খালেদার গুলশান কার্যালয়ে পুলিশের তল্লাশি

আগের সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হোক মূলমন্ত্র : সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

পরের সংবাদ

তারুণ্যের বিজয় ভাবনা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নতুন প্রজন্মের তরুণরা বিজয় দেখেনি, কিন্তু বিভিন্নভাবে শুনেছে, জেনেছে সেই বিজয়ের গল্পকথা। বিজয় দিবসের অর্জনকে ধারণ করে নতুনদের কাছে বিজয় দিবসের কথা তুলে ধরতে হবে। পাকিস্তানিদের নির্যাতন-নিষ্পেষিত শাসন-শোষণ-বঞ্চনা ও বৈষম্যের কথা জানাতে হবে। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে অসংখ্য প্রাণের আত্মদান, অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে, তা জানলে শিউরে উঠবে তরুণপ্রাণ। দেশের প্রতি জাগবে তাদের ভালোবাসা। তরুণ প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চিন্তা-চেতনার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। দেশকে জানার, ভালোবাসার, দেশের জন্য কিছু করার আগ্রহ কতটুকু তার ওপর নির্ভর করছে দেশের ভবিষ্যৎ। এই বিজয়ের মর্যাদা রক্ষা করা এবং সোনার বাংলা গড়ার দায়িত্ব তরুণদের। স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় হাতে হাত রেখে এগিয়ে যেতে হবে তরুণদেরই।
বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে আজ বিশ্বের বিস্ময়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্রঋণের ব্যবহার এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে ভূমিকা, বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকের ইতিবাচক উন্নতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। নারী বঞ্চনার তিক্ত অতীত পেরিয়ে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে অনেক দূর এগিয়েছে। পোশাক শিল্পে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ দেশ। ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমানার শান্তিপূর্ণ মীমাংসা, ১২ লাখের মতো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা তৈরি করেছি গর্বের পদ্মা সেতু, ঢাকার যানবাহনে নতুন গতি সঞ্চার করেছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে-ফ্লাইওভার। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে দুই সিটির এক শহর। দেশে নতুন রেল নেটওয়ার্ক স্থাপিত হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক অগ্রগতি। স্যাটেলাইট যুগে পৌঁছেছি। ৫জি চালুর দ্বারপ্রান্তে। বাজেট, জিডিপি, মাথাপিছু আয় ও রিজার্ভ বেড়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ এবং ২১০০ সালে ‘নিরাপদ ব-দ্বীপ’ রূপরেখা গ্রহণ করা হয়েছে। ডিজিটালের কাঠামো পেরিয়ে এখন স্মার্ট বাংলাদেশের পথে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ভবিষ্যতে কেমন বাংলাদেশ চাই, সেটি কল্পনা করতে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির আশ্রয় নিতে হয় না, বর্তমান প্রেক্ষিতে তা মনে হয় ঢিল ছোড়া দূরত্ব। শেখ হাসিনার হাত ধরে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা আর স্বপ্ন নয়, সেটি আজ পৌঁছে গেছে স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে। আগামীর বাংলাদেশে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের অগ্রগণ্য ভূমিকায় আমাদের কৃষি উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন আনতে হবে। তাহলে বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবন পুরোপুরিভাবে পাল্টে যাবে। দেশের সর্বত্র মোবাইল টেকনোলজি এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ পরিবর্তন আসবে। বেকারত্বের অভিশাপমুক্ত হবে আমাদের এই স্বপ্নের বাংলাদেশ। ভবিষ্যতের পৃথিবী হবে তথ্যপ্রযুক্তির। বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর ভিত্তি করে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, সেই জোয়ারে নৌকা ভাসিয়ে বঙ্গোপসাগরের উপকূলের এই বদ্বীপটিও অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে, এটাই তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা। বিজয়ের চেতনায় উল্লাস ছড়িয়ে পড়ুক প্রাণে প্রাণে।

আশরাফুল ইসলাম আকাশ : সাবেক সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়