রাজউক : তথ্য অধিকার আইন ও সিটিজেন চার্টার বিষয়ক কর্মশালা

আগের সংবাদ

মাথা নত করি না, তাই চক্রান্ত : নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী > যাদের নর্দমা থেকে তুলে এনেছি, তারা টাকা ছড়াচ্ছে

পরের সংবাদ

সফল হোক বই উৎসব

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছেন। ২০১০ সাল থেকে উৎসবের মাধ্যমে পাঠ্যবই বিতরণ করে আসছে সরকার। শিক্ষার্থীদের হাতে নির্দিষ্ট সময়ে নতুন বই তুলে দেয়া সরকারের একটি চ্যালেঞ্জ, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বলা যায়, নববর্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি বাড়তি আনন্দের দিন। দেশের প্রতিটি জনপদে চলবে এ উৎসব। নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছানো নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে বই উৎসব সফল হবে- এ প্রত্যাশা আমাদের। জানা যায়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ২ কোটি ১২ লাখ ৫২ হাজার ৬ জন শিক্ষার্থীর হাতে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩ হাজার ৬০৬টি বই তুলে দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৯ জন, প্রাথমিকের ১ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার ৫৯৪ জন এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৮৪ হাজার ৪৭৩ জন শিক্ষার্থী পাঠ্যবই পাবে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের জন্য নিজস্ব বর্ণমালা সংবলিত মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির পঠন-পাঠন সামগ্রী এবং প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই প্রণয়ন এবং সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এবারে ৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদরী) শিশুদের মাঝে প্রাক-প্রাথমিক এবং প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯ জেলায় পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে। অতীতে আমরা দেখেছি, বই বিপণন নিয়ে নানা ঘটনা। বিনামূল্যে বিতরণের বই কালোবাজারে বিক্রি, বইয়ের সঙ্গে নোট বই কিনতে অভিভাবকদের বাধ্য করার মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন শ্রেণির বই বছরের পর বছর সময় মতো শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রকাশকরা। অন্যদিকে পাঠ্যপুস্তকের মান নিয়েও সংশয় ছিল। অস্পষ্ট ছাপা, নিম্নমানের কাগজ ব্যবহার করা হতো এসব পাঠ্যপুস্তকে। কিন্তু বর্তমানে যে ঝকঝকে ছাপা রঙিন বইগুলো শিক্ষার্থীর হাতে দেয়া হচ্ছে তাতে শিক্ষার্থীদের বই পাঠের আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যাবে। সদিচ্ছা থাকলে এসব অন্তরায় দূর করা যায়, সেটা প্রমাণ করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী এর আগে একাধিকবার শিক্ষাকে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে অভিহিত করেছেন। এটি যে দারিদ্র্য মুক্তির কার্যকর অস্ত্র তা প্রমাণিত হয়েছে শিক্ষা বিস্তারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দারিদ্র্য মুক্তির ঘটনায়। বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণসহ শিক্ষা খাতে বাজেটের এক উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ যে জাতির জন্য সত্যিকার অর্থেই লাভজনক তা বাস্তবতার নিরিখেই প্রমাণিত হয়েছে। সুশিক্ষিত জাতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিনামূল্যে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবই বিতরণ ও নারীদের অবৈতনিক শিক্ষার যে পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে তা বিশ্ব সমাজেরও প্রশংসা অর্জন করেছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, সরকারি বিনামূল্যের বই এখনো বাজারে পাওয়া যায়। ফলে এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে, দেশে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ ও বিতরণকে ঘিরে যে কায়েমি চক্র গড়ে উঠেছিল তারা এখনো সক্রিয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের অনমনীয় মনোভাবই প্রত্যাশিত। পাশাপাশি মনে রাখা দরকার, বই উৎসবকে তাৎপর্যবহ করতে হলে শিক্ষার মানের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা মনে করি, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত, যাতে পাঠের ভেতর দিয়ে তারা আনন্দ খুঁজে পায়। পাঠ্যপুস্তক উৎসব তখনই অর্থবহ হবে যখন মানসম্মত শিক্ষার আলো পৌঁছে যাবে দেশের প্রতিটি ঘরে। শিক্ষা হতে হবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত। শিক্ষার মান নিশ্চিত সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলেও সে চ্যালেঞ্জ দক্ষতার সঙ্গেই মোকাবিলা করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়