নির্বাচন নিয়ে ডিএমপির সঙ্গেমার্কিন প্রতিনিধি দলের বৈঠক : মধ্যাহ্নভোজ করালেন অতিরিক্ত কমিশনার হারুন

আগের সংবাদ

সুষ্ঠু নির্বাচনে তিন চ্যালেঞ্জ : ভোটার উপস্থিতি, বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা, প্রার্থীদের বিশৃঙ্খলা

পরের সংবাদ

নতুন শিক্ষাক্রম ও বাস্তবতা মো. রুহুল আমিন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ সরকার বিশ্বমানের দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে আবারো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার করতে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা অসংখ্যবার পরিবর্তিত হয়েছে। প্রত্যেকবার নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হয়েছে। তবে প্রতিবারের চেয়ে এবারের পরিবর্তনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সম্পূর্ণ কাঠামো বদলে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে শিক্ষক প্রশিক্ষণের নানা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ছাড়িয়ে যাওয়া ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে একটি মহল নিজেদের স্বার্থে এসব ভিডিও গুজব হিসেবে ছড়াচ্ছে। নতুন শিক্ষাক্রমকে বিশ্বের উন্নত দেশের শিক্ষাক্রমের ন্যায় সাজানো হয়েছে। সরকার আগামী বছর থেকে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের কয়েকটি শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বা কারিকুলাম চালু করতে যাচ্ছে। নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণির আগে সব পাবলিক পরীক্ষা তুলে দেয়া হয়েছে। পরিবর্তন আনা হয়েছে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায়ও। এ ছাড়াও এসএসসি বা সমমানের আগে কোনো বিভাগ পছন্দের সুযোগ থাকছে না। বরং একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে পছন্দমতো বিভাগে পড়তে পারবে শিক্ষার্থীরা। চলতি বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আগামী বছর বাস্তবায়ন করা হবে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। এরপর ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ সালে একাদশ শ্রেণিতে এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে ধাপে ধাপে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে শিক্ষক ও অভিভাবকদের অনেকেই এর সমালোচনা করছেন। নতুন শিক্ষাক্রমে ব্যবহারিক শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আমরা উন্নত দেশগুলোর দিকে লক্ষ করলে দেখতে পাই তারা তাদের শিক্ষাক্রমে ব্যবহারিক শিক্ষাকেই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। উদাহরণ হিসেবে সুইজারল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থার দিকে লক্ষ করলে আমরা দেখতে পাব যে একটি শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষায় তার জীবনের প্রয়োজনীয় কাজগুলো শিখে থাকে। তার স্কুলে খাওয়া-দাওয়া ঘুমানোর জায়গা থাকে। নিজের প্লেট পরিষ্কার করে খাবার উঠিয়ে নিয়ে খেতে হয়, বই জিনিসপত্র রাখার জন্য নির্দিষ্ট লকার থাকে। তার সাইকেল চালানো, সাঁতার শেখার জন্য উপকরণগুলো স্কুলে পেয়ে থাকে। জৈবিক প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক কাজ-কর্মগুলো তাদের সিলেবাসে থাকে। আমাদের শিক্ষাক্রমে এসব ব্যবহারিক শিক্ষা যুক্ত করা হয়েছে; কিন্তু আমরা কি আমাদের অবকাঠামোগুলো উন্নত দেশগুলোর মতো করতে পেরেছি? সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।
উচ্চশিক্ষার পরিবর্তন করতে হবে। উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি পরীক্ষার পরিবর্তন আনতে হবে। একজন শিক্ষার্থীকে ডিম ভাজি শিখিয়ে এনে মুখস্থ বিদ্যার ওপর ভর্তি পরীক্ষা নিলে দিন শেষে গাইড বই এবং কোচিংয়ের দিকে শিক্ষার্থীদের ঠেলে দেয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকবে না। বিসিএসসহ সব চাকরি পরীক্ষার পরিবর্তন আনতে হবে। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর তার নিজ বিভাগের পড়ার চেয়ে বিসিএসের মুখস্থ বিদ্যার দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়। ফলে তারা নিজ বিভাগের পড়াশোনা সম্পর্কে ঘাটতি থেকে যায়। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার দক্ষতার ওপর বিসিএসসহ সব নিয়োগ পরীক্ষা নিতে হবে। তাহলে সবাই নিজ নিজ বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। কারিগরি শিক্ষার দিকে জোর দিতে হবে। শিক্ষকদের নিয়োগে সচ্ছতা নিয়ে আসতে হবে। উচ্চশিক্ষাসহ সব প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক এবং অসদুপায়ে নিয়োগবাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।

মো. রুহুল আমিন : শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়