আমাদের অদম্য অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান

আগের সংবাদ

বাজার তদারকি দৃশ্যমান নয়

পরের সংবাদ

গৌরীপুরে শতকোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে লুটপাট : অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : জেলার গৌরীপুর উপজেলায় ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অস্তিত্বহীন ও ভুয়া প্রকল্পে সরকারের শতকোটি টাকার উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে সরজমিন অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট মহলের ভেতরে-বাইরে।
সূত্র জানায়, ২০২২-২৩ এবং ২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের শতকোটি টাকার উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এতে অস্তিত্বহীন ও ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে বরাদ্দের টাকা নয়-ছয় করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। এর মধ্যে অনেক প্রকল্প কাগজপত্রে থাকলেও বাস্তবে নেই। অনেক প্রকল্প নামকাওয়াস্তে বাস্তবায়ন হলেও হরিলুট হয়েছে বরাদ্দের বেশিরভাগ অর্থ। সেই সঙ্গে এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন কমিটিতেও রয়েছে ব্যাপক অসঙ্গতি। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি ও স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্রে বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে এসব প্রকল্প।
অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতাসীন একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের যোগসাজসে এসব উন্নয়ন প্রকল্পে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এতে বলিরপাঠা হয়েছে অতি উৎসাহী তৃণমূলের কিছু রাজনৈতিক নেতাকর্মী। তাদের পরিচয় ও সই-স্বাক্ষরে প্রকল্পের টাকা উত্তোলন হলেও তারা আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন নামেমাত্র। বাকি বরাদ্ধের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ও প্রভাবশালীদের মধ্যে। এতে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরাও রয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমার নাম ও স্বাক্ষরে প্রকল্পের টাকা উঠেছে বলে শুনেছি। কিন্তু আমি এসব প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই জানি না। বিগত কয়েকদিন আগে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে একজন আমাকে ফোন দিয়েছিল। তখন আমি এই বিষয়টি জানতে পারি।
স্থানীয় একাধিক ইউপি সদস্য জানান, প্রকল্পসংক্রান্ত এবং প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের তথ্য চেয়ে উপজেলা প্রশাসন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও একাধিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছে দুদক। এসব কারণে সংশ্লিষ্টদের ভেতরে গুঞ্জণ সৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধি ফেঁসে যাওয়ার আতঙ্কে ভুগছেন বলেও জানান তারা। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. সোহেল রানাসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে হরিলুটের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রভাবশালী মহলের প্রত্যক্ষ মদদ ও ইন্ধন থাকলেও কাগজপত্রের নয়-ছয়ে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছেন পিআইও।
সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে চাকরিতে যোগদানের পর পিআইও মো. সোহেল রানা বিগত ৪ বছর ধরে একটানা একই কর্মস্থলে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এতে স্থানীয় প্রভাবশালী এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে তার ভাগ-বাটোয়ারার সখ্যতা দীর্ঘদিনের।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. সোহেল রানা বলেন, দুদকের চিঠি পেয়ে ২২-২৩ অর্থবছরের তথ্য অনেক আগেই দেয়া হয়েছে। এখন আবার ২৩-২৪ অর্থবছরের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক। তার দাবি, স্থানীয় রাজনৈতিক কোন্দলের কারণে দুদকে এই অভিযোগ দেয়া হয়েছে, না হলে এই অভিযোগ উঠত না।
এ বিষয়ে দুদক ময়মনসিংহের উপসহকারী পরিচালক মো. আনিসুর রহমান বলেন, অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান আছে, এখনই এ নিয়ে মন্তব্য করার সুযোগ নেই। সরজমিন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানানো যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়