সাইফুল ইসলাম সুমন, জুড়ী, (মৌলভীবাজার) থেকে : জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে সহকারী ব্যবস্থাপকের ওপর শ্রমিকের হামলার ঘটনায় দিলকুশা চা বাগান আকস্মিক বন্ধ ঘোষণা করে বাগান ছেড়ে চলে গেছেন ওই ব্যবস্থাপক।
এদিকে বাগান বন্ধের ঘোষণার খবর পেয়ে প্রায় ৬০০ শ্রমিক গত শুক্রবার ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
দিলকুশা চা বাগানের শ্রমিকদের সূত্রে জানা গেছে, ‘হামদর্দ টি কোম্পানি’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ইজারা নিয়ে এই চা বাগানটি পরিচালনা করছে। বাগানে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৬০০ নারী-পুরুষ শ্রমিক রয়েছেন। গত ১৩ এপ্রিল রাতে বিপুল বুনারজি নামে বাগানের এক শ্রমিক সহকারী ব্যবস্থাপক শিপলু তালুকদারের বাংলোতে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলার চেষ্টা চালান। এ সময় ওই শ্রমিককে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে বিপুলকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন শ্রমিকরা।
পরে বিপুল শ্রমিকদের জানান, বাগানের প্রধান করণিক বলাই বসাকের সঙ্গে সহকারী ব্যবস্থাপক শিপলু তালুকদারের দ্ব›দ্ব রয়েছে। এর জের ধরে বলাই তাকে ব্যবহার করেন। গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা ব্যবস্থাপক সাঈদুজ্জামানের কার্যালয়ে গিয়ে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে দুই-একদিনের মধ্যে বিষয়টি মীমাংসার জন্য অনুরোধ করলে ব্যবস্থাপক আগামী ২৬ এপ্রিল বৈঠক হবে বলে জানান। সময় পেছানোয় এ সময় শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে ফিরে যান।
গত শুক্রবার বাগানে সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। এদিন সকালে শ্রমিকরা বাগান বন্ধ ঘোষণার খবর পেয়ে ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে গিয়ে দেখেন তিনি নেই এবং দেয়ালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণ দেখিয়ে বাগান বন্ধের নোটিস সাঁটানো। ব্যবস্থাপক পরিবার নিয়ে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চলে গেছেন বলে জানতে পারেন। বলাই বসাকও বাগান ছেড়ে চলে যান। এ খবরে প্রায় তিনশ শ্রমিক ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে তাদের সঙ্গে অন্য শ্রমিকরাও যোগ দেন। খবর পেয়ে দুপুরের দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং, জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবীর ও গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম চা বাগানে গিয়ে পরিস্থিতির সমাধানে বাগানের ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ বিষয়ে ব্যবস্থাপক মো. সাঈদুজ্জামান মোবাইল ফোনে বলেন, বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি দেখা দেয়ায় কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে বাগান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে নোটিসের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে বাগান খোলার সিদ্ধান্ত হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।