মাদকবিরোধী অভিযান : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার ২০

আগের সংবাদ

ভোগান্তি মেনেই ঘরে ফেরা : ঈদযাত্রা

পরের সংবাদ

অভিযানে কোণঠাসা কেএনএফ

প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

# কাগজ প্রতিবেদক ও বান্দরবান প্রতিনিধি : পাহাড়ে জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’কে মদত দিয়ে আলোচনায় আসার পর সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী। ওই অভিযানে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’। গা ঢাকা দেয় সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে শান্তি আলোচনাতেও বসে। এরই মধ্যে শান্তি আলোচনার শর্ত ভঙ্গ করে আবারো পার্বত্য অঞ্চলে অপতৎপরতা শুরু করে নাথান বমের নেতৃত্বে চলা কুকি-চিনের সদস্যরা। নিজেদের সক্ষমতার জানান দিতে বান্দরবানের তিন উপজেলায় ব্যাংকে ডাকাতি, অস্ত্র লুট ও নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটায়। এতে আবারো সাঁড়াশি অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। এবারো যৌথবাহিনীর অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। অবারো গা ঢাকা দিয়ে শান্তি আলোচনায় বসার ইঙ্গিতও দিয়েছে সংগঠনটি।
অবস্থা এতটাই শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কুকি-চিনের প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বমকে (৫৫) একটি আলমারির ভেতর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কেএনএফ নেতা রোয়ান লিন বমসহ (৫৫) আরো কয়েকজনকে। উদ্ধার করা হয়েছে সন্ত্রাসীদের দুটি অস্ত্রও। তবে ঘটনার ৬ দিনেও বান্দরবানে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে লুট হওয়া ১৪টি অস্ত্র ও ৪১৫ রাউন্ড গুলির হদিস মেলেনি। গ্রেপ্তার করা যায়নি ঘটনায় জড়িত কাউকে। পুলিশ বলছে, উদ্ধার অভিযান চলছে। এদিকে থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকের তিনটি করে ছয়টি শাখার কার্যক্রম গত বুধবার থেকে নিরাপত্তার কারণে বন্ধ রয়েছে। এ কারণে তিনটি উপজেলার বাসিন্দারা লেনদেন করতে না পারায় আর্থিক কষ্টে রয়েছেন। তিনটি উপজেলায় দুটি ব্যাংকের এই ছয়টি শাখা ছাড়া আর অন্য কোনো ব্যাংকের শাখা নেই। ঈদ ও নববর্ষ সামনে থাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যাংকের

শাখাগুলো চালুর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্রলুট, মসজিদে হামলা ও অপহরণের ঘটনায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে রুমা ও থানচিতে। গতকাল রবিবার সকাল থেকে রুমার অভ্যন্তরীণ সব যান চলাচল বন্ধ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের শান্তি রক্ষার যা করণীয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তা করা হবে, কোনো সন্ত্রাসীকে ছাড় দেয়া হবে না। গতকাল রাজধানীতে ঈদ যাত্রার নিরাপত্তা পরিদর্শন শেষে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কুকি-চিনের বিরুদ্ধে সবাই মিলে পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাহাড়ে কুকি-চিনের সশস্ত্র তৎপরতাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
যেভাবে গ্রেপ্তার : সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও লুট করা টাকা-অস্ত্র উদ্ধারে বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে চলমান যৌথবাহিনীর অভিযানে কুকি-চিনের প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বম ও নেতা রোয়ান লিন বমকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)। সংস্থাটি বলছে, রুয়াছড়ি উপজেলায় জুরভাং পাড়া, খামতাং পাড়া, পাইনক্ষিয়াং পাড়া এবং রৌনিন পাড়া এলাকাগুলো সশস্ত্র কেএনএফ সদস্যদের নেতৃত্ব দেন রোয়ান লিন বম। অন্যদিকে বম জঙ্গি নেতা নাথান বমের সঙ্গে আত্মীয়তা সম্পর্ক রয়েছে চেওসিম বমের। বান্দরবানের শারণ পাড়ার মৃত রোয়াল খুব বমের ছেলে চেওসিম।
তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে র‌্যাব-১৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চেওসিম বমের বাড়ি ঘেরাওয়ের পর ভেতরে প্রবেশ করে র‌্যাব। কিন্তু কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে ঘরের স্টিলের আলমারির ভেতর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আলমারিতে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। তার কাছ থেকে দুটি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। চেওসিম বম কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক। কেএনএফ প্রধান নাথান বমের সঙ্গে চেওসিম বমের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে এইচ এম সাজ্জাদ বলেন, বান্দরবানে কেএনএফের সশস্ত্র হামলা ও ব্যাংক লুটের বিষয়ে আমরা চেওসিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করব। একইসঙ্গে কেএনএফ প্রধান নাথান বম কোথায় আছে, তাও জানার চেষ্টা করব। কারা হামলা করেছে, কাদের সহযোগিতা ছিল, তাও জিজ্ঞাসাবাদ করব।
পাশাপাশি তার সহযোগীদের অবস্থান ও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। চেওসিম বম বান্দরবান জেলায় প্রথম কেএনএফের কমিটি গঠন করেছিলেন উল্লেখ করে এইচএম সাজ্জাদ আরো বলেন, জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার নেতা শামীম মাহফুজ এবং নাথান বমের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে দুই সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণের চুক্তি নিজ বাড়িতে বসে করেছিলেন চেওসিম। এখনো নাথান বমের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয় বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে।
এদিকে, গতকাল রবিবার হেলিকপ্টারে বান্দরবানে গিয়ে রুমা ও থানচির পরিস্থিত ঘুরে দেখেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। পরে তিনি বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কার্যালয়ে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় শেষে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, পাহাড়ের সশস্ত্র দল কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) শান্তি আলোচনা শুরুর পর তাদের ‘বিশ্বাস’ করা হলেও তারা ভেতরে ভেতরে ‘ষড়যন্ত্র’ করেছে। তবে কেএনএফ এর তৎপরতায় গত কয়েক দিনে পাহাড়ে নতুন করে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ‘সম্পর্ণরূপে সক্ষম’। এই সন্ত্রাসীদের কোনো জায়গা বাংলাদেশে নেই।
ইতোমধ্যে অভিযান শুরু হয়ে গেছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আতঙ্ক দূর করার জন্যই আমরা সশরীরে এখানে এসেছি। যা আমাদের করণীয়, সর্বাত্মকভাবে করছি। ইতোমধ্যে কয়েকজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রথম ব্যাংক ডাকাতির পর পাঁচ দিন হয়ে গেছে, সেনাবাহিনী জরুরি কোনো অভিযান করেছে কিনা- সেই প্রশ্নের উত্তরে জেনারেল শফিউদ্দিন বলেন, আপনার বুঝতে হবে, এখানে যদি একটা ফোর্স ডিফেন্স নিয়ে থাকত, আমি গিয়ে অ্যাটাক করে দিলাম। এরকম কেউ ডিফেন্স নিয়ে কোথাও আছে? আপনি জানেন কোথায় কে লুকিয়ে আছে? বাংলাদেশের পাড়ার ভেতর, জনগণের ভেতর কেউ যদি লুকিয়ে থাকে, বাংলাদেশের মানুষের ওপর গিয়ে আমরা কি হামলা করব? সন্ত্রাসীরা অস্ত্র ফেলে জনগণের সঙ্গে মিশে সারা জায়গায় কোথায় কীভাবে আছে, সেইগুলো আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
কেএনএফ যে হামলা করতে পারে, তেমন কোনো আগাম তথ্য ছিল কিনা, সেই প্রশ্ন সেনাপ্রধানকে করেন সাংবাদিকরা। জবাবে তিনি শান্তি আলোচনার প্রসঙ্গ ধরে বলেন, আগাম তথ্য থাকলে তো আমরা ডেফিনিটলি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতাম। আমরা তো তাদের বিশ্বাস করেছি। তারা তো দুইবার বসেছে শান্তি আলোচনায়। তৃতীয়বারও বসার কথা। তারা কি কোনো সময় বলেছে- ‘না এটা হবে না, আমরা এটা করছি না, মানি না’। বমদের সবাই যে এসব ঘটনায় জড়িত নয়, সে বিষয়টি তুলে ধরে জেনারেল শফিউদ্দিন বলেন, যেটুকু আমি শুনেছি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে, সবাই এগুলোতে জড়িত নয়। কিছু আছে শান্তি চায়, কিছু কিছু আছে তারা চাচ্ছে না। কেএনএফ যে তাদের ফেসবুক পেজে শান্তি আলোচনা থেকে সরে আসার বিষয়ে উল্টো প্রশাসনকে দোষারোপ করেছে, সে কথা তুলে ধরে সেনাপ্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, যখন কোনো অপকর্ম করবেন, তখন তো আপনার চেষ্টাই থাকবে দোষটা অন্যের ঘাড়ে দিয়ে দেয়ার। আপনারা তো সঠিক জিনিসটা দেখতে পাচ্ছেন। আমি যেটা বলেছি, এর ভেতর কোনোটাতো গল্প বা কিছু নয়। সবই তো বাস্তব কাহিনী বললাম।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাশের দেশের’ সন্ত্রাসীদের অস্ত্র কেএনএফ এর হাতে পৌঁছেছে বলে তথ্য পেয়েছেন তারা। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে সেনাপ্রধান বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিত একটি প্রক্রিয়া চলছে। এখানে যার যার কাজের ক্ষেত্র আলাদা। সে কারণে ওই বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। পাহাড়ে সেনাবাহিনীর ১৩০টি ক্যাম্প সরিয়ে নেয়ায় সেই সুযোগ কেএনএফ নিয়েছে কি না, সেই প্রশ্নে সেনাপ্রধান বলেন, সুযোগ তো কিছুটা নিয়েছে, যেসব জায়গায় গ্যাপ হয়ে গেছে, আমরা সেগুলো কিছু আবার ফিলাপ করছি।
পাহাড়ে কুকি-চিনের সশস্ত্র তৎপরতাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার এ নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক ও শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই এলাকা ঘুরে এসেছেন। যৌথ অভিযান চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের মধ্যেই থাকবে। গতকাল দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আতঙ্কে থমথমে রুমা-থানচি : রুমা-থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, অপহরণ ও টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনায় চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে জেলার রুমা-থানচি এলাকাজুড়ে। কোথাও বিকট শব্দ হলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। সন্ধ্যা হতে না হতেই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে রুমা-থানচি বাজারের সব দোকানপাট। রুমা বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, আগে যেখানে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতেন বাজারের সবাই, এখন সন্ধ্যা সাত থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে সবাই দোকান বন্ধ করে ফেলেন।
থানচি বাজারের ব্যবসায়ী পলাশ ও সুজন দাশ জানান, ৩ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টায় সোনালী-কৃষি ব্যাংক লুট, ৪ এপ্রিল রাত ৮টায় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বাজার ও হাসপাতাল এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলায় গোলাগুলির ঘটনায় চরম আতঙ্কে দিন কাটছে থানচিবাসীর। আগে রাত ১০টা পর্যন্ত বাজারের দোকানপাট খোলা রাখলেও এখন দোকানের অর্ধেক শাটার বন্ধ অবস্থায় ব্যবসা করছেন বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ী। সন্ধ্যা নামতেই বন্ধ করে ফেলা হচ্ছে সব দোকান। আগের মতো তেমন লোকসমাগমও দেখা যাচ্ছে না বাজারে। এছাড়া বিকট কোনো শব্দ শুনলেই দোকান বন্ধ করে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছেন নিরাপদ আশ্রয় পেতে। শুক্রবার থেকে বিজিবি টহল জোরদার করলেও সব মিলে চাপা আতঙ্ক যেন পিছু ছাড়ছে না তাদের মন থেকে।
ব্যবসায়ী আবু সিদ্দিক জানান, রুমায় ব্যাংক হামলার ঘটনায় আতঙ্কে বাজার এলাকায় অধিকাংশ দোকান বন্ধ রয়েছে। এছাড়া গতকাল সকাল থেকে রুমার অভ্যন্তরীণ সব যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। তবে সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোথাও গুলির শব্দ শোনা যায়নি। মালিক সমিতির লাইনম্যান মো. জাকির জানান, সকাল থেকে বান্দরবান-রুমায় গণপরিবহন চলাচল করলেও উপজেলার অভ্যন্তরীণ সব প্রকার যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান জানান, বাজার এলাকায় আংশিক দোকান বন্ধ থাকলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকার কথা।
সোনালী ব্যাংক বান্দরবান শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মনিরুল হাসান বলেন, রুমা ও থানচি ঘটনার পর সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে অনলাইনে যে কোনো শাখা থেকে টাকা উত্তোলন করা যাবে। এছাড়া নগত ও বিকাশে ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা স্থানান্তর করা যাবে। কৃষি ব্যাংক থানচি উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপক হাসুই থোয়াই মারমাও জানালেন একই কথা। তবে রুমা উপজেলা বাজার সমিতির সভাপতি অঞ্জন বড়ুয়া বলেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে ব্যাংকের শাখাগুলোর লেনদেন শুরু করা উচিত।
উল্লেখ্য, কেএনএফের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে পাহাড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে ২০২৩ সালের ৩০ মে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠিত হয়। ওই বছরের জুলাই ও অগাস্টে কমিটির সঙ্গে কেএনএফের দুইবার ভার্চুয়াল আলোচনাও হয়। পরে ৫ নভেম্বর রুমা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মুনলাই পাড়ায় প্রথমবারের মত কেএনএফের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সরাসরি দুটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে প্রথমবারের মত প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
‘শান্তি আলোচনা’ শুরুর পর পাহাড়ে হত্যা-সহিংসতা থেকে মুক্তির আশা জাগতে শুরু করেছিল স্থানীয় জনমনে। এর মধ্যে ২ ও ৩ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা এবং থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র লোকজন। তারা ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে এবং এক ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। লুট করে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি। দুটি ঘটনাতেই কেএনএফ এর নাম আসার পর ৪ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয় সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাওয়া আর ‘সম্ভব নয়’।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়