বেড়ানোর বাহানায় ইয়াবা পাচার, গ্রেপ্তার দুই

আগের সংবাদ

মহাসড়ক যেন মরণফাঁদ

পরের সংবাদ

প্রতিমন্ত্রীর শ্যালকের লোকজন তুলে নিয়ে যান প্রার্থীকে : সিংড়ায় অপহরণের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ২

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, নাটোর ও সিংড়া প্রতিনিধি : নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারপিটের ঘটনায় জড়িত ১১ জনের পরিচয় জানা গেছে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে স্থানীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা তাদের শনাক্ত করেছেন, যাদের বেশির ভাগ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের নেতাকর্মী। এর মধ্যে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ও গাড়িচালকও রয়েছেন। লুৎফুল হাবীব তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ?মেদের শ্যালক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
তবে পুলিশ এখনো ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি। গত সোমবার বিকালের এই অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার অজ্ঞাতপরিচয় ১৫-২০ জনকে আসামি করে নাটোর সদর থানায় মামলা করেছেন দেলোয়ার হোসেনের ভাই মজিবর রহমান। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো সিংড়া উপজেলার হরোবাড়িয়া গ্রামের জাহেদুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হক বাবু ও কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে সুমন আহমেদ।
নাটোর সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, গত সোমবার বিকালে জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে থেকে কে বা কারা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ করে একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় অপহরণকারীরা দেলোয়ার হোসেনকে শারীরিক নির্যাতন করে সিংড়ার পারশাঐল গ্রামে ফেলে রেখে যায়। পরে দেলোয়ার হোসেন জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে জানান। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই দেলোয়ার হোসেনের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মামলা দায়েরর পর পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
গত সোমবার বিকালে সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাই কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুন্সিকে অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা চেয়ারম্যান প্রাথী লুৎফুল হাবিব রুবেলের বিরুদ্ধে। পরে আহত অবস্থায় দেলোয়ার হোসেনকে তার বাড়ির সামনে ফেলে গেলে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে দেলোয়ার হোসেনের ভাই আলাউদ্দিন মুন্সিকে উদ্ধার করা হয়। তবে চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেল দাবি করেন, তিনি কাউকে অপহরণ করতে বলেননি এবং তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।
দেলোয়ার হোসেনের পরিবারের সদস্যরা বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদের শ্যালক শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুল হাবীব রুবেল। গত রবিবার পর্যন্ত তার প্রতিদ্ব›দ্বী কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। কিন্তু সোমবার সকালে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে ও ব্যাংকে জামানতের টাকা জমা দেয়ার জন্য বের হন দেলোয়ার হোসেন। এ সময় তারা জরুরি প্রয়োজনে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে গেলে সেখান থেকে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসে করে কয়েকজন যুবক তার ভাই আলাউদ্দিন মুন্সিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে দেলোয়ার হোসেন নির্বাচন অফিস থেকে নেমে এলে তাকেও একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যান কয়েকজন যুবক।
এ সময় তারা তাকে গাড়ির ভিতর মারধর করেন। পরে তারা দেলোয়ার হোসেনকে বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে চলে যান। এর পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ঘটনাটি জানানো হলে পুলিশ এসে তাকে পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে তাকে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়