স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : ক্রাইম রিপোর্টাররা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগী

আগের সংবাদ

সংরক্ষিত আসনেও চমক

পরের সংবাদ

রেমিট্যান্স প্রবাহে মুদ্রা বিনিময় হারের সঠিক তথ্য জরুরি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) হিসাব অনুযায়ী, গত বছর ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ১২ লাখ কর্মী বিদেশে গেছেন। গত পাঁচ দশকে প্রবাসীকর্মীরা দেশে ২৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে রেমিট্যান্স পাঠানোর হার তুলনামূলকভাবে কিছুটা কমে গেছে।
শুধু প্রবাসীদের আয় কমে যাওয়ার কারণেই কি রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে? এর উত্তর হচ্ছে- না; হুন্ডির মতো অবৈধ মাধ্যম ব্যবহার করে রেমিট্যান্স পাঠানোর এ হার কমে যাওয়ার পেছনে অন্যতম একটি কারণ।
রাজশাহীর ২৩ বছর বয়সি যুবক ইয়াসিন। উন্নত জীবনের খোঁজে ২০১৮ সালে সৌদি আরবের জেদ্দায় পাড়ি জমান। সেখানে যাওয়ার পরপরই স্থানীয় একটি চকোলেট কারখানায় কাজ শুরু করেন তিনি। জীবন ভালোই কাটছিল তার। রাজশাহীর গ্রামে বসে যা আয় করতেন, চকোলেট কারখানায় তার চেয়ে বেশি আয় করা শুরু করেন। ইয়াসিন তার বেতনের একটি অংশ ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে পরিবারের মানুষের কাছে পাঠাতেন।
প্রথম দুই বছর তিনি ব্যাংকের মাধ্যমেই পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতেন। কিন্তু একদিন বিষয়টি নিয়ে তার এক সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। জানতে পারেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সময়ের ওপর ভিত্তি করে বিনিময় মূল্যের হার ওঠানামা করে। এভাবে টাকা পাঠানোয় কোনো লোকসান হচ্ছে কিনা, এসব ভেবে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি। নানা জায়গায় কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হন।
কেউ কেউ তাকে হুন্ডিতে টাকা পাঠানোর পরামর্শ দেন। এরপর ইয়াসিনের সঙ্গে পরিচয় হয় রাসেল নামে এক যুবকের। রাসেল বিমানবন্দরে কাজ করেন। রাসেল তাকে এমন একটি প্ল্যাটফর্মের খোঁজ দেন, যেখানে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের রিয়েল-টাইম রেট সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সব তথ্য দেয়া থাকে। তিনি এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত বুঝিয়ে বলেন, কীভাবে এনজাজ বা আল রোস্তামানি (মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম) থেকে বিশেষ অফার পাওয়া যাবে। পরবর্তী সময় ওই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ও অফারের কারণে কোনো ধরনের লোকসান ছাড়াই দেশে টাকা পাঠাতে সক্ষম হন ইয়াসিন। এমনকি তার কিছু টাকা বেঁচেও যায়।
অনেক সময় দেখা যায়, প্রবাসীকর্মীদের মতো সাধারণ মানুষের ততটা জানাশোনা নেই অথবা বিনিময় হার ওঠানামার তথ্য খুব সহজেই পাওয়া বা লোকসান থেকে বেঁচে থাকার উপায় জানা নেই। এ ক্ষেত্রে প্রবাসীকর্মীদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ায় সহযোগিতা করতে প্রতিষ্ঠানগুলো এমন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আসতে পারে, যেখানে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের রিয়েল-টাইম বিনিময় হার দেয়া থাকবে। সেখানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সব অফারও দেখানো হবে। আর এ ধরনের উদ্যোগের মধ্য দিয়ে কর্মীরা বৈধভাবে দেশে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত হবেন; যা একই সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখবে।
যাই হোক, রাসেলের পরামর্শের পর রিয়েল-টাইম মুদ্রা বিনিময় হার দেখা ও শান্তিতে দেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে ইমোএক্সচেঞ্জ ব্যবহার করা শুরু করেন ইয়াসিন। এনজাজ ও আল রোস্তামানির মতো পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মের বিশেষ অফারের মধ্য দিয়ে কিছু টাকাও বাঁচাতে পারছেন। আরেকটি ভালো দিক হচ্ছে এতে করে তার ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সময় বেঁচে যাচ্ছে। এখন তাকে সশরীরে ব্যাংকে যেতে হচ্ছে না বা বিনিময় হার জানার জন্য নানা জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করা লাগছে না। এখন বাসায় বা কাজের জায়গায় বসে খুব সহজেই একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের মধ্য দিয়ে সব ধরনের তথ্য জানা যাচ্ছে।
সঠিক সময়ে মুদ্রার বিনিময় হার সহজে জানা গেলে প্রবাসীকর্মীদের জীবনমান একদিকে যেমন উন্নত হতে পারে, অন্যদিকে তেমনি পরিবারের কাছে তাদের কষ্টার্জিত আয় পাঠানোর ক্ষেত্রেও অর্থের সঞ্চয় হবে।

উম্মে সালমা ঊর্মি : যোগাযোগকর্মী, ঢাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়