পররাষ্ট্রমন্ত্রী : সোমবার ২৮৫ বিজিপি সদস্যকে ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার

আগের সংবাদ

পেঁয়াজের দাম চড়ছে ঈদের পর

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঈদের পর প্রতিদিনই বাড়ছে পেঁয়াজের খুচরা দাম। যদিও বাজারে জোগান বেশি, চাহিদা কম। তারপরও কারওয়ান বাজার আড়তে দেশি হালি পেঁয়াজের পাইকারি দাম ওঠা-নামা করছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা দরে। পাড়া-মহল্লার দোকানে এরই মধ্যে দাম ছাড়িয়েছে ৬০-৭০ টাকা। সেই পেঁয়াজ পাবনার হলে দাম আরো বেশি। অথচ মাত্রই শুরু হয়েছে হালি পেঁয়াজের ভরা মৌসুম।
অভিযোগ উঠেছে, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আবারো পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। রাজধানীতে পেঁয়াজের বড় আড়ত শ্যামবাজার থেকে এ অপচেষ্টা চলছে। ভোক্তাসহ সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, নড়বড়ে বিপণন ব্যবস্থাপনা ও কার্যকর নজরদারির অভাবে এবার ভরা মৌসুমেও পেঁয়াজের বাজার বারবার অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। আর ঈদের ছুটিতে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মাঠে না থাকায় সঠিকভাবে মনিটরিং করা যাচ্ছে না।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাইকারি পর্যায়েই পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। তাই খুচরা পর্যায়ে ৭০ টাকায় বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই। তাছাড়া বাজারে পর্যাপ্ত হালি পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের যুক্তি, ভারতের রপ্তানি বন্ধের সুযোগ নিচ্ছে অসাধু চক্র। প্রান্তিকে কৃষকের সব পেঁয়াজ একসঙ্গে কিনে ‘রাখি’ হিসেবে সংরক্ষণ করছেন বড় ব্যবসায়ীরা। সামনে দাম নিয়ন্ত্রণ করবেন তারাই। অনিয়ম এখনই না থামালে সামনে আরো বাড়বে পেঁয়াজের দর।
সংশ্লিষ্টদের মতে, পচনশীল পণ্য হিসেবে পরিচিত দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের ২৫ থেকে ৩০ ভাগ সঠিক পরিচর্যা ও সংরক্ষণের অভাবসহ নানা কারণে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বাড়তি উৎপাদনের পরও ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। ঘাটতি মেটাতে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে। আমদানি পরিস্থিতিতে একটু সমস্যা হলেই অস্থির হয়ে উঠছে পেঁয়াজের বাজার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্য অনুযায়ী, চীন ও ভারতের পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৬ লাখ মেট্রিক টন। আর দেশে চাহিদা ২৮ থেকে ৩০ লাখ মেট্রিক টন। সরকারি হিসাবে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি অন্তত ৪ লাখ থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন। এদিকে আমদানিতেও শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে পণ্যটি। শুধু ভারত থেকেই চলতি অর্থবছরে এরই মধ্যে ৭ লাখ মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। তথ্য হচ্ছে, বিশ্বে পেঁয়াজ আমদানিতে শীর্ষে এখন বাংলাদেশ, আর দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্র। গত ৫ বছর ধরে দেশে ৫ লাখ থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে বছরে। এরপরেও সরকার পণ্যটিকে নিয়ন্ত্রণে নিতে পারছে না।
ঈদের পর পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাওরান বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, ঈদের আগে থেকেই নতুন পেঁয়াজ ওঠা শুরু হয়েছে। কিন্তু ঈদের পর পেঁয়াজের দাম না কমে উল্টো আরো বাড়ছে। তিনি বলেন, হঠাৎ করে দাম বাড়ার বিষয়টি পেঁয়াজের মোকামে গিয়ে খতিয়ে দেখা উচিত।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মিনহাজ বাণিজ্যালয়ের মো. সেলিম মল্লিক বলেন, আড়ত পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকায়। ঈদের পর পর্যাপ্ত পেঁয়াজ না আসায় দাম কিছুটা বাড়তি। আর ক্রেতারা বলছেন, সপ্তাহ ব্যবধানে হালি পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়ে গেছে ২০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আবারো পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়