গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা : অর্থ আত্মসাৎ

আগের সংবাদ

মন্ত্রী-এমপির হস্তক্ষেপে লাগাম

পরের সংবাদ

গবেষণা খাতকে গুরুত্বে নেয়া প্রয়োজন

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

একটি বিষয়বস্তু থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ওই তথ্যকে বিশ্লেষণ করে প্রাপ্ত অর্জিত ফলাফলকে গবেষণা বলা হয়। গবেষণা দেশের প্রতিটি খাতকে করে স্বয়ংসম্পূর্ণ। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আধুনিক গতিশীলতা প্রদান করে গবেষণা। গবেষণা খাত দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তিগুলোর চাকা সচল ও একটি স্বতন্ত্র সমৃদ্ধ ধারা তৈরি করে। এই স্বতন্ত্রতা দেশের পারিপার্শ্বিক অবস্থার পরিবর্তনকে যুগপৎ করে। এতে তৃণমূল ক্ষেত্রে সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য নব্য দ্বার উন্মোচিত হয় গবেষণার দ্বারা।
গবেষণার নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ও উদ্দেশ্য রয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রাকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয় গবেষণাটি। লক্ষ্যপূরণে তৎপর, সঠিক তথ্য সংগ্রহের দ্বারা সঠিক গবেষণাপত্র নির্মাণ করা সম্ভব। সঠিক লক্ষ্যমাত্রার অভাবে গবেষণাকর্ম মাঝপথে থেমে যায়। বিচ্যুত হয়ে পড়ে গবেষণার নীতিমালাগুলো। এর জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে গবেষণা থেকে কার্যকরী ফলাফল বের করলে গবেষণাটি হয়ে ওঠে অনন্য ও সর্বজনবিদিত।
একটি গবেষণার বিষয়বস্তু ও পরিধি ব্যাপক। সঠিক ফলাফল ও সুনির্দিষ্ট বিন্যাস গবেষণায় ভিন্নমাত্রা আনে। একটি গবেষণার বিষয়বস্তু যত বেশি প্রাসঙ্গিক ও বাস্তবনির্ভর হবে, গবেষণাটি প্রয়োগের সম্ভাবনা তত বেশি হবে। তদুপরি গবেষণালব্ধ বিষয়বস্তু সুশৃঙ্খল হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুশৃঙ্খল সুনির্মিত গবেষণাকৃত প্রবন্ধ বৈশ্বিক অবস্থানে দেশের মান বৃদ্ধি করে। অর্থাৎ সুষ্ঠু গবেষণাপত্র নির্মাণ বহির্বিশ্বে দেশের অন্যতম বিজ্ঞাপন হিসেবে কাজ করে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর প্রতিটি সূচক গবেষণানির্ভর। যা দেশগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর শক্তিশালী করে এবং অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড মজবুত করে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও আমাদের দেশে গবেষণাবান্ধব পরিবেশ ও সংস্কৃতি সেভাবে গড়ে ওঠেনি। উন্নত বিশ্বের শিক্ষার্থীরা গবেষণাকে অধিক প্রাধান্য দিলেও আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা তার ঠিক বিপরীত। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ও বিসিএসসহ সরকারি চাকরির পড়াশোনাকে অধিক গুরুত্বারোপ করে গবেষণাকর্মের তুলনায়। অথচ একটি মানসম্মত গবেষণাপত্র দেশের খোলনলচে বদলে দিতে পারে, সেই দিকে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের আগ্রহ তুলনামূলকভাবে কম।
আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গবেষণার প্রতি আগ্রহী করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বিষয়ভিত্তিক গবেষণার প্রতি আগ্রহী করতে হবে। শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী করতে লোভনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে। এজন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ, ফেলোশিপসহ আর্থিক সহায়তা বাড়াতে হবে। দেশে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। জাতীয় বাজেটে গবেষণার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। নিয়মিত সেমিনার, কর্মশালার আয়োজন করতে হবে। স্বল্পমূল্যে বা বিনামূল্যে গবেষণাভিত্তিক বিভিন্ন কোর্স প্রদান করতে হবে। যাতে সহজে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারে। এতে শিক্ষার্থীদের গবেষণার প্রতি জ্ঞান ও দক্ষতার বিকাশ ঘটবে। ফলে দেশীয় গণ্ডি পার হয়ে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তির ইতিবাচক পরিবর্তন আরো সাধিত হবে।

শাহ মুনতাসির হোসেন মিহান : শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়