পাঠ্যবই থেকে বিতর্কিত দুই লাইন প্রত্যাহারের আহ্বান চুন্নুর

আগের সংবাদ

চাঁদাবাজির লাইসেন্স ‘ইজারা’

পরের সংবাদ

উন্নত গবেষণাগার না থাকায় গবেষণায় পিছিয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গবেষণার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। এক্ষেত্রে উন্নতমানের গবেষণাগার না থাকাকেই অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, দেশে সংক্রামক এবং অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি ও বোঝা বাড়ছে। কিন্তু এসব রোগের প্রকৃত চিত্র বুঝতে হলে প্রয়োজন গবেষণা। প্রকৃত চিত্রটা জানা গেলে রোগ প্রতিরোধ, ওষুধসহ নানা উদ্যোগ নেয়া সহজ হয়।
গবেষণা কম হলেও স্বাস্থ্য খাতে একেবারেই যে ভালো গবেষণা হচ্ছে না তা মানতে রাজি নন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন গবেষণা হলেও সেই তথ্যগুলো সঠিকভাবে প্রকাশ ও প্রচার হচ্ছে না। ফলে তথ্যগুলো সাধারণ মানুষ জানতে পারছে না। সরকারি গবেষণাগারগুলোকে আরো বেশি সক্ষম করে তোলার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি গবেষণার ফল প্রচারে আরো বেশি দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানান তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্ল্যানিং মনিটরিং অ্যান্ড রিসার্চ (পিএমআর) আয়োজিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে গতকাল সোমবার এসব কথা বলেন অংশ নেয়া বিশেষজ্ঞরা। সকালে সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে তিনটি সেশনে প্রকাশ করা হয় বিষয়ভিত্তিক ১৪টি গবেষণা প্রতিবেদন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রশ্নপত্রের ভিত্তিতে এই গবেষণাগুলো করা হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিএমআর’র লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মাজহারুল ইসলাম। আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির ও জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
দেশের হাসপাতালগুলোতে সংক্রমণ রোধ ও নিয়ন্ত্রণের (আইপিসি) অবস্থাবিষয়ক এক গবেষণায় বলা হয়, বেশির ভাগ হাসপাতালে আইপিসি কমিটি আছে। কিন্তু অধিকাংশ কমিটি কার্যকর নয়। অধিকাংশ হাসপাতালেই নেই আইপিসির জন্য নিদিষ্ট জনবল। সরকারি ৬০ শতাংশ হাসপাতালে আইপিসি ব্যবস্থাপনা নেই। আর বেসরকারি হাসপাতালের ৫০ শতাংশে এই ব্যবস্থাপনা নেই। ফলে হাসপাতাল থেকে যেসব রোগের সংক্রমণ হয় সেটি বাড়বে। এই সংক্রমণ মারাত্মক ও এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়। এছাড়া এই গবেষণায় দেখা গেছে, এন্টিবায়োটিক কীভাবে ব্যবহার করা হবে এর একটি গাইড লাইন থাকলেও হাসপাতালগুলোতে তা মানা হয় না। এক চতুর্থাংশ হাসপাতালে ‘হেন্ড হাইজেনিং স্টেশন’ অর্থাৎ যেখানে হাত ধোয়ার জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নেই। প্রতি বেডে একজন করে রোগী থাকার কথা থাকলেও হাসাপাতালগুলোতে বেডের চেয়ে বহুগুণ

বেশি রোগী থাকছে। উন্নত দেশে আইপিসি হার ৩ থেকে ৫ শতাংশ হলেও এশিয়ার দেশগুলোতে এই হার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ।
নিরাপদ খাদ্য ও জনস্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায় দেখা গেছে, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে দেশে আইন, নীতিমালা ও বিধিমালা রয়েছে ১৫২টির মতো। আইনের অভাব না থাকলেও সেগুলোর বাস্তাবায়ন খুব একটা নেই। যে কারণে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
তথ্যর ঘাটতিসম্পর্কিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্বাস্থ্য খাতের যে ৪০টি সূচক রয়েছে এসব ক্ষেত্রে সরকার কাজ করলেও পরিপূর্ণ তথ্য নেই। এ ৪০টি সূচকের মধ্যে চারটির কোনো সঠিক তথ্যই নেই। অন্যদিকে, ১০ সূচকের আংশিক তথ্য রয়েছে। আর বাকি ২৬টি সূচকের যাচাই করার মতো তথ্য আছে, তবে তা পরিপূর্ণ নয়। যে চারটি সূচকের কোনো তথ্য নেই, তা হলো- জন্মহার, অনিরাপদ পানি ও অনিরাপদ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধির অভাবে মৃত্যু হার, স্বাস্থ্য সুযোগ-সুবিধার অনুপাত (যেখানে সাশ্রয়ী মূল্যের প্রাসঙ্গিক প্রয়োজনীয় ওষুধের সুবিধা রয়েছে) এবং নির্বাচিত এন্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার কারণে রক্তপ্রবাহের সংক্রমণের তথ্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়