রাজধানীতে বহুতল ভবন থেকে পড়ে গৃহকর্মীর মৃত্যু

আগের সংবাদ

স্ব স্ব প্রতীকে লড়বে ১৪ দল! : প্র্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শরিকদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আজ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে আ.লীগ

পরের সংবাদ

তথ্যমন্ত্রী : বিচার হতে হবে অগ্নিসন্ত্রাসীদের মদতদাতাদেরও

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিনিধি : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা যেভাবে পেট্রলবোমা ও অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, শুধু তাদের বিচার হলেই হবে না, যারা এর হুকুমদাতা-অর্থদাতা ও মদদদাতাদেরও বিচার হতে হবে। এই অপরাধের যদি বিচার না হয়, তাহলে এ ধরনের অপরাধ আরো ঘটবে।
গতকাল রবিবার দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিচার চাই’ শীর্ষক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ সংগঠনের আহ্বায়ক শাহাদাৎ হোসেন বাবুলের সঞ্চালনায় সংহতি জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, পেট্রলবোমা হামলায় আহত সংসদ সদস্য খোদেজা নাসরিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত। এছাড়া কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- বিএনপি-জামায়াতের বোমা হামলায় নিহত নাহিদের মা রুনি বেগম, নিহত ইউসুফের সন্তান জাহেদুল ইসলাম, নিহত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী পারভীন, আহত সালাউদ্দিন ভূঁইয়া, জমির আলী ও খোকন এবং অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ সংগঠনের সদস্য লিটন মিয়া প্রমুখ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, অন্য একদল লোক চিঠি ও বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বলে। আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য, আমরা সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করব না। কয়লা ধুইলে যেমন ময়লা যায় না, কুকুরের লেজ যেমন সোজা হয় না, ঠিক তেমনি বিএনপি-জামায়াতও কখনো ভালো হবে না। এই সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
চলতি বছরেই পাঁচ শতাধিক গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসীরা কয়েকটি গাড়ি পুড়িয়ে মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করতে চায় কিন্তু তারা জানে না মানুষ এসবে ভয় পায় না। মানুষ এখন ভয়কে জয় করেছে। এই সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িতদের অর্থদাতা, হুকুমদাতা, মদদদাতাদের বিচার না করা হলে এই অগ্নিসন্ত্রাস নির্মূল হবে না। এরা জাতির কলঙ্ক।
কর্মসূচিতে বোমা হামলার শিকার হওয়া প্রত্যেকের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, অতীতে যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে পুনরায় সেই দিনগুলো দেখতে হতো না। প্রচলিত আইনে নরহত্যাকারীদের বিচার করা এখন গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
এ সময় বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসে সংহতি ও সমবেদনা জানিয়ে শ্যামল দত্ত বলেন, বর্তমানে বিএনপি-জামায়াতের আগুনসন্ত্রাস থামছে না। এটিকে থামাতে হবে। অগ্নিসন্ত্রাস থামাতে হলে প্রয়োজনে আইন করতে হবে। আমরা আগুনে পুড়ে মানুষ মারার এই অপকর্ম আর চলতে দিতে পারি না। এ সময় গণমাধ্যম ও সাংবাদিক সমাজ থেকেও এটার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা ও প্রতিবাদ করা জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রধান বিচারপতির বাড়িতে আক্রমণ হয়েছে। সেই রাস্তায় কত শত মিছিল হয়েছে কিন্তু কেউ এই কাজটি করার সাহস পায়নি। বিএনপি সেই দুঃসাহস দেখিয়েছে। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুুলেন্স ও মোটরবাইকে আগুন দিয়েছে। গাজায় হাসপাতালে হামলার মতো বাংলাদেশের হাসপাতালেও হামলা করেছে তারা। বিএনপি কর্তৃক দেশের সাধারণ মানুষের মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি।
এ সময় নিহত নাহিদের মা রুনি বেগম বলেন, ২০১৩ সালের নভেম্বরে শাহবাগে বাসে আগুন দিলে সেখানে আমার ছেলে পুড়ে যায়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও ছেলে আর আমার কাছে ফিরে আসেনি। আমি আমার ছেলেকে অনেক কষ্ট করে বড় করেছিলাম। আমার ছেলের তো কোনো দোষ ছিল না। কিন্তু নির্দয়ভাবে জামায়াত-বিএনপি আমার ছেলের জীবনটা কেড়ে নিয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।
জমির আলী বলেন, ২০১৩ সালে পেট্রলবোমায় আহত হয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছি। বড় পরিবারে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমি তো কোনো অপরাধ করিনি। তবে এই অবস্থা কেন আমার? এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা কামনা করে তার ছেলের একটি চাকরি দাবি করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়