মির্জা ফখরুল : দলমত নির্বিশেষে ‘গণঐক্য’ গড়ার আহ্বান

আগের সংবাদ

পরিবেশবাদীদের ক্ষোভ প: সুনামগঞ্জে একসঙ্গে ৩ হাজার গাছ কাটার উদ্যোগ

পরের সংবাদ

ট্রেনে টিকেট মিলছে না, চাপ বাড়ছে বাসের টিকেটের জন্য : বিমানের টিকেট ৮৫ শতাংশ বিক্রি হয়েছে

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেব দুলাল মিত্র : ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ঢাকা ছাড়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন প্রায় ১ কোটি মানুষ। অনেকেই ট্রেনের টিকেট পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ছেন। তবে যারা ট্রেনের টিকেট পাননি তারা এখন বাসের টিকেটের জন্য ছুটছেন। বাসের টিকেটের জন্য গতকাল শুক্রবার থেকে রাজধানীর কাউন্টারগুলোতে যাত্রীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে এই চাপ ততই বাড়তে থাকবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের সময় যাত্রীদের মূল লক্ষ্য থাকে ট্রেনের টিকেট পাওয়া। কিন্তু এই টিকেটের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম থাকে। এবার ঘরমুখো মানুষের জন্য ঢাকার কমলাপুর থেকে ৩৩ হাজার ৫০০ যাত্রীর আসনের টিকেট ছাড়া হবে। এছাড়া আসনের ২৫ শতাংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে যাওয়ার জন্য স্ট্যান্ডিং টিকেট নিতে পারবেন। এই সব মিলিয়ে ট্রেনে ৫০ হাজারের কিছু বেশি যাত্রী স্বস্তির ঈদযাত্রায় সামিল হতে পারবেন। তবে ঢাকা ছাড়বে প্রায় ১ কোটি মানুষ। এই বিপুল পরিমাণ যাত্রীর ভরসাস্থল বাস। ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি একেবারেই শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যেই যারা ট্রেনের টিকেট পাননি তারা এখন বাস কাউন্টারগুলোর দিকে ছুটছেন। যেসব রুটে ট্রেন নেই, সেসব রুটের যাত্রীরা অনেকেই ইতোমধ্যে বাসের টিকেট সংগ্রহ করেছেন। ট্রেনের টিকেট যেমন অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে, বাসের টিকেটও তেমনি অনলাইনে বিক্রি চলছে। রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল কেন্দ্রিক কাউন্টারগুলোতে এখনো টিকেটের জন্য যাত্রীর দেখা তেমন একটা মিলছে না।
গতকাল শুক্রবার থেকে নগরীর পাস্থপথ, কল্যাণপুর ও আরামবাগ এলাকার বাস কাউন্টারগুলোতে টিকেট প্রত্যাশী যাত্রীদের আনাগোনা বেড়েছে বলে জানা গেছে। আরামবাগের সেন্টমার্টিন পরিবহনের কাউন্টারের কর্মী রফিকুল আলম জানান, টিকেটের জন্য লোকজনের চাপ নেই। আজ থেকে কেউ কেউ সুযোগ মতো এসে নিদিষ্ট গন্তব্যের টিকেট নিয়ে যাচ্ছেন। ট্রেনের টিকেট শেষ হলেই বাসের টিকেটের জন্য যাত্রীদের ভিড় বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বাসের টিকেটের জন্য চাঁদরাত পর্যন্ত যাত্রীদের চাহিদা থাকে, এবারো থাকবে। মহাসড়কের অবস্থা যদি ভালো থাকে, কোথাও যানজট না থাকে তাহলেই বেশি সংখ্যক ট্রিপ দিয়ে অনেক যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। রাস্তার অবস্থা খারাপ থাকলে সেটা সম্ভব হবে না। আমাদের পর্যাপ্ত বাস প্রস্তুত আছে।
নাবিল পরিবহনের কর্মী কামাল হোসেন জানান, উত্তরবঙ্গের সব জেলায় নাবিল পরিবহন যাত্রী পরিবহন করে। অনলাইনে বেশ কিছু টিকেট ইতোমধ্যেই বিক্রি হয়েছে। সড়কের অবস্থা ভালো থাকলে যাত্রীর চাপ থাকে এবং তখন বাসের ওপর

চাপ বাড়ে। সড়কের অবস্থা ভালো না থাকলে বাসের টিকেটের চাপ থাকে। এবার সবাই লম্বা ছুটি পাবে। তাই ঘরমুখো যাত্রীর চাপ এবার একটু বেশি থাকবে বলে মনে হচ্ছে। শুক্রবার থেকে এক-দুজন এসে অগ্রিম টিকেট নিয়েছেন। আবার অনেকেই টিকেট না কিনেই ফিরে গেছেন। উত্তরবঙ্গের কাউন্টারবিহীন বাসগুলো দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ডেকে ডেকে যাত্রী উঠানোর চেষ্টা করছে।
গাবতলী-কল্যাণপুরের বাস কাউন্টারগুলোতে এখন আর আগের মতো ব্যস্ততা নেই। পদ্মা সেতু হওয়ার পর বরিশাল, যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার বেশির ভাগ বাস এখন সায়দাবাদ এলাকা থেকে ছেড়ে যায়। এখন উত্তরবঙ্গের যাত্রীর সংখ্যা বেশি হলেও এখনো ঈদযাত্রা শুরু হয়নি। আগামী ৫ অথবা ৬ এপ্রিল থেকে মূলত ঈদযাত্রা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পরিবহন কর্মীরা। রাজধানীর মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে কখনোই অগ্রিম টিকেট বিক্রি হয় না। এই টার্মিনাল থেকে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার বাসগুলো আধঘণ্টা পর পর ছেড়ে যায়। যাত্রীরা এসেই টিকেট কেটে বাসে উঠে রওয়ানা দিতে পারে। এই টার্মিনাল এখনো পুরোপুরি ফাঁকা, কোথাও কোনো ধরনের ভিড় নেই। ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, সরিষাবাড়ি, নেত্রকোনা রুটের বাসগুলো এই বাস টার্মিনাল থেকেই চলাচল করে।
ঢাকা-গোপালগঞ্জ-বরিশাল-পটুয়াখালী-খুলনা রুটে চলাচলকারী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কর্মী মাইনুল জানান, সায়দাবাদ থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাসগুলো ১ ঘণ্টা পর পর ছেড়ে যাচ্ছে। অনেকেই অগ্রিম টিকেট নিয়েছেন। রাতের বাসগুলোর টিকেট বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনো যাত্রীর চাপ নেই। যাত্রীর চাপ বাড়লে পরিবহন কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত বাস চলাচনোর প্রস্তুতি নিয়েছে।
বরাবরের মতোই এবারো টিকেটে বাড়তি দাম চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিবহন নেতা শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ জানান, সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদের সময় টিকেটের দাম বেশি নেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঈদযাত্রা পুরোদমে শুরু হলে মালিক সমিতির পক্ষ থেকেও মনিটরিং করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত তৎপর থাকবে।
এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা, নভো এয়ার ও এয়ার অ্যাস্ট্রার- সব বিমান সংস্থা ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি হচ্ছে। ঈদযাত্রা উপলক্ষে প্রতিটি বিমান কোম্পানির ইতোমধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। যাত্রার আগ মুহূর্তে খরচ বেশি- এটাই অ্যাভিয়েশন খাতের প্রবণতা। তাই অধিকাংশ যাত্রী আগেই টিকেট কিনে নিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়