বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা : ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্ট

আগের সংবাদ

আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক : বেপরোয়া প্রার্থীরা > সংঘর্ষে নিহত ২, অফিস-গাড়ি ভাঙচুর > শো’কজেই সীমাবদ্ধ ইসি

পরের সংবাদ

বন্ধ হোক নির্বাচনী সংঘাত

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা বৃদ্ধি উদ্বেগজনক। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচারণাকে ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতা শুরু হয়েছে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে। হামলা হয়েছে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সমর্থকদের ওপরও। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব ঘটনায় অন্তত ৩১ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক। পক্ষে-বিপক্ষে ভোট চাওয়া ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী অফিসে আগুন, বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, সমর্থককে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে, কুপিয়ে জখম করার মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন নিয়ে সংঘর্ষে রফিকুল ইসলাম (৫২) নামে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে এবং যথাযথ নিয়মনীতি মেনে প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে, এমনটি প্রত্যাশা করছে জনগণ। নির্বাচনকেন্দ্রিক যেসব সহিংসতার ঘটনা ঘটছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়- যা অত্যন্ত উৎকণ্ঠার। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে শুরু হয়েছে দ্বাদশ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। চলবে আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, মৌলভীবাজার, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা, বরিশাল, ধামরাই, পটুয়াখালী, মেহেরপুর, নওগাঁ, ঝিনাইদহ, মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসনে সহিংসতার খবর আসছে। স্থানীয় বা জাতীয় যে কোনো নির্বাচনই হোক, সেটা শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে নেয়া নির্বাচন কমিশনের মৌলিক এবং অপরিহার্য দায়িত্ব। কিন্তু কোনোমতেই যেন থামছে না সহিংসতার ঘটনা। প্রতিদিন ঘটছে। তাহলে এর দায় কে নেবে? যেহেতু কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করে, সেহেতু এর দায় সরাসরি নির্বাচন কমিশনের ওপর বর্তায়। সিইসি প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছেন। প্রার্থী যদি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে তবে কমিশন সেটার বিরুদ্ধে সব ধরনের আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তির আচরণবিধি মানাতে বাধ্য করতে পারে কমিশন। প্রধানমন্ত্রী কঠোরভাবে বলে দিয়েছেন, নির্বাচনী প্রচারণায় কেউ সহিংসতা করলে ছাড় দেয়া হবে না। অথচ সংঘাতহীনভাবে নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের শক্ত অবস্থান এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহনশীল মনোভাবের ঘাটতি দৃশ্যমান। এ ধরনের সহিংসতা গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে চরমভাবে ব্যাহত করে। নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে এটাই নাগরিকদের চাওয়া। নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা নতুন নয়। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ব্যাপক সহিংসতার কারণে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছিল। দেশে গণতন্ত্রের চর্চা ও জবাবদিহিমূলক শাসন কায়েমে নির্বাচনের ভূমিকা অপরিসীম। তবে নির্বাচন হতে হবে প্রতিযোগিতামূলক, প্রতিহিংসামূলক নয়, রক্তপাত নয়। ভোট ছাড়াই বা বিনা প্রতিযোগিতায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার এক মানসিকতা তৈরি হচ্ছে প্রার্থীদের মধ্যে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নৈতিক দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আরোপিত রাজনৈতিক নিয়ম অনুসারে নির্বাচনের সব কার্যক্রম পরিচালনা করা। যদি সঠিক নিয়ম অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা করে, তাহলে নির্বাচনী প্রচারণায় বিশৃঙ্খলা ও সংঘাত কমে আসবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক- এটাই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা। আর এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের আমলে নেয়া দরকার, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদান করতে পারলে তাতে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য প্রকাশ পাবে বলে আশা করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়