সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধাম : স্রাইন কমিটির নানা উন্নয়ন পরিকল্পনা

আগের সংবাদ

গৃহযুদ্ধে অগ্নিগর্ভ মিয়ানমার

পরের সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে এবার দুই বুড়োর নির্বাচন?

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সম্ভবত দুই বুড়োর নির্বাচন? বাইডেনের জন্ম ২০ নভেম্বর ১৯৪২ এবং ট্রাম্প ১৪ জুন ১৯৪৬। নভেম্বরে নির্বাচনকালে বাইডেন হবেন ৮২, ট্রাম্প ৭৮। মার্কিন জনগণ চায় না বাইডেন-ট্রাম্প প্রতিদ্ব›িদ্বতা, কিন্তু হচ্ছে তাই? বাইডেনকে নিয়ে ডেমোক্র্যাটরা অস্বস্তিতে, ট্রাম্পের নাম আদৌ ব্যালটে থাকবে কিনা তা অনিশ্চিত। অথচ ভোটার তাকেই চাচ্ছে। হয়তো এ সংশয়ের কারণেই নিকি হেলি এখনো রেসে থাকছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, নিকি হেলি কতদিন রেসে টিকতে পারবেন! ট্রাম্প যদি ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে কী হবে?
নেভাদা ককাস পরবর্তী প্রাইমারি, নিকির নিজস্ব স্টেট সাউথ ক্যারোলিনা, শনিবার ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪। ডেলিগেট সংখ্যা ৫০। নিকি হেলির জন্য অগ্নিপরীক্ষা। হেলিকে জিততে হবে, কিন্তু গভর্নর তার বিপক্ষে, সাউথ ক্যারোলিনা অনেকটা রক্ষণশীল, অন্তত নিউ-হ্যাম্পশায়ার থেকে রক্ষণশীল। আরো প্রশ্ন, নিকি কি পারবেন ট্রাম্পের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে? হেলি বলছেন, বাইডেনকে তিনি হারাতে সক্ষম, রিপাবলিকানরা তা শুনছেন না, কারণ ট্রাম্পও বাইডেনকে হারাতে সক্ষম। জরিপ বলছে, ট্রাম্প অথবা নিকি দুজনই বাইডেনকে হারাতে সক্ষম।
নিকির যুক্তি : নিকি হেলি সর্বত্র জোরালোভাবে বলেছেন যে, গত ৮টি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্যে ৭টিতেই রিপাবলিকানরা পপুলার ভোটে হেরেছে এবং এটি কোনো গর্বের বিষয় নয়। গত ডিসেম্বরে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জরিপে বলা হয়, নিকি ও বাইডেন সরাসরি প্রতিদ্ব›িদ্বতা হলে নিকি ১৭ পয়েন্টে প্রেসিডেন্টকে হারাতে সক্ষম। নিকি হেলি রিপাবলিকান ভোটারদের বোঝাতে চাচ্ছেন যে, ২০২০ সালে ডেমোক্র্যাটরা যেনতেন উপায়ে ট্রাম্পকে হারাতে সচেষ্ট ছিল। তাই তারা বাইডেনকে প্রার্থী করেন। ২০২৪ সালে রিপাবলিকানরা মরিয়া হয়ে বাইডেনকে হারাতে চান, নিকির পক্ষে সেটি সম্ভব, তাই তিনিই হওয়া উচিত রিপাবলিকান প্রার্থী। এরপরও নিকি আইওয়া, নিউ-হ্যাম্পশায়ারে হেরেছেন, আইওয়াতে ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যবধান ৩০ শতাংশের ওপরে এবং নিউ-হ্যাম্পশায়ারে ১১ শতাংশ, নিজ রাজ্য সাউথ ক্যারোলিনায় তিনি হারবেন বলে মিডিয়া জানাচ্ছে। রিপাবলিকানরা নিকির যুক্তি এ কারণে মানছেন না যে, জরিপ দেখাচ্ছে, ট্রাম্পও এবার বাইডেনকে হারাতে সক্ষম।
এ মুহূর্তে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দল মোটামুটি স্বীকার করছে যে, ট্রাম্প জিওপি প্রার্থী হচ্ছেন এবং বাইডেন তো আছেনই। বাইডেনের রানিং মেট কমলা হ্যারিসও আছেন। ট্রাম্পের ভিপি কে হচ্ছেন? ওয়াশিংটন পোস্টের লেখক এরোন ব্লেক একটি তালিকা বানিয়েছেন। তালিকায় স্থান পেয়েছেন- নিউইয়র্ক কংগ্রেসওমেন এলিজা স্টিফেনিক, সাউথ ক্যারোলিনার সিনেটর টিম স্কট, আর্কানসাসের গভর্নর সারাহ হাক্কাবি স্যান্ডার্স, ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস, সাউথ ক্যারোলিনার সাবেক গভর্নর নিকি হেলি, সাউথ ডাকোটার গভর্নর ক্রিস্টি নোয়াম, ওহাইওর সিনেটর জে ডি ভ্যান্স, ২০২২-এ আরিজোনার গভর্নর রেসে পরাজিত প্রার্থী, টিভি এঙ্কর কারী লেক এবং ব্যবসায়ী বিবেক রামস্বামী।
এ সময়ের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, ট্রাম্প কি আদৌ নির্বাচন করতে পারবেন? তার নাম কি ব্যালটে থাকবে? এর চেয়েও ভয়ংকর প্রশ্ন, ৬ জানুয়ারি ২০২০ ক্যাপিটল হিল রায়টে তাকে কি বিদ্রোহী বা নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী বলা যাবে? ইউএস সুপ্রিম কোর্ট ফেব্রুয়ারিতে এ নিয়ে যুক্তিতর্ক শুনবেন এবং রায় দেবেন। কলোরাডো সুপ্রিম কোর্ট ইতোমধ্যে রায় দিয়েছে যে, সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী ট্রাম্প বিদ্রোহী এবং প্রার্থী হতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্ট কলোরাডোর মামলার রায় বাতিল করে দিলে ট্রাম্পের ভাগ্য খুলবে।
রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি ২৪ জানুয়ারি প্রাইমারি চলা অবস্থায়ই ট্রাম্পকে ‘আপাত দলীয় প্রার্থী’ ঘোষণার একটি খসড়া প্রস্তাব আনতে চাইলে ট্রাম্প তাতে বাদ সাধেন এবং বলেন, দলীয় ঐক্যের স্বার্থে তিনি প্রথাগতভাবে ভোটে জিতে আসতে চান। এরপর প্রস্তাবটি আর উত্থাপিত হয়নি। ইউনাটেড অটো ওয়ার্কার্স প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছে। ট্রাম্পের সাবেক দুই উপদেষ্টা পিটার নাভারো ও স্টিফেন কে ব্যাননকে কংগ্রেস অবমাননার দায়ে ৪ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা নাভারো এবং রাজনৈতিক উপদেষ্টা ব্যানন ৬ জানুয়ারির বিদ্রোহ নিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কংগ্রেসে সাক্ষী দিতে অপারগতা জানিয়েছিলেন।
ট্রাম্প গত ২৭ জানুয়ারি লাস-ভেগাসে (নেভাদা) বলেছেন, বাইডেনের ‘বর্ডার সিকিউরিটি বিল’ একটি ভয়ংকর বাজে বিল, এটি অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট আগমন ঠেকানোর জন্য নয়, বরং উল্টো। তিনি জানান, হাউস স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, কংগ্রেসে আসার সঙ্গে সঙ্গে এটি মারা পড়বে। ট্রাম্প টেক্সাস গভর্নর গ্রেগ এবোটকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, আমি ইমিগ্র্যান্ট স্রোত ঠেকাতে গভর্নরকে সহায়তা দেব। অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট ঠেকাতে টেক্সাস বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, বাইডেন প্রশাসন সেটি রোধে মামলা করে জিতেছে, কিন্তু টেক্সাস গভর্নর ছাড়বার পাত্র নন, সংগ্রাম চলছে। ঠিক সেই মুহূর্তে ট্রাম্প টেক্সাসকে সমর্থন জানালেন।

শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক থেকে
কলাম লেখক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়