এমসিসিএইচএসএলে দুর্নীতির অভিযোগ

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে দুষ্ট চক্রের থাবা

পরের সংবাদ

পোড়া ক্ষত সরিয়ে নতুন বরজ তৈরির ব্যস্ততা : অর্থ সংকটে অনেক চাষি

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ইসমাইল হোসেন বাবু, ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) থেকে : ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের কৃষকদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ এখনো কাটেনি। এখনো পানবরজের ধ্বংসস্তূপের নিচে পুড়ে যাওয়া ভাগ্য খোঁজার চেষ্টা করছেন তারা। আগুনের লেলিহান শিখায় চোখের সামনেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তাদের স্বপ্ন। বেঁচে থাকার স্বাদটাই যেন এখন বিষাদে ভরে গেছে কৃষকদের।
এমন অসহায়ত্ব অবস্থায় ঘুরে দাঁড়ানোর পথ ছাড়া পানচাষিদের আর কোনো উপায় নেই। কারণ তাদের এটাই মূল পেশা। পুড়ে যাওয়া ক্ষত থেকেই নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন পানচাষিরা। বিশেষ করে পানচাষিরা পুড়ে যাওয়া বাঁশ-পাটকাঠি সরিয়ে নতুন করে বরজ তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু চাষিরা নতুন করে পান চাষে সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার দাবি জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার সরজমিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক কৃষকই নতুন করে পান বরজ নির্মাণে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করেছেন। তারা নতুন করে বরজ প্রস্তুত করতে পোড়া বাঁশ ও খুঁটি সরিয়ে নিচ্ছেন জমি থেকে। ক্রয়কৃত নতুন বাঁশ ও খড় দিয়ে ছাউনি দিচ্ছেন কেউ কেউ। কারণ পান বরজই এ এলাকার চাষিদের প্রধান অর্থকারী ফসল। এতেই তাদের সংসার চলে।
মাটিতে পোড়া গন্ধ না শুকালেও জমি থেকে পুড়ে যাওয়া বাঁশ, পাটকাঠি আর ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিয়ে নতুন করে পান বরজ তৈরিতে মনোনিবেশ করছেন অনেক কৃষক। অনেকেই আবার পান বীজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন। এ অবস্থায় প্রয়োজন প্রচুর টাকার। কিন্তু কৃষকের টাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। গত ১৬ মার্চ নগদ অর্থ এবং খাদ্য সহায়তা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দোড়গোড়ায় পৌছান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরির্দশন করে আশুস্ত করেছিলেন ৪% হারে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করে দেবেন। এমন ঘোষণায় কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। কিন্তু সেই সুযোগ কৃষকরা এখন পর্যন্ত পাননি। রায়টার চাষি রুহুল আমীন বলেন, আমার এক বিঘা জমিতে বরজ ছিল। আগুনে সব পুড়ে গেছে। এখন নতুনভাবে করতে হলে অনেক টাকা প্রয়োজন। এ অবস্থায় এনজিওগুলো ঋণ দিতেও নানা জটিলতা সৃষ্টি করছে। রায়টা নতুনপাড়া গ্রামের মিলন, সাইদুর ও মেঘনাপাড়ার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শাহজাহান আলী জানান, নতুন করে বরজ তৈরিতে প্রয়োজন হচ্ছে বাঁশ, পাটকাঠি, সুতা, তার, বাতা ও খড়। সুযোগ বুঝে এসবের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যে পাটকাঠি ছিল ৩৩০ টাকা মণ, তা এখন কিনতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। বরজ দাঁড় করাতে এখন কমপক্ষে ১ লাখ টাকা খরচ হবে। কিন্তু হাতে কোনো টাকা নেই। এমন অবস্থায় সরকারি সহযোগিতায় দ্রুত ঋণের ব্যবস্থা হলে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর কাজটি সহজ হবে। বাহাদুরপুর মাধপপুর গ্রামের পানচাষি সাফাত আলী ৪টা পান বরজ করেছিলেন। সবই আগুনে পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, হাতে তেমন টাকা পয়সা নেই। মাটি, বাঁশ ও কাশিয়াসহ (ছাউনির উপকরণ এক ধরনের তার) সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। নতুন করে পানবরজ ও পান গাছ লাগানো দায়।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ অগ্নিকান্ডে ৫টি গ্রামের সহস্রাধিক হেক্টর জমির পান বরজ, ফসলি জমি এবং বসতবাড়ি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়