সাবের হোসেন চৌধুরী : বনের জমি দখলে সরকারি প্রতিষ্ঠানকেও ছাড় নয়, বন কর্মকর্তার খুনিদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে

আগের সংবাদ

সর্বাত্মক অভিযানে যৌথবাহিনী

পরের সংবাদ

৬ কৃতি ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের সংবর্ধনা : সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ

প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ে সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ (অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৯)র ৬ কৃতি ফুটবল খেলোয়াড়কে সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই সংবর্ধনার দেয়া হয়। এ সময় সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ (অনূর্ধ্ব-১৯) র কৃতি খেলোয়াড় নুসরাত জাহান মিতু, তৃষ্ণা রানী ও সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ (অনূর্ধ্ব-১৬)র কৃতি খেলোয়াড় ইয়ারজান বেগম, শিউলী রাণী, বৃষ্টি রায় ও আলপি বেগম এবং টুকু ফুটবল একাডেমির কোচ ও প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আবু তাহের ওরফে টুকু রেহমান ও বোদা ফুটবল একাডেমির পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন বিপুলের হাতে ফুলের তোড়া, ক্রেস্ট ও ঈদ উপহার তুলে দেন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা। সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ (অনূর্ধ্ব-১৯) র কৃতি খেলোয়াড় ও নুসরাত জাহান মিতু ও তৃষ্ণা রানী এবং সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ (অনূর্ধ্ব-১৬) র কৃতি খেলোয়াড় শিউলী রাণী, বৃষ্টি রায় ও আলপি বেগমের বাড়ি জেলার বোদা উপজেলায়।
৫ কৃতি খেলোয়াড় বোদা ফুটবল একাডেমিতে অনুশীলন ও প্রশিক্ষণ নিয়ে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পায়। এছাড়া সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ (অনূর্ধ্ব-১৬) র কৃতি খেলোয়াড় ইয়ারজান বেগমের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের খোপড়াবান্দি গ্রামে। টুকু ফুটবল একাডেমিতে সে অনুশীলন ও প্রশিক্ষণ নিয়ে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছে। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু সাইদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সীমা শারমিন, টুকু ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আবু তারেক ওরফে টুকু রেহমান, বোদা ফুটবল একাডেমির পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন বিপুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সায়খুল ইসলাম, জেলা ক্রিয়া কর্মকর্তা গৌতম রায়সহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় সাফ অনূর্ধ্ব ১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম তার উঠে আসার গল্পে বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমার বাবা-মা ও টুকু ফুটবল একাডেমির কোচ টুকু রেহমানকে। আমি খুব কষ্ট করে পঞ্চগড়ে ফুটবল প্র্যাকটিস করতে আসতাম। ভাড়ার টাকা ছিল না। বাবা মা ও কোচের সহযোগিতায় অনেক কষ্টে অনুশীলন করে জাতীয় দলের হয়ে খেলে দেশকে সাফ অনূর্ধ্ব ১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়ন করতে পেরে নিজেকে ভালো লাগছে। অনেকে আমার বাবাকে বলতে এটা কি তোমার ছেলে নাকি মেয়ে? আমার বাবা বলতো সে আমার ছেলে ও মেয়ে দুটোই। এভাবেই নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে দেশের হয়ে খেলেছি। আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন দেশকে আরো শিরোপা এনে দিতে পারি।
সাফ অনূর্ধ্ব ১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপের খেলোয়ার শিউলী রাণী তার উঠে আসার গল্পে বলেন, আমরা যখন বোদা ফুটবল একাডেমিতে প্র্যাকটিস করতে আসতাম তখন অনেকে টিটকারী করে বলতে এরা ছোট ছোট পোশাক পড়ে, পুরুষের মতো চুল কাটে। এদের কাজ তো বিয়ে করবে, সংসার করবে, রান্না-বান্না করবে। তখন আমার মন খুব খারাপ হতো। তবে মা আমাকে এগিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। আমরা পারিবারিকভাবে খুবই অসচ্ছল। কষ্ট করে প্রশিক্ষণ নিয়ে আজ জাতীয় দলে খেলছি। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন দেশের জন্য কাপ নিয়ে এসে বাবা মাসহ সবার মুখ উজ্জ্বল করতে পারি। জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা জেলার ৬ কৃতি সন্তান ও অনূর্ধ্ব-১৬ এর ৪ জন এবং অনূর্ধ্ব-১৯ এর ২ জন মোট ৬ জন নারী চ্যাম্পিয়নশীপের খেলোয়াড়কে সংবর্ধনা দিতে পেরে আনন্দিত। ইতোমধ্যে আমরা ও অনূর্ধ্ব-১৬ এর গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগমের পারিবারিক কথা চিন্তা করে একটি সেমি পাকা বাড়ি করে দিচ্ছি। এছাড়া বাকি কৃতি খেলোয়াড়দের মধ্যে কারোর পারিবারিক সমস্যা থাকলে সে বিষয়েও আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এর আগে এই ৬ কৃতি খেলোয়াড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে পৌঁছালে তাদের ফুল ছিটিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের মাটিতে ১-১ (পেনাল্টি শ্যুাট আউটে ১১-১১) গোলে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দল এবং চলতি বছরের ১০ মার্চ নেপালের মাটিতে ভারতকে ১-১ (৩-২) গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৬ নারী ফুটবল দল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়