মির্জা ফখরুল : দলমত নির্বিশেষে ‘গণঐক্য’ গড়ার আহ্বান

আগের সংবাদ

পরিবেশবাদীদের ক্ষোভ প: সুনামগঞ্জে একসঙ্গে ৩ হাজার গাছ কাটার উদ্যোগ

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে : এপ্রিলেও চালু করা সম্ভব হচ্ছে না টোল থেকে হিস্যা চায় চসিক

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : উদ্বোধনের পর চার মাস পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি চট্টগ্রামের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ১৪টি র‌্যাম্পের মধ্যে টাইগারপাস ছাড়া আর কোনো র‌্যাম্পের কাজ শতভাগ শেষ করতে পারেনি সংস্থাটি। আগামী মাসে এটি চালু করার কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পুরোপুরি চালু করতে না পারলেও এপ্রিলে আংশিক খুলে দিতে চায় বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। যদিও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
এদিকে নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে টোলের মাধ্যমে চউক যে অর্থ আদায় করবে সেখানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন-চসিক’র হিস্যা কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, চউক এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বানাচ্ছে, টোল আদায় করবে তারা। কিন্তু সেখানে চসিকের হিস্যা কী হবে তা আলাপ করা উচিত ছিল। কারণ সিটি করপোরেশনের জায়গায় এক্সপ্রেসওয়ে বানাবেন, সিটি করপোরেশনের রাস্তা দিয়ে গাড়ি ওঠা-নামা করবে, আমরা সড়ক সংস্কারে ব্যয় করব অথচ আমাদের কোনো হিস্যা থাকবে না তা হবে না। গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত চসিকের বর্তমান পর্ষদের ৩৮তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
চউক’র তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জুনে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এরই মধ্যে একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয়। কাজ বাকি থাকলেও গত বছরের ১৪ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয় এই এক্সপ্রেসওয়ে। চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিলে যান চলাচলের জন্য পুরোপুরি খুলে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাও সম্ভব হয়নি। ১৪টি র‌্যাম্পের মধ্যে টাইগারপাস র‌্যাম্প ছাড়া ফকিরহাট, নিমতলা, জিইসি অংশের র‌্যাম্পের কাজ এখনও চলমান। বাকি র‌্যাম্পগুলোর কাজ ঈদের পর শুরু করতে চায় সংস্থাটি। সেই হিসেবে এপ্রিলেও এই এক্সপ্রেসওয়েটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। সরজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। টাইগারপাস থেকে লালখানবাজার পর্যন্ত সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। এর মধ্যে দুই লেইনের একটি র‌্যাম্প লালখানবাজার সরকারি অফিসার্স কলোনির সামনে নেমে গেছে। বাকি দুই লেইন লালখানবাজার থেকে ওয়াসা পর্যন্ত আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সঙ্গে সংযোগ করে দেয়া হচ্ছে। এজন্য পিলার নির্মাণ শেষে গার্ডার বসানো হয়েছে। এখন সড়ক নির্মাণ করা হবে। পুরো এক্সপ্রেসওয়েতে রেলিং ও লাইটিংয়ের কিছু কাজ বাকি রয়েছে।
চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নামকরণের সিদ্ধান্ত নেয় চউক। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমে তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ হয়েছিল। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। এছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন

পর্যন্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৪ নভেম্বর এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র উদ্বোধন করেন। লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এপ্রিল মাস থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার কথা ছিল।
এই প্রকল্পের পরিচালক চউক’র নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের মূল কাজ শেষ হয়েছে। তবে টাইগারপাস থেকে লালখান বাজার অংশের বেশকিছু কাজ বাকি। এছাড়া রাস্তার কার্পেটিং, লাইটিং, দুই পাশের রেলিং এখনো বসানো হয়নি, যা শেষ করতে আরও কিছুদিন লাগবে। ১৪টি র‌্যাম্পের মধ্যে ১টির কাজ পুরোপুরি শেষ। ৩টির কাজ শেষ পর্যায়ে। বাকিগুলোর কাজ শুরু হবে ঈদের পর। মূলত ইউটিলিটি সার্ভিস

লাইনগুলো সরাতে সময়ক্ষেপণ হওয়ায় এসব র‌্যাম্পের কাজ শুরু করা যায়নি। কবে নাগাদ চালু হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলতি বছরের এপ্রিলে আংশিক চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করি। র‌্যাম্প নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে সব র‌্যাম্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। যে র‌্যাম্পের কাজ শেষ হবে, সঙ্গে সঙ্গে চালু করে দেয়া হবে। এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে বিমানবন্দর থেকে লালখানবাজার আসতে আগে যেখানে দুই-তিন ঘণ্টা লাগতো, সেখানে মাত্র ২০ মিনিট লাগবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়