গজারিয়ায় পুকুর থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

আগের সংবাদ

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে অস্বস্তি

পরের সংবাদ

মাহে রমজানের বিদায়ে : ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

১৪৪৫ হিজরির সম্ভবত আজই পবিত্র মাহে রমজানের শেষ দিন। রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের
বরকতময় বার্তা নিয়ে যে পবিত্র রমজান আমাদের মাঝে এসেছিল, তা আজ বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে। সহমর্মীতার শিক্ষাদানকারী এ মাসের বিদায়ে আমাদের কেমন অনুভূত হচ্ছে? আমাদের কি খারাপ লাগছে? হৃদয়-গভীরে কি বিরহের কোনো দাগ কাটছে? যদি পবিত্র রমজানের জন্য আমাদের মনে শূন্যতা অনুভূত হয়, খারাপ লাগে আর হৃদয়ে আফসোসের রেখাপাত ঘটে, তবে বুঝতে হবে আমাদের জীবন-মানে, মন-মস্তিষ্কে এ মাসের প্রভাব কিছুটা হলেও পড়েছে এবং সেই প্রভাবের শীতল ছায়া আমাদের আচ্ছাদিত করতে পেরেছে।
বিশ্বমানবতার নবি (সা.)-এর অন্যতম সাফল্য ছিল যোগ্য উত্তরসুরী রেখে যাওয়া। সেজন্য তিনি বলেছেন, ‘খায়রুল কুরুনি কারনি সুম্মাল্লাযিনা য়ালুনাহুম সুম্মাল্লাযিনা য়ালুনাহুম’ অর্থাৎ মানবেতিহাসের সর্বোৎকৃষ্ট যুগ হচ্ছে আমার যুগ, তারপরে আমার পরবর্তী যুগ (সাহাবিগণের যুগ) এবং তারপরে হচ্ছে তৎপরবর্তী যুগ (তাবেইগণের যুগ)। মহানবি (সা.)-এর সাফল্যের পালক, যাদের পরম মমতা, সহযোগিতা ও আত্মত্যাগের মহান ভিতের ওপর দুনিয়ার ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম যুগ বিনির্মিত; তাঁদের সম্বন্ধে তাই বলা হয়েছে, ‘আস্সাহাবি কান্নুজুম বিআইয়্যি ইকতিদাইতুম ইহতিদাইতুম’ অর্থাৎ আমার সাহাবিগণ আকাশের দেদীপ্যমান তারকাসদৃশ, তোমরা তাঁদের যাঁকেই অনুসরণ করবে, হেদায়েতপ্রাপ্ত হবে। এরকম কৃতি সাহাবিগণের জীবনেতিহাস যদি আমরা পর্যালোচনা করি তবে দেখতে পাই, মাহে রমজানের বিদায়ে তাঁরা কখনোই খুশি বা উৎফুল্ল হননি; বরং অঝোর ধারায় অশ্রæ বিসর্জন দিয়েছেন। এর কারণ জিজ্ঞাসিত হলে তাঁরা জবাব দিয়েছেন, রমজানের বিদায় ঘণ্টা বেজেছে আর আমাদের আফসোস, অনুতাপ আর অনুশোচনাবোধও তীব্রতর হচ্ছে। কেননা আমাদের জানা নেই যে, এই রোজাগুলো আমাদের পরম রবের দরবারে কবুল হয়েছে কিনা আর এ-ও জানা নেই যে, মাগফিরাতের ঝাণ্ডা নিয়ে আসা এই রমজানের বরকতে আমরা নিজেদের গুনাহসমূহকে ক্ষমা করাতে পেরেছি কিনা। সাহাবিগণের কাছে মাহে রমজানের বিষয়ে প্রতিশ্রæতিশীল তাৎপর্যময়তার এটি ছিল এক অনবদ্য দৃষ্টান্ত। মূলত মহত্বের এমন সব নজির স্থাপন করার কারণেই তাঁরা পরম সত্ত্বা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হয়েছিলেন। আল্লাহপাকের ঘোষণা, ‘রাদিয়াল্লাহু আনহুম ওয়ারাদু আনহু’ অর্থাৎ মহান আল্লাহ তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তাঁরাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট।
প্রকৃতপক্ষে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি বিধানই আমাদের যাবতীয় ইবাদত পালনের অভীষ্ট লক্ষ্য। সাহাবিগণের অনুসরণে আমরাও যদি পরম রবের সন্তুষ্টি অর্জনে ব্রতী হই তবে তা হাসিলের জন্য প্রকৃষ্ট সুযোগ এই মাহে রমজানের বিদায়ক্ষণ; হৃদয়ের মানসপটে অনুতাপের রেখাপাত ঘটিয়ে আমরা পারি নিজেদের পরিশুদ্ধ করে নিতে। পবিত্র মাহে রমজানের বিদায়লগ্নে এই হোক আমাদের আরাধ্য-সাধনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়