ভালা জার্নালিস্টস ফোরাম : সভাপতি রুমেন পরশ সাধারণ সম্পাদক

আগের সংবাদ

নাশকতার টার্গেট এখন রেল

পরের সংবাদ

শীতের আগাম প্রস্তুতি দরকার

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গ্রামীণ জনপদে আক্ষরিক অর্থে মাঘ মাস আসে শীতের দাপট নিয়ে। কিন্তু এবার পৌষ মাসের শুরুতে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় শীত জেঁকে বসেছে। বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। হাড়কাঁপানো শীতে গরিব মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তারা আক্রান্ত হচ্ছে সর্দি-কাশি, হাঁচি-জ¦র, হুপিং কাশিসহ শীতকালীন ডায়রিয়ায়। শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি প্রয়োজন মনে করছি। গতকাল ভোরের কাগজ অনলাইনে উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম জেলার শীতের অবস্থা তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল সোমবার তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। এ নিয়ে গত পাঁচ দিন দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা তেঁতুলিয়া অঞ্চলে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের হিসাবে, দেশের কোনো অঞ্চলে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ও ৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। এই হিসেবে পঞ্চগড়ের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কনকনে শীতের কারণে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। শীত মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের প্রস্তুতি খুব সামান্য। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় দুস্থ মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। তীব্র শীতের কারণে ডায়রিয়া, আমাশয়, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। রংপুরে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। অনেক স্থানে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। কুড়িগ্রামে শৈত্যপ্রবাহে গরম কাপড়ের অভাবে শীতের কষ্টে ভুগছে শিশু, বৃদ্ধসহ নি¤œ আয়ের কর্মজীবী মানুষজন। শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশার বিস্তার ঘটছে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলেও। পার্বত্য জেলাগুলোসহ সিলেট বিভাগেও অনুভূত হচ্ছে শীতের তাণ্ডব। আকস্মিক তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধিসহ শৈত্যপ্রবাহের জন্য অনেকাংশে দায়ী বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন। উপমহাদেশেও আবহাওয়ার ভাবগতি বিশেষ সুবিধার নয়। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, হিমাচল প্রদেশসহ উত্তর খণ্ডে চলছে শীতের তাণ্ডব। হিন্দুকুশ ও হিমালয় পর্বতমালা থেকে ধেয়ে আসছে ঘন কুয়াশামালা, সুতীব্র হিমেল প্রবাহ। এ দেশেও শীতে যে কোনো দুর্যোগ দুর্বিপাকে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষই বিপাকে পড়ে বেশি। তাদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র ও লেপ-কম্বল কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ, অন্যদিকে পুষ্টিহীনতার কারণে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও তাদের কম। ফলে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে তারাই আক্রান্ত হয় বেশি। শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো দরকার এখনই। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্রসহ কম্বল বিতরণের খবর অবশ্য আসছে গণমাধ্যমে। তবে তা যথেষ্ট নয়, এই ধরনের তৎপরতা আরো বিস্তৃত হওয়া উচিত। শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের এখনো তেমন সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছে না, দু-চারজন ব্যতিক্রম ছাড়া। হতদরিদ্র মানুষকে শীতবস্ত্র সরবরাহ সরকারের সামর্থ্যরে বাইরে নয়। তবে দরকার সময়োচিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং এর যথাযথ বাস্তবায়ন। দেশে অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারাও পারে শীতার্ত দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ওষুধ কোম্পানিগুলো এবং চিকিৎসকদের সংগঠনগুলোও বিভিন্ন স্থানে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে বাড়িয়ে দিতে পারে সহযোগিতার হাত। বিত্তবানদের যৎসামান্য ভালোবাসা ও সহানুভূতিই পারে শীতার্ত মানুষের হৃদয়ে উষ্ণতার পরশ বুলিয়ে দিতে। আসুন আমরা স্ব-স্ব অবস্থান থেকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়