রাজউক : তথ্য অধিকার আইন ও সিটিজেন চার্টার বিষয়ক কর্মশালা

আগের সংবাদ

মাথা নত করি না, তাই চক্রান্ত : নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী > যাদের নর্দমা থেকে তুলে এনেছি, তারা টাকা ছড়াচ্ছে

পরের সংবাদ

নতুন বছরে বিশ্ব ও প্রত্যাশা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সময়ের স্বাভাবিক গতিধারায় বিশ্ব থেকে বিদায় নিল ২০২৩। ইউরোপের বুকে শুরু হওয়া ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, বছরব্যাপী বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্পের ঘনঘটা ও তার ফলে সৃষ্ট প্রাণহানি ও অবকাঠামোগত বিপর্যয় মোকাবিলা করার চ্যালেঞ্জ নিয় এগুতে হচ্ছে। ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়ই বিশ্ব অর্থনীতির বিশেষত বিশ্ব জ্বালানি বাজারের এক প্রভাবশালী অংশ। ইউরোপ মুখোমুখি হয় ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির। অথচ ২০২৩ সালজুড়ে বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা ছিল করোনার ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার।
২০২৩ সালে বিশ্ব সাক্ষী হয় কয়েকটি প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের। এই বছরে বিশ্বে আঘাত হানে ১৩ হাজারের অধিক ভূমিকম্প। যার মধ্যে ১৯টিই ৭ থেকে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার। এসবের মধ্যে ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের গাজিয়ানতেপে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণ হারায় অর্ধ লাখেরও বেশি মানুষ। ভেঙে পড়ে দেশটির এক বৃহৎ অংশের আবাসন ব্যবস্থা। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর মরক্কোর মারাকেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে আটলাস পর্বতমালার ইঘিল শহরের কাছে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। যা নতুন বছরে বিশ্বের বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষের মনে পরিকল্পিত নগরায়ণের মাধ্যমে নিরাপদ ও ভূমিকম্প সহনশীল অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রত্যাশাকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলে নতুন করে।
ভূমিকম্পের পরই আমাদের এগোনো উচিত আফ্রিকা ভূখণ্ডে ২০২৩ সালজুড়ে সামরিক অভ্যুত্থানের হিড়িকের প্রসঙ্গের দিকে। এই বছরে মধ্য আফ্রিকা ও সাব-সাহারান অঞ্চলের পাঁচটি দেশ : নাইজার, সিয়েরালিওন, গ্যাবন, বুরকিনা ফাসো ও গিনি বিসাওতে সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। এছাড়া এ বছরই সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন দলের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন নিয়ে দ্ব›েদ্ব সুদানে নতুন করে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ, যাতে প্রায় অর্ধ সহস্রাধিক মানুষ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সব শেষে ২০২৩ সালে আরেকটি যে আলোচিত প্রসঙ্গের কথা না বললেই নয়, তা হলো ঐতিহাসিক ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা হতে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সহস্রাধিক ইসরায়েলিকে হত্যা ও শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দি করে নিয়ে গেলে ৯ অক্টোবর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে অব্যাহত বিমান হামলা শুরু করে। পরে ২৭ অক্টোবর তারা গাজায় স্থল অভিযান শুরু করলে অঞ্চলটিতে দেখা দেয় ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় সংঘাত। এমনকি এ যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দেয় লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকের ওপর ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সংগঠনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ইসরায়েলে হামলা চালালে। কিন্তু করোনা মহামারি ও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার পর এ ধরনের যুদ্ধ কোনোভাবেই কামনা করে না বিশ্ববাসী। কেননা যে অঞ্চলটিতে এ ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘাত অব্যাহত আছে সেখানকার সাধারণ মানুষ ইতোপূর্বে খাদ্য, পানীয়, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবাসহ অন্যান্য মৌলিক সুবিধাই ঠিকমতো পান না। তবুও অঞ্চলটিতে অব্যাহত সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২১ হাজারের বেশি মানুষ, যাদের মধ্যে ১৫ হাজারই নারী ও শিশু। তাই অঞ্চলটিতে আরও ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় রুখতে অবিলম্বে এ যুদ্ধ বন্ধ হোক- এটাই নতুন বছরে সারা বিশ্বের প্রকৃত মানবতাবাদীদের অন্তরের পুরনো প্রত্যাশা।

রুশাইদ আহমেদ : শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়