কাগজ ডেস্ক : জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার পথ আটকে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ পাওয়ার প্রস্তাবের ওপর হওয়া ভোটাভুটিতে ভেটো দিয়েছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়া উচিত ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মধ্যকার সরাসরি আলোচনার মধ্য দিয়ে, জাতিসংঘের মাধ্যমে নয়।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে আলজেরিয়া প্রস্তাবটির খসড়া তৈরি করেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্য হিসেবে গ্রহণ করা হোক। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় নিরাপত্তা পরিষদের ১২টি সদস্য দেশ। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড ভোটদানে বিরত থাকে। আর ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। কোনো প্রস্তাব পাস করাতে হলে নিরাপত্তা পরিষদের অন্তত ৯টি সদস্য দেশকে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিতে হয়। স্থায়ী সব দেশকে প্রস্তাবের পক্ষে থাকতে হয়। একটি দেশ ভেটো দিলে প্রস্তাব পাস হয় না। শুধু তা-ই নয়, নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হলে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেলে তবেই ফিলিস্তিন জাতিসংঘের সদস্য হতে পারবে।
ভোটের পর জাতিসংঘের মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ভাবনা ভালো ছিল। কিন্তু এদিনের প্রস্তাব সময়ের আগেই নেয়া হয়েছে। এভাবে ফিলিস্তিনকে সদস্য করা সম্ভব নয়।
ভোটের আগে মার্কিন মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় ফিলিস্তিন আলাদা রাষ্ট্রের সম্মান পাক। কিন্তু সেই আলোচনা সরাসরি ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের সদস্যদের একসঙ্গে বসে করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র সেখানে মধ্যস্থতা করতে পারে মাত্র। ১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বরে অসলো চুক্তিতে ফিলিস্তিনকে নিজস্ব প্রশাসন ও সরকার গঠনের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু তাদের রাষ্ট্রের সম্মান দেয়া হয়নি। তবে ভবিষ্যতে যেন তারা রাষ্ট্রের সম্মান পেতে পারে, সেই পথ তৈরি করে রাখা হয়েছিল।
ফিলিস্তিন জাতিসংঘের সদস্য না হলেও ২০১২ সালে তারা জাতিসংঘে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়েছে। জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ লাভের জন্য বছরের পর বছর চেষ্টা চালিয়ে আসছে ফিলিস্তিন। ২০১১ সালে পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার জন্য প্রথমবারের মতো আবেদন করে ফিলিস্তিন। কিন্তু সেই আবেদন নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ কমিটিতে মতৈক্য না হওয়ায় সেটি নিয়ে কোনো ভোটাভুটি হয়নি।
ফিলিস্তিন জাতিসংঘের অসদস্য পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হওয়ার কারণে সংস্থাটির সহযোগী ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় তারা যোগদানের সুযোগ পায়। কিন্তু জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিন কোনো ভোটাধিকার পাবে না।