গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা : অর্থ আত্মসাৎ

আগের সংবাদ

মন্ত্রী-এমপির হস্তক্ষেপে লাগাম

পরের সংবাদ

আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি : এপ্রিল-সেপ্টেম্বর ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুম, টিকা নেয়ার পরামর্শ

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশে সারাবছরই ফ্লু শনাক্ত হয়ে থাকে। তবে প্রতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসে শনাক্তের হার বাড়ে। জুন থেকে জুলাই মাসে এর প্রকোপ সর্বোচ্চ হয়। এ কারণে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে ইনফ্লুয়েঞ্জা মৌসুম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বছরব্যাপী ইনফ্লুয়েঞ্জা সার্ভেইল্যান্সের তথ্য পর্যালোচনা করে গবেষকরা এ তথ্য জানান। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)-এর গবেষকরা যৌথভাবে এই সার্ভেইল্যান্স করেন। গতকাল বুধবার আইইডিসিআর অডিটোরিয়ামে ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা সার্ভেইল্যান্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে গবেষকরা এ তথ্য তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (ইউএস-সিডিসি) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কারিগরি সহায়তায় এই সার্ভেইল্যান্সটি বাংলাদেশে পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে দেশের ১৯টি হাসপাতালে চলমান এই সার্ভেইল্যান্সের মূল লক্ষ্য- বাংলাদেশে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৌসুমি বৈচিত্র্য বোঝার পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের বিভিন্ন ধরন শনাক্ত করা।
সার্ভেইল্যান্সের তথ্য অনুযায়ী, স্বল্প সময়ের জ্বর এবং কাশির অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ১ লাখ ১৫ হাজারের বেশি রোগীর মধ্যে প্রায় ১১ শতাংশ রোগীর মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার উপস্থিতি পাওয়া যায়। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি ইনফ্লুয়েঞ্জা পজিটিভ রোগীদের মধ্যে প্রায় প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১ জন হাসপাতালেই মারা যান। তবে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এই মৃত্যুর হার স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস থেকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের টিকা বা ফ্লু-শট নেয়ার সুপারিশ করেন গবেষকরা। এছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা নিতে স্বাস্থ্যসেবাদানকারী, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত রোগীদের অগ্রাধিকার দেয়া উচিত বলে তারা মনে করেন।
সেমিনারে আইইডিসিআর এবং ন্যাশনাল ইনফ্লুয়েঞ্জা সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন বাংলাদেশে ইনফ্লুয়েঞ্জা সার্ভেইল্যান্স থেকে প্রাপ্ত ফলাফল তুলে ধরেন। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ, গেøাবাল হেলথ ডেভেলপমেন্ট (জিএইচডি) এবং ইস্টার্ন মেডিটার্নিয়ান পাবলিক হেলথ নেটওয়ার্কের প্রতিনিধি অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইনফেকশাস হ্যাজার্ড ম্যানেজমেন্ট অফিসার ডা. এ এস এম আলমগীর, ইউএস-সিডিসির এপিডেমিওলজিস্ট ড. গ্রেচেন কাওম্যান। আইসিডিডিআর,বি-র অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট ডা. ফাহমিদা চৌধুরী বিশ্বব্যাপী ফ্লু সংক্রমণের ধরন সম্পর্কে ধারণা দেন। সেমিনারে ২০০৭ সাল থেকে দেশব্যাপী বিভিন্ন হাসপাতালে পরিচালিত ইনফ্লুয়েঞ্জা সার্ভেইল্যান্স থেকে প্রাপ্ত ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।
অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন মৌসুম শুরুর আগেই ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা নিয়ে সুরক্ষিত রাখার প্রতি এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুমে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ইনফ্লুয়েঞ্জার একটা মহামারির আশঙ্কা এবং অ্যান্টি-বায়োটিকের অযৌক্তিক ব্যবহার প্রতিরোধের ওপর জোর দেন। এছাড়া হাত ধোয়া, মাস্ক পরা এবং কাশি দেয়ার শিষ্টাচারগুলো সারাবছর মেনে চললে শুধু ইনফ্লুয়েঞ্জা বা শ্বাসতন্ত্রের অসুখ নয়, অন্যান্য সংক্রামক রোগও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়