আশুলিয়ায় ফার্নিচার গুদামে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৩

আগের সংবাদ

বাতাসে আগুনের হলকা!

পরের সংবাদ

বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা রাজনৈতিক নয় : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি জানিয়ে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা অপরাধ করেছে, তাই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আজকে বিএনপি সব জায়গায় কান্নাকাটি করে বলছে তাদের বিরুদ্ধে মামলার কথা। তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে মামলাগুলো কিসের মামলা? অগ্নিসন্ত্রাস, অস্ত্রপাচার, গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা। তারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক মামলা হয়নি, সবই হয়েছে অপরাধের কারণে। এটিই বাস্তবতা। গতকাল শুক্রবার গণভবনে কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সারাদেশের জেলের সব অপরাধীই বিএনপির কিনা- এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, বিএনপি যেভাবে বলছে ৬০ লাখ লোক তাদের গ্রেপ্তার, ৬০ লাখ তো ধারণক্ষমতাও নাই জেলে। তারপরও যতটুকু ধারণক্ষমতা আছে সবই বিএনপির লোক, এটাই তো তারা বলতে চাচ্ছে। তার মানে বাংলাদেশে যত অপরাধ- সব করে বিএনপি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ৩ হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে। বাস, লঞ্চ, রেল পুড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো কী হবে? ওদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা তো পলিটিক্যাল মামলা নয়, প্রতিটি মামলা হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাসের মামলা। তারা মানুষ হত্যা করেছে আগুন দিয়ে, ২৮ অক্টোবর যে ঘটনা তারা ঘটাল নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে, রেলে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছে। যারা এগুলো করল তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো তাদের মানুষ পূজা করবে? এসব মামলা দ্রুত শেষ করে শাস্তি দিয়ে দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ প্রধান।
আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ নয় দেখে বিএনপি এখনো কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে- এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের ভাগ্য ভালো আমরা ক্ষমতায় আছি, আমরা তাদের মতো প্রতিশোধপরায়ণ নই দেখে তারা এখনো কথা বলার সুযোগ পায়। তারা সারাদিন কথা

বলে মাইক লাগিয়ে, তারপরও বলবে কথা বলার সুযোগ পায় না। আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ না হওয়ায় এখনো কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে তারা।
তিনি বলেন, জিয়ার ক্ষমতা দখলের পর থেকে খালেদা জিয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে হত্যা নির্যাতন করেছে। এ সময় বিরোধী দলে থাকার চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ অফিসে তো আমরা ঢুকতেই পারতাম না। কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে আমাদের ওপর, আমরা তো তার কিছুই করিনি। আমরা প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত থাকিনি। আমরা আমাদের সব শক্তি-মেধা কাজে লাগিয়েছি দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে। বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে তারা চিৎকার করে- তাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। কী অত্যাচার হচ্ছে তাদের ওপর? জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগের ওপর অত্যাচারের যে স্টিম রোলার চালিয়েছিল, যেভাবে হত্যা করেছিল, খালেদা জিয়া আসার পর ২০০১ এর নির্বাচনের পর কোনো আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ঘরে থাকতে পারেনি। ধরে নিয়ে যেভাবে অত্যাচার করেছে এবং আমাদের কতগুলো নেতাকে মেরে ফেলে দিল, আহসানউল্লাহ মাস্টার থেকে শুরু করে আমাদের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ওরা শুধু আওয়ামী লীগ নয়; ওরা মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে।
যারা নুন-ভাতের কথা চিন্তা করেনি তারা এখন মাছ-মাংস নিয়ে ভাবছে : এ সময় যারা সরকারের সমালোচনা করেন তাদের উন্নয়ন হয়েছে কিনা তা বিবেচনা করার বিষয়টি উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, একসময় যারা নুন-ভাতের কথা বা ডাল-ভাতের কথা চিন্তাও করতে পারত না তারা এখন মাছ-মাংস ডিমের কথাও চিন্তা করে। ফলে এগুলো মাথায় রেখে সমালোচনা করতে হবে। বীজ, মাছ, ধান, সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে আওয়ামী লীগ সরকার বিদেশ নির্ভরতা কমিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজ বিপ্লবের সূচনা করেছিল কৃষক লীগ।
সরকারপ্রধান বলেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। নিজেদের খাদ্য নিজেরাই উৎপাদন করব। উদ্বৃত্ত থাকলে অন্যকে সাহায্য করব। কৃষির উন্নয়নে সমবায় পদ্ধতি চালু করার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এটা করতে পারলে জীবনেও কোনো খাদ্যের অভাব হবে না। সরকার বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার দেখানো পথে সমবায় কৃষি নিশ্চিত করা হলে দেশে কখনো খাদ্যের অভাব হবে না।
এর আগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।
প্রসঙ্গত ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু কৃষক নেতা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতকে কৃষক লীগের কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেন। সবশেষ ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে কৃষিবিদ সমীর চন্দকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়