকা ২৫ পয়সা। এই হিসাবে ১০ মেট্রিক টন বা ১০ হাজার কেজি চালের মূল্য চার লাখ ৭৫ হাজার ৩০০ টাকা।
স্থানীয়রা জানান, মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় পাইন্দু ইউনিয়নের ৪, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের গরিব ও অসহায়দের মাঝে হাঁস মুরগি ও ছাগল বিতরণ প্রকল্প। এই প্রকল্পের বিপরীতে ১০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উত্তোলন করা হলেও প্রকল্প এলাকার গরিব অসহায় লোকজনের মধ্যে কাউকে কোনো হাঁস মুরগি ও ছাগল বিতরণ করেননি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
রুমার পাইন্দু ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কানান পাড়া সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের টাকা খরচ করা দূরে থাক, পানি পাইপলাইন সরবরাহের পুরনো লাইন নষ্ট হয়ে যাওয়া পাইপের সামান্য জয়েন্ট পর্যন্ত মেরামত করা হয়নি।
কানান পাড়া কারবারী লালদনখুম বম, লালটানপার বম (৫০), লালটানপার বম ও গোলময় কিম (২৭) বলেন, আমাদের কানান পাড়ায় পানি সুবিধার বাজেট দিয়েছে সরকার কিন্তু চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা টাকা তোলে কাজ না করার বিষয়টি খারাপ লাগছে। আমরা দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেয়া আরেকটি প্রকল্প নতুন পাড়া বেসরকারি স্কুলে আসবাবপত্র বিতরণ। বরাদ্দ ১০ মেট্রিক টন। ওই বিদ্যালয়েও কোনো আসবাবপত্র বিতরণ করা হয়নি বলে জানান শুক্রমনি পাড়া প্রধান কারবারী সম্বুনাথ তঞ্চঙ্গ্যা ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনথন বম। এ ব্যাপারে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ১নং পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা বলেন, আমি আপনার সঙ্গে দেখা করব।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও প্রকৌশলী শাখার কার্যসহকারী উনেউইন বলেন, রুমার পাইন্দু ইউনিয়নের এসব গৃহীত প্রকল্পের বিপরীতে বিল ভাউচার দাখিল করলেও সেখানে দায়িত্বরত জেলা পরিষদের সদস্য জুয়েল বম কর্তৃক অনাপত্তি হয়। তখন বিল ভাউচারগুলো গ্রহণ করে মাস্টাররোল সমন্বয় সাধন হবে।
পিআইও উনেউইন বলেন, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ভারতে রয়েছেন। তিনি ফিরলে বিষয়টি তাকে সব জানিয়ে দেয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের সদস্য জুয়েল বম বলেন, প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। গৃহীত প্রকল্প এলাকার কারবারী বা প্রবীণদের সেখানে কী কাজ করা হবে তা জানিয়ে রাখছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত প্রকল্প চেয়ারম্যান বা পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং তাকে (জুয়েল বমকে) একবারও প্রকল্পের কাজ নিয়ে যোগাযোগ করেননি বলেন জুয়েল বম।
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি লালনুনোয়াম বম জানান, প্রকল্প নিয়ে কাজ না করে খাওয়া, এটা অন্যায় ও অনিয়ম। কেউ যাতে এসব দুর্নীতি করতে না পারে তাই এলাকাবাসীকে সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে প্রতিবেদন আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো যায় কিনা, সেটা তার কমিটি সভা করে মতামত নেবেন বলে দুপ্রক সভাপতি লালনুনোয়াম বম জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়