নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো কোনো অপরাধ করেনি বাংলাদেশ : অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল

আগের সংবাদ

স্মার্ট মন্ত্রিসভার যাত্রা হলো শুরু : ব্যাপক রদবদল ঘটিয়ে নতুন মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন, স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার, কাল টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

আরব-ইসরায়েল দ্ব›দ্ব ও সমাধান

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফিলিস্তিনের জেরুজালেম অঞ্চলটি পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে একটি। এখানে মুসলিম জাতির প্রথম কিবলা এবং ইসলাম ধর্মের প্রচারক আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত মসজিদুল আকসা অবস্থিত, তাই এটি মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পক্ষান্তরে জেরুজালেমে ইহুদিদের ওয়েলিংওয়াল অবস্থিত হওয়ায় এটি তাদের কাছেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। অন্যদিকে জেরুজালেমের বেথেলহামে ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মস্থান অবস্থিত, তাই এই স্থানটি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের কাছেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
বর্তমান ফিলিস্তিন নামক এলাকাটি ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেন ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তবে সমস্যা শুরু হয় তখনই যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইহুদিদের জন্য ফিলিস্তিনে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব চাপিয়ে দিল ব্রিটেনের ওপর। তখন থেকেই শুরু হয় আরব এবং ইহুদিদের এই কোন্দল, যা বর্তমানে মহামারির আকার ধারণ করেছে। ১৯২০ থেকে ১৯৪০ দশকের মধ্যে ইহুদিরা দলে দলে ফিলিস্তিনে আসতে শুরু করে ইউরোপের ইহুদি-নিপীড়ন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়ংকর ইহুদি নিধনের কারণে। ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ এক ভোটাভুটির মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে দুটি পৃথক আরব ও ইহুদি রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রস্তাব দেয়, তবে আরব নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। ব্রিটিশরা এ সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়ে ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ত্যাগ করে। তারপর ইহুদি নেতারাই সেখানে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন।
এতে ফিলিস্তিনের আমজনতা প্রতিবাদ শুরু করে, তারপর থেকেই শুরু হয় যুদ্ধ। প্রতিবেশী আরব দেশগুলোও এ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ যুদ্ধে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে তাদের ঘরবাড়ি ফেলে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। ফিলিস্তিনিরা এ ঘটনাকে ‘আল-নাকাবা’ বলে থাকে। এরপর থেকে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে থেমে থেমে যুদ্ধ চলতেই থাকে আর পদদলিত হতে থাকে মানবতা। তবে বর্তমানে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসকগোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলিদের এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সচেষ্ট হয়ে তাদের সামরিক শাখার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে চলেছে, চলমান যুদ্ধে তা বিশ্ববাসী অবলোকন করেছে। গত কয়েক যুগ ধরেই ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের বিভিন্ন অঞ্চলে আগ্রাসন চালিয়ে ও অবৈধ বসতি স্থাপন করে আসছে। তাদের এই আগ্রাসন থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু থেকে নারীর কেউই। এমনকি জেরুজালেমের মসজিদুল আকসায় প্রার্থনা করার অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয় ফিলিস্তিনি সাধারণ জনগণকে। ইসরায়েলিদের এসব আগ্রাসনে অতিষ্ঠ হয়ে ফিলিস্তিনি যুবকরা হাতে পাথর তুলে নিতে বাধ্য হয়। এভাবেই পাথর দিয়ে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন থেকে নিজ জন্মভূমিকে আগলে রাখছে ফিলিস্তিনি যুবকরা। ফিলিস্তিনিরা এখন শান্তিতে বসবাস করতে চায়, তারা চায় একটি আগ্রাসন মুক্ত মাতৃভূমি, যেখানে বোমার ভয় থাকবে না, থাকবে না ক্ষুধার্ত পেটে ঘুমিয়ে যাওয়ার ভয়। তারা এমন একটি ফিলিস্তিন চায় যেখানে আর তাদের প্রিয়জনদের ক্ষতবিক্ষত লাশ খুঁজতে হবে না। এসব কিছু তখনই সম্ভব হবে যখন ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ হবে এবং ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের এই দ্ব›েদ্বর স্থায়ী অবসান ঘটবে। আর ইসরায়েলি আগ্রাসন তখনই বন্ধ হবে যখন ফিলিস্তিন পুনরায় তার স্বাধীনতা ফিরে পাবে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ব্যতীত চলমান আরব ও ইহুদিদের এ কোন্দলের অবসান অসম্ভব। এ সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘের পক্ষপাতিত্বহীন হস্তক্ষেপ বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। পাশাপাশি জাতিসংঘের ভেটো ক্ষমতাধর দেশগুলোর পক্ষপাতদুষ্টতাহীন পরিকল্পনা এবং পদক্ষেপও এ সমস্যার সমাধানে গুরু ভূমিকা পালন করবে।

মাহমুদুল হাসান সারোয়ার : শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়