বেড়ানোর বাহানায় ইয়াবা পাচার, গ্রেপ্তার দুই

আগের সংবাদ

মহাসড়ক যেন মরণফাঁদ

পরের সংবাদ

মা-স্ত্রীকে আর ডাক্তার দেখানো হলো না

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) থেকে : কথা ছিল মা-স্ত্রীকে ডাক্তার দেখিয়ে এবং ত্রাণের টিন নিয়ে ফরিদপুর থেকে গ্রামের বাড়ি বোয়ালমারী উপজেলার ছত্রকান্দা আসবেন রাকিবুল ইসলাম মিলন মোল্যা। কিন্তু তা আর হলো না। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুরের এবলুম রেস্টুরেন্টের সামনে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল মিলন মোল্যা (৪২), তার স্ত্রী সুমি বেগম (৩৫), বড় ছেলে রুহান (৯) এবং ছোট ছেলে আবু সিনানকে (৬)। আর মারাত্মক আহত মা সুরাইয়া বেগমকে (৫৫) ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে আছেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। 
নিহতদের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। বাবা, ভাই, বোন, ভাবিসহ পরিবারের ও আশেপাশের লোকেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় মিলনের একমাত্র বোন রতœা বেগম মূর্ছা যান।
মিলন মোল্যা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মোল্যার ছেলে। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি মেজ। বড় ভাই ফরিদ মোল্যা আলফাডাঙ্গা আরিফুজ্জামান পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। শারীরিক প্রতিবন্ধী ছোট ভাই হাবিবুর মোল্যার আলফাডাঙ্গায় ফ্লেক্সিলোড, বিকাশের ব্যবসা করেন। একমাত্র বোন রতœা বেগমের বিয়ে হয়েছে। 
মিলন অর্থ মন্ত্রণালয়ে লিফট অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ঢাকায় থাকলেও পরিবার থাকে বাড়িতে। যৌথ পরিবার তাদের। বড় ছেলে রুহান (৯) পাশের আলফাডাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণির আর ছোট ছেলে আবু সিনান (৬) তাহেরা রাশেদ লিটল এনজেল স্কুলের নার্সারি শ্রেণির ছাত্র ছিল। গত ৮ এপ্রিল ঈদের ছুটিতে মিলন বাড়ি এসেছিলেন। পরিবারের সবার জন্য ঈদের পোশাক কিনে আনেন তিনি।
প্রতিবেশী মিম আক্তার বলেন, একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুতে আমরা শোকাচ্ছন্ন, এ শোক সইবার নয়।
বড় ভাবি হাসি বেগম বলেন, ত্রাণের টিন আনার জন্য ফরিদপুর ডিসি অফিসে যাওয়ার কথা ছিল। এজন্য পিকআপ ভাড়া করা হয়। মা ও স্ত্রীকে ফরিদপুরে ডাক্তার দেখানো হবে। এজন্য তারাও সঙ্গে যায়।

আবার ছেলে দুটো বায়না করায় তাদেরও নেয়া হয়। এক সড়ক দুর্ঘটনা সবকিছু কেড়ে নিল।
শেখর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ বলেন, নিহত মিলন আর আমি একই গ্রামের বাসিন্দা। ছেলেটি ঢাকায় চাকরি করত। বাড়িতে এলে দেখা হতো। ভালো ছেলে ছিল। কি থেকে কি হয়ে গেল বুঝতে পারছি না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়