আমাদের অদম্য অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান

আগের সংবাদ

বাজার তদারকি দৃশ্যমান নয়

পরের সংবাদ

উচ্চবিত্তের জন্য জমকালো পসরা সাজিয়েছে ভাসাবি : পাঞ্জাবির দাম পৌনে ২ লাখ টাকা!

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রুমানা জামান : গাঢ় সোনালি রঙের কাতান কাপড়ের ওপর ভরাট ডিজাইনের জারদোসি কাজ, জমকালো লুক আনতে পেটানো জারদোসি কাজের ফাঁকে ফাঁকে দেয়া হয়েছে চারগ্রাম গোল্ড জরি স্পিকিংয়ের মসৃণ ফিনিশিং। উঠানো গলা, সামনের পার্টের নিচের দিকে কাটা। বাড়তি আরামদায়ক করতে নিচের পার্টে সেট করা হয়েছে মোলায়েম কটনের ইনার। সঙ্গে রয়েছে সিল্কের অফ হোয়াইট রঙের প্যান্ট কাটিংয়ের পায়জামা। ভারতীয় ডিজাইানার মনোজ আগারওয়ালের ডিজাইন করা শেরোয়ানি স্টাইলের এই পাঞ্জাবির দাম ১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কেনাকাটায় উচ্চ বিত্তদের প্রধান ভসরাস্থল ‘ভাসাবি’ ফ্যাশনওয়ারের সব আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে এ পাঞ্জাবি। দোকানিরা জানান, কাপড়ের মান, মনকাড়া ডিজাইনের কারণে এবারের ঈদের সর্বোচ্চ প্রাইস হিসেবে ভারতের মুম্বাই থেকে আনা হয়েছে এই পাঞ্জাবিটি। ভাসাবির সেকশন ইনচার্জ ফরিদ আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, ঈদের বেশ আগেই আমরা বোম্বে গিয়ে শাড়ি, পাঞ্জাবি, ড্রেসসহ সব ধরনের পোশাকের ডিজাইন পছন্দ করে অর্ডার দিয়ে আসি। পরে সেখান থেকে পুরো রেডিওয়্যার তারা পাঠায়। তিনি বলেন, অনেকেই ঈদে আনকমন ডিজাইনের কিছু পড়ব; ঈদের কেনাকাটা করতে তারা এখানে আসেন। বিত্তবানরাই এখানে আসেন; যারা ভাসাবি থেকে কেনেন তারা মাইন্ড সেই করেই আসেন এখান থেকেই পোশাক কিনবেন।
ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাকের বাহারি আয়োজন থাকছে ভাসাবিতে। প্রতিবছরের মতো এবারো ঈদের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে এক্সক্লুসিভ পোশাকের সমাহার এবং ব্রাইডাল কালেকশন। ক্রেতারা এক ছাদের নিচেই পাচ্ছেন বিদেশি সব ব্র্যান্ডের পণ্য। রোজার মধ্যভাগে ক্রেতাসমাগম একটু কম থাকলেও ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে; ততই জমে উঠবে ভাসাবি। ভাসাবির সব আউটলেটেই রয়েছে থাইল্যান্ড, দুবাই, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সব ধরনের শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, শেরোয়ানি, পাগড়ি ও নাগড়া। পাওয়া যাচ্ছে কলকাতা, মুম্বাই, বেনারস থেকে আমদানি করা বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি, থ্রি-পিস ও লেহেঙ্গা। কোরিয়া ও থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা ব্যাগ, প্রসাধনসামগ্রী ও স্যান্ডেল রয়েছে বিভিন্ন দোকানে।
ভাসাবির গুলশান-১ শো রুম ঘুরে দেখা গেল, ৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৮৯ হাজার টাকার পাঞ্জাবি, তিন লাখ টাকার লেহেঙ্গা, ৬ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকায় শাড়ি, ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকায় বাচ্চাদের একটি পোশাক। ঈদের বাজারে ব্যয়বহুল এসব

পোশাকের ক্রেতাও কম নয়। ঈদে উচ্চবিত্ত ক্রেতাদের আগ্রহ থাকে বিদেশি চেইনশপগুলোর দিকে।
ঈদের শপিংয়ের জন্য যারা প্রতিবেশী দেশে পাড়ি জমান, মূলত তাদের চাহিদার কথা ভেবেই ব্যয়বহুল ঈদ পোশাকের পসরা সাজায় ভাসাবির মতো অভিজাত এই দোকানগুলো। গুলশান-১ ভাসাবির আউটলেটের তিনতলায় শুধুই জুয়েলারি। যেখানে সব বয়সি নারীদের জন্য রয়েছে নেকলেস, ব্রেসলেট, চুড়ি, কানের দুল ও আংটিসহ বাহারি গহনা। ড্রেসের সঙ্গে ম্যাচ করে গহনা কেনার বড় জায়গা ভাসাবি। প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় রয়েছে নারী ও পুরুষের জন্য রকমারি পোশাকের আলাদা কর্নার। চান্দিরি, উপারা, তুষার, আসাম, কোরা ও বেনারসি কটনসহ নানা কটন কাপড়ের ঈদ কালেকশন রয়েছে ভাসাবিতে। আছে ছোট ছেলেদের জন্য আকর্ষণীয় ডিজাইনের জুতা, শেরোয়ানি ও পাঞ্জাবি। মেয়েদের জন্য গাউন, লেহেঙ্গা, সারারা ও সেলোয়ার-কামিজসহ বাহারি পোশাক।
বোনকে নিয়ে একসঙ্গে দু-তিনটি শাড়ির ভাঁজ খুলে দেখছিলেন ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী যুথি সায়মা রহমান। ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, সারা বছরই ভাসাবি থেকে কেনাকাটা করি। এখানকার কাপড়ের মানের সঙ্গে দামের সমন্বয় করলে ঠিকঠাক পুষিয়ে যায়। মনের মতো সব পোষাক ভাসাবিতেই মিলে জানিয়ে সায়মা বলেন, এখান থেকে কাপড় কিনে ভীষণ স্বস্তি পাই, বাড়তি সুবিধা হলো- কিনে দিয়ে গেলে ওরাই ফিটিং করে দেয়।
দ্বিতীয় তলায় সামনের দিকে বাচ্চাদের পোশাকের কর্নারে দেখা মিলল ছোট্ট মৌমির সঙ্গে। একটা গোলাপী রঙের ফোলানো বারবি ড্রেস হ্যাংঙ্গার থেকে খুলে হাতে নিয়ে দৌড়ে ছুট মায়ের কাছে। আদুরে গলায় মাকে বলল, ‘আম্মু এতা নিব, কিনে দাও’? মৌমি মনির কি এই জামাটা পছন্দ? প্রশ্ন করতেই লাজুক গলায় মাথা নেড়ে বলল- হুম খুব পছন্দ, মেয়ের কথা শুনে হেসে দিলেন মা যুথিও। দোকানিরা জানালেন, ছোট্ট মৌমির পছন্দের ড্রেসটির দাম ৬ হাজার টাকা।
অফিসে কাজের চাপ ও মার্কেটে ভিড় কম থাকায় একটু আগেভাগেই পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফিরোজ খান। অনেক দেখে মা, শাশুড়ি ও স্ত্রীর জন্য তিনটি শাড়ি কিনেছেন। সঠিক দামে পছন্দের শাড়ি পেয়ে তার মন ভালো।
ভাসাবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল জামান মোল্লা জানান, ঈদের পোশাকগুলো ক্রেতারা যাতে প্রথম দেখাতেই পছন্দ করেন, সেই লক্ষ্যে মুম্বাই থেকে নিয়ে আসা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়