এমসিসিএইচএসএলে দুর্নীতির অভিযোগ

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে দুষ্ট চক্রের থাবা

পরের সংবাদ

ওয়াটারএইডের প্রতিবেদন : পানি সংগ্রহ ও স্বাস্থ্য সংরক্ষণে দায়বদ্ধতা বেশি নারীর

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পরিবারে পানি সংগ্রহ ও স্বাস্থ্য সংরক্ষণে নারীদের দায়বদ্ধতাই বেশি। পানি সংগ্রহের সময় শারীরিক সহিংসতার শিকারও হচ্ছেন নারীরা। ওয়াটারএইডের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, পানি সংগ্রহের প্রাথমিক দায়িত্বের ৭৫ শতাংশ ও স্বাস্থ্য সংরক্ষণের ৭৯ শতাংশ দায়িত্ব বহন করেন নারী ও কিশোরী মেয়েরা।
গতকাল রাজধানীর বনানীর রয়েল পার্ক হোটেলে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশের মনিটরিং, ইভালুয়েশন, রিসার্চ এবং লার্নিং ম্যানেজার মো. মাহাদী হাসান। তিনি জানান, গবেষণাটি চারটি সিটি করপোরেশন এবং তিনটি পৌরসভায় নিম্ন আয়ের কমিউনিটিতে পরিচালিত হয়। ৫৫০টি পরিবারকে যুক্ত করা হয়- যেখানে ৩৩০ জন নারী এবং ২২০ জন পুরুষ ছিলেন।
সুইডেনের দূতাবাসের আর্থিক সহযোগিতায় ওয়াটারএইড বাংলাদেশের প্রকল্প ‘ওয়াশ ফর আরবান পুওর’ শীর্ষক প্রতিবেদনে পানি ও স্যানিটেশন পরিষেবায় লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়ে গভীর বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, গতানুগতিক জেন্ডার ভূমিকার কারণে নারীদের ওপর পরিবারের কাজ এবং পানি সংগ্রহ করার দায়িত্ব চলে আসে। নিজের পরিবারের জন্য পানি সংগ্রহের কাজটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নারীরাই করে থাকেন, যেখানে এই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা ছেলেদের তুলনায় প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ। ৬২ শতাংশ নারী ৫০০ থেকে এক হাজার মিটার পথ পাড়ি দিয়ে পানি সংগ্রহ করেন। ২৩ শতাংশ নারীকে ১ কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়। এভাবে পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে ৬৬ শতাংশ নারী মৌখিক সহিংসতার ও ১৪ শতাংশ নারী শারীরিক সহিংসতার শিকার হন। তাছাড়া নারী ও কিশোরী মেয়েরা বাড়ির বাইরে টয়লেট ব্যবহার করার সময় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনিরাপদ বোধ করেন।
জেন্ডারভিত্তিক পক্ষপাতের কারণে নারীরা জীবিকা উপার্জনে সময় ব্যয় করতে পারে না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এই সমস্যা সমাধানে ওয়াটারএইড কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনাও তুলে ধরে। এগুলোর হচ্ছে- জাতীয় নীতি, আইন এবং প্রতিষ্ঠানগুলোতে জেন্ডার সমতার দৃষ্টিভঙ্গির অবতারণা এবং তার নিয়মিত চর্চা, গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে জেন্ডারভিত্তিক সেবা এবং জলবায়ু-সহনশীল ওয়াশ উদ্যোগগুলো আরো বৃদ্ধি করা, যে কোনো প্রকল্প প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে বাধ্যতামূলক জেন্ডার চেকলিস্ট এবং সেই সম্পর্কিত নির্দেশিকা প্রণয়ন এবং ব্যবহার নিশ্চিত করা, টেকসই ওয়াশের জন্য সামাজিকভাবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পারস্পারিক সমন্বয় এবং সহযোগিতা নিশ্চিত করা।
এই বিষয়ে ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, নারীদের উন্নতি ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সামাজিক মূল্যবোধ পরিবর্তন করতে হবে। পরিবার, সমাজ ও প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ সব স্তরে এবং সব পর্যায়ে নারীদের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
সুইডেন দূতাবাসের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সমাধান আমাদের হাতের মুঠোয়, আমাদের শুধু একটি ন্যায্য এবং সমতার সমাজ নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে সমস্ত লিঙ্গের মানুষ সমান সেবা এবং অধিকার পাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়