যুক্তরাষ্ট্রে অগ্নিকাণ্ডে এক বাংলাদেশি কিশোরীর মৃত্যু

আগের সংবাদ

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা : সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে মেরিনা ১০ পৌরসভায়ও প্রার্থী চূড়ান্ত

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপ মিশনে নতুন রূপে মেসি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আর্জেন্টাইন সুপার স্টার লিওনেল মেসির সময়টা যে খুব একটা ভালো যাচ্ছে, তা কিন্তু নয়। প্যারিসে এসে প্রথম গোলের আনন্দ উদযাপন করতে না করতেই হারের তিক্ত স্বাদ পেতে হয়েছে তাকে। তাও কিনা ফরাসি লিগে চলতি মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলে সেরা দশে জায়গা করতে না পারা রেনের বিপক্ষে। তবে সেসব তিক্ত স্বাদ ভুলে মেসি এবার নিজ দেশে পাড়ি দিয়েছেন ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে। বিশ্বের অন্যতম সেরা এ ফুটবলারের ফিফা বিশ্বকাপ ছাড়া অপ্রাপ্তি বলতে কিছু থাকার কথা নয়। ২০১৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে সোনার ট্রফি প্রায় হাতেই তুলে নিচ্ছিলেন মেসি। কিন্তু ভাগ্য তাকে সেদিন সফল হতে দেয়নি। তবুও থেমে নেই মেসি। ২৮ বছর পর শিরোপাবিহীন একটি দলকে চলতি বছর এনে দিয়েছেন কোপা আমেরিকার ট্রফি। কিন্তু বিশ্বকাপের আক্ষেপতো আর ঘুচল না। কাতারে ২০২২ বিশ্বকাপের মূল পর্বে যাওয়ার আগে বাছাইপর্ব টপকাতে হবে আর্জেন্টিনাকে। তাই দেশে ফিরেই প্রস্তুতি নিয়ে নিচ্ছেন মেসি। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের ম্যাচে ৮ অক্টোবর মাঠে নামছে তার দল। এরপর ১১ ও ১৫ অক্টোবর উরুগুয়ে ও পেরুর বিপক্ষে খেলতে নামবে আলবিসেলেস্তেরা। এর আগে চুলে নতুন হেয়ার কাট দিয়ে মাঠের খেলায় নতুন রূপে ফিরছেন তিনি।
কখনো ঝাঁকড়া চুল আবার কখনো লম্বা দাড়ি। লিওনেল মেসিকে তো দেখা গেছে কত রূপেই। এবার নতুন রূপে হাজির হচ্ছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। আসন্ন বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচের আগে এই রূপের সাজ শেষ করেছেন মেসি। জাতীয় দলের হয়ে তিন ম্যাচ খেলতে মেসি এখন আছেন জন্মভূমি আর্জেন্টিনায়। এখানে এসেই চুলে নতুন কাট দিয়েছেন মেসি। ফরাসি লিগের দুই সতীর্থ অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ও লিয়ান্দ্রো পারেদেসকে নিয়ে গত মঙ্গলবার ব্যক্তিগত বিমানে আর্জেন্টিনায় আসেন মেসি। দেশে এসেই ডেনে আলের কাছে চুল কাটিয়েছেন আলবিসেলেস্তেদের অধিনায়ক। আর্জেন্টিনার বেশির ভাগ শীর্ষ ফুটবলারই তার কাছে চুল কাটান। নিজেকে আর্জেন্টিনা দলের অংশ হিসেবেও মনে করেন ডেনে। তার কাছেই মেসি দিয়েছেন চুলের নতুন কাট। ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন ডেনে। যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে গেছে। আগামী ৮ অক্টোবর আর্জেন্টিনার বাছাই পর্বের মিশনের প্যারাগুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে।
লিওনেল মেসির পেশাদার ক্লাব ক্যারিয়ারের শুরু স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার মাধ্যমে। দীর্ঘ দেড় যুগ ক্যাম্প ন্যু’তে কাটিয়েছেন মেসি। আর্জেন্টিনায় জন্ম হলেও এই ফুটবল জাদুকরের স্থায়ী আবাস যেন ছিল স্পেনেই। বার্সেলোনায় ক্যারিয়ার শুরু, বার্সেলোনাতেই ফুটবল ক্যারিয়ার শেষ করতে চেয়েছিলেন মেসি। ক্লাবে অনেক বন্ধু, সতীর্থকে হারিয়েছেন মেসি। কিন্তু কখনো ক্লাব বার্সেলোনাকে হারাবেন ভাবেননি তিনি। কারণ তার ঘর, তার ভালোবাসা, তার যত অর্জন সব কিছুতেই মিশে ছিল ক্লাব বার্সেলোনা। কিন্তু নিয়তির লিখন, না যায় খণ্ডন। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ফুটবলারকে ধরে রাখতে পারেনি বার্সা। অথচ শৈশব, কৈশোরের ভালোবাসায় সিক্ত ক্লাবে শেষ পর্যন্ত থাকার কতই না চেষ্টা করল এই আর্জেন্টাইন। ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতেও নিজেকে বেঁধে রেখেছিলেন ক্যাম্প ন্যু’তে। ক্লাব যখন অর্থের অভাব দেখিয়ে বলল মেসিকে এত বেতনে রাখলে তাদের ১০০ বছর পিছিয়ে যেতে হবে, তখন তিনি নিজের বেতন ৫০ শতাংশ কমিয়ে ক্লাবে খেলে যাওয়ার ইচ্ছা পেষণ করেন। কিন্তু সে বেতন দিতেও সমর্থ ছিল না ক্লাব। লিগের নিয়মের গ্যাড়াকলে পরে শেষ মেশ মেসিকে অশ্রæসিক্ত নয়নে বিদায় নিতে হলো ক্লাব ছেড়ে।
তবে যার জন্মই হয়েছে ফুটবল খেলার জন্য, সে কি বসে থাকতে পারে? আবার ফুটবলের এমন জাদুকরকে দলে নেয়ার জন্য টাকা হাতে বসে আছে কোনো ক্লাব। বার্সেলোনা ছাড়তে না ছাড়তেই মেসিকে দলে ভিড়িয়ে নিল ফরাসি ক্লাব পিএসজি। সেখানে গিয়ে ১০ নাম্বার জার্সি রেখে মেসির গায়ে উঠল ৩০ নাম্বার জার্সি। তারকা ফুটবলারের জার্সি খুইয়ে মেসি যেন পারফরম্যান্সেও বিবর্ণ হয়ে গেলেন। বার্সেলোনার সেই দুর্দান্ত মেসিকে দেখা যাচ্ছিল না ফরাসি লিগে। ছয়বারের ব্যালন ডি’অর প্যারিসে এসে যেন ছন্দ হারিয়ে বসেছেন। অবশ্য ভাগ্য তার সঙ্গে ছেলেখেলা করছিল। তার জোরালো শট বারবার গিয়ে লাগছে বারে। পিএসজির জার্সি গায়ে খেলে ফেললেন একে একে তিনটি ম্যাচ। কিন্তু দলের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া আর্জেন্টাইন সমর্থকদের হতাশ করলেন তিন ম্যাচেই। মেসিকে পেয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপার স্বপ্ন দেখা পিএসজি হতাশ হলো চলতি মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই। ক্লাব ব্রুজের বিপক্ষে দলকে কোনো গোল এনে দিতে পারলেন আর্জেন্টাইন সুপার স্টার। ফলে তারকায় ভরপুর দলটিও এমন একটি ক্লাবের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে মাঠ ছাড়ে। তবে চ্যাম্পিয়নরা ফুরায় না। হতাশাকে শক্তিতে পরিণত করে ফিরে আসে। পরের ম্যাচেই ইংলিশ জায়ান্ট ক্লাব ম্যান সিটিকে ২-০ গোলে হারানোর দিনে দলকে গোল করে এগিয়ে দেন মেসি। অবশ্য আন্তর্জাতিক বিরতিতে যাওয়ার আগে পিএসজি সমর্থকরা আরেকবার হতাশ হয় দুর্বল রেনের বিপক্ষে ২-০ গোলের হার দেখে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়