এমসিসিএইচএসএলে দুর্নীতির অভিযোগ

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে দুষ্ট চক্রের থাবা

পরের সংবাদ

অনুমোদনহীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কিছু কথা

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পরিসংখ্যান করলে দেখা যাবে ঢাকা শহরে অপরিকল্পিতভাবে অনুমোদন ব্যতীত বিভিন্ন আবাসিক, বাণিজ্যিক ও বহুতল ভবনে ব্যাঙের ছাতার মতো যত্রতত্র গড়ে উঠেছে জমজমাট রেস্তোরাঁ ব্যবসা। নিয়ম মোতাবেক যে কোনো ভবনে রেস্তোরাঁ করতে হলে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও ছাড়পত্র নিতে হয় এবং ফায়ার সেফটি প্লান অনুযায়ী যথাযথ অগ্নিসুরক্ষা ব্যবস্থাসহ নিরাপত্তাজনিত সব প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ ও স্থাপন করা অত্যাবশ্যক। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও ছাড়পত্র ছাড়া রেস্তোরাঁ স্থাপন, সঠিকভাবে নিরাপদ স্থানে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার স্থাপন না করা ইত্যাদি অবহেলাজনিত কারণে নিজেদের সৃষ্ট দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৬ জনের প্রাণহানি ও বহু মূল্যবান সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যা সত্যিই মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশে সাধারণত দুটি কারণে জীবননাশ ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এক ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’, দুই ‘নিজেদের ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণে সৃষ্ট দুর্যোগ’। গ্রিন কোজি কটেজের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড তথা জীবননাশ ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি নিজেদের সৃষ্ট দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা।
প্রতিটি দেশে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স ফায়ার সেইফটি রেগুলেটরি বোর্ড হিসেবে কাজ করে থাকে। দুর্ভাগ্যজনক আমাদের দেশে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স পাকিস্তান সময়ের দমকল বাহিনী থেকে কাগজে কলমে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স হয়েছে; কিন্তু তাদের কোনো বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হয়নি। সারাদেশে সর্বমোট ৬২৭ জন ফায়ার ইন্সপেক্টর পদ রয়েছে, এর মধ্যে মাত্র ২৮৫ জন কর্মরত রয়েছে বাকি ৩৪২ জনের পোস্ট রয়েছে কিন্তু নিয়োগ নেই। অগ্নিদুর্ঘটনা রোধ করতে হলে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সকে ঢেলে সাজাতে হবে। তাদের আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনিং করাতে হবে এবং অগ্নিদুর্ঘটনার পূর্বেই স্থাপনাগুলোকে সরজমিন পর্যবেক্ষণ করে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ এই তিন শ্রেণিতে ভাগ করে দীর্ঘমেয়াদি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। যেন ভবন বা কারখানা মালিকরা তাদের স্থাপনায় অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্থাপন করতে পারে, সেই সঙ্গে সব স্টেক হোল্ডার এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সংগঠন এফবিসিসিআইকে সঙ্গে নিয়ে একটি ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স গঠন করতে হবে। সেই ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে। আমাদের নিজস্ব সচেতনতা ও বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি বাড়ানোর জন্য অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধ করার সক্ষমতা অর্জনের বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে আগুন শুধু সম্পদকে ভস্মীভূত করে না মানুষের জীবনেরও হানি ঘটায়, তাই এর থেকে রক্ষা করার জন্য সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও তদারকির মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে অগ্নি-সরঞ্জামাদি ৯৫ ভাগ আমদানিনির্ভর এবং বন্দর থেকে খালাস পর্যায়ে ২৫-৬০ ভাগ শুল্ক ও ভ্যাট পরিশোধ করতে হয়। এই সেক্টরের উন্নয়নে এই সব পণ্য থেকে আরোপিত শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে যেন মানুষ স্বল্প খরচে এসব সরঞ্জামাদি স্থাপন করতে পারে। সেই সঙ্গে লক্ষ রাখতে হবে যেন কোনো মানহীন পণ্য বাজারে প্রবেশ না করে। সেই জন্য বিএসটিআইর কায়িক পরীক্ষার যন্ত্রাংশের মান বৃদ্ধি করতে হবে।

মো. নিয়াজ আলী চিশতি : সভাপতি, ইসাব
পরিচালক, এফবিসিসিআই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়