কাগজ প্রতিবেদক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করে মন্ত্রণালয় আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে কিনা, তা নিয়ে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের বিকল্প মুখপাত্র বলেন, তথ্য শেয়ার করার বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত। আপনি (প্রশ্ন করা সাংবাদিককে) নিজস্ব ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারেন। ওই ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসন্ন ঘানা সফর, লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরত আনা ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে প্রশ্নের উত্তর আসে।
গতকাল রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের বিকল্প মুখপাত্র রফিকুল আলমের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এটা কি মন্ত্রণালয় স্বপ্রণোদিত হয়ে করছে? মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণার জন্য মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশন থেকে অনুমতি নিয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে রফিকুল আলম বলেন, আমি যে জিনিসটা বুঝতে পারি, যেটা পাবলিক নলেজ। এই জিনিস বলার মধ্যে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি এখানে নেয়ার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। এটা আমরা সবাই দেখছি, আপনারা লিখছেন। এ সময় আচরণবিধির কোন জায়গায় লঙ্ঘন হয়েছে, প্রশ্নকারী সাংবাদিকের কাছে জানতে চান মুখপাত্র। প্রসঙ্গত, শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নির্বাচন সংক্রান্ত একটি পোস্ট করা হয়। ওই পোস্টকে সামনে রেখে সাংবাদিক জানতে চান, মন্ত্রণালয় ইসির পিআরও হিসেবে কাজ করছে কি? জবাবে মুখপাত্র বলেন, আমি বিশ্বাস করি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুকে বা অন্য কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে তথ্য শেয়ার করার পেছনে অন্যতম বড় কারণ হচ্ছে, আমাদের একটা বড় অডিয়েন্স আছে তাদের দ্রুত রিচ আউট করা। এর বাইরে কিছু নয়।
ঘানা যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী : ঘানার রাজধানী আক্রায় অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে দেশটি সফর করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। আগামীকাল মঙ্গলবার ও পরদিন বুধবার এই দুইদিন দেশটিতে সফর করার কথা রয়েছে তাদের। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে
বিকল্প মুখপাত্র রফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, শান্তিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা, তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় কৌশলগত যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ, শান্তিরক্ষীদের মানসিক সুস্বাস্থ্য, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন। ঘানা সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও বিভিন্ন সাইড-ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন বলেও জানান রফিকুল আলম।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীনের একটি ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের কাজ চলমান রয়েছে। মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। পরিস্থিতির উন্নতি হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাখাইনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে বলে আশা করা যায়। তিনি বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, টেকসই এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য রাখাইনে প্রত্যাবাসনের পরে রোহিঙ্গারা কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবে, সে সম্পর্কে তাদের ধারণা দেয়া হয়েছে।
লিবিয়া থেকে ২৬৩ বাংলাদেশিকে দেশে আনা হচ্ছে : লিবিয়ায় আটকে পড়া ২৬৩ বাংলাদেশি নাগরিককে বাংলাদেশে ফেরত আনা হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকা পৌঁছাবেন তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আলম এই তথ্য জানিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিকল্প মুখপাত্র বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রচেষ্টায় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার আর্থিক সহযোগিতায় লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ত্রিপোলির আইনজেরা ডিটেনশন সেন্টারে আটক ১৪৩ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি নাগরিককে গত ২৮ নভেম্বর এবং ১১০ জনকে ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। তারা ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান। এসময় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেককে পকেট মানি হিসেবে ৫ হাজার ৮৯৬ টাকা এবং কিছু খাদ্যসামগ্রী উপহার দেয়া হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।